চট্টগ্রাম: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ওয়েবসাইট চালু হলেও পিছিয়ে রয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। অথচ এই স্টক এক্সচেঞ্জ হচ্ছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পুঁজিবাজার। এ এক্সচেঞ্জের আওতায় রয়েছে প্রায় ১২ লাখ বিনিয়োগকারী। যাদের অধিকাংশই ইংরেজিতে দুর্বল।
বিনিয়োগকারীরা জানান, বাংলা ভাষার জন্য জীবন দিয়ে বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে দেশ সম্মানের উঁচুমাত্রায় অবস্থান করলেও তার মর্যাদা আমরা সঠিকভাবে রক্ষা করতে পারছি না। পুঁজিবাজারের মত একটি বড় অনলাইন মার্কেটের ওয়েবসাইট ব্যবহার করা হচ্ছে ইংরেজিতে।
নিজামুল ইসলাম, মো. শহীদসহ কয়েকজন বিনিয়োগকারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারি কর্মকা-ে ইংরেজির প্রচলন বেশি হলেও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের ইংরেজি ওয়েবসাইট বুঝতে কষ্ট হয়। না বুঝে বিনিয়োগ করতে গিয়ে অনেক বিনিয়োগকারীই পড়ছেন লোকসানে। ফলে সিএসই’র বাংলা ওয়েবসাইট অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে।
বিনিয়োগকারীরা জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকে ডিএসইতে বাংলা ওয়েবসাইট চালু করা হলেও সিএসইর কোনো সাড়া নেই। অথচ সিএসই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পুঁজিবাজার হিসেবে স্বীকৃত। এতে প্রায় ১২ লাখেরও বেশি বিনিয়োগকারী রয়েছেন। বাংলা ওয়েবসাইট চালু না করার কারণে এসব বিনিয়োগকারীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সিএসই পরিচালক ও আইল্যান্ড সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের প্রায় ৮০ শতাংশই ইংরেজিতে দুর্বল। ফলে ইংরেজি ওয়েবসাইট দেখে বিনিয়োগ করা তাদের পক্ষে অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে চলতি ফেব্রুয়াররি মাসের শুরু থেকে ডিএসইতে ইংরেজি ওয়েবসাইটের পাশাপাশি বাংলা সংস্করণও চালু করা হয়েছে। সিএসইও বাংলা সংস্করণ চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে। তারই অংশ হিসেবে পুঁজিবাজারে বাংলা ওয়েবসাইট চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আর গত ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকে ডিএসইতে বাংলা সংস্করণ চালু করা হয়। কারন ডিএসইর আওতায় প্রায় ২৮ লাখ বিনিয়োগকারী রয়েছে।
প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরও বলেন, পরে হলেও সিএসই ইংরেজি ওয়েবসাইটের পাশাপাশি বাংলা ওয়েবসাইট চালু করবে। এ জন্য প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সাল থেকে কয়েক বছর ধরে নানা কারণে পুঁজিবাজারের সার্বিক অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ে। এতে বিনোয়াগকারীরা পুঁজিবাজার থেকে এক রকম মুখ ফিরিয়ে নেয়। ফলে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ২০১২ সালে ১০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনা ঘোষণা করে বিএসইসি। ‘ক্যাপিটাল মার্কেট মাস্টার প্ল্যান’ নামে এ পরিকল্পনা আগামি ২০২২ সালে শেষ হবে।
এই প্ল্যানের আওতায় রয়েছে সিকিউরিটজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সক্ষমতা বাড়ানো, নিজস্ব অর্থে বাজেট প্রণয়নের ক্ষমতা, অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে অধিকতর সমন্বয়, শক্তিশালী সার্ভেলেন্স সিস্টেম প্রণয়ন, আইপিওর জন্য দীর্ঘমেয়াদি গাইড লাইন প্রণয়ন, আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন, ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট প্রণয়ন এবং বন্ড মার্কেটের প্রসারের সিদ্ধান্ত।
সিএসই পরিচালক ও আইল্যান্ড সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এ প্রসঙ্গে বলেন, ক্রমেই বাস্তবায়িত হবে মহাপরিকল্পনা। ইতোমধ্যে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে পুঁজিবাজারের মামলাসমুহ দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের বাংলা ওয়েবসাইটও দ্রুত দেখতে পাবেন বিনিয়োগকারীরা।
(ঢাকাটাইমস/৪মার্চ/প্রতিনিধি/এএসএ)