পরমতসহিষ্ণুতা ও ইসলাম
ঢাকাটাইমস ডেস্ক
১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ২১:২৯:২২

ঢাকা: পরমতসহিষ্ণুতা বলতে বোঝায় অন্যের মতকে শ্রদ্ধা করা। নিজের মত কারো ওপর চাপিয়ে না দেয়া। শরিয়তের পরিভাষায় জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে অন্য ধর্মের প্রতি হস্তক্ষেপ না করে প্রত্যেকে নিজ নিজ ধর্ম পালনের পাশাপাশি অন্য ধর্ম পালনে সহায়তা করার নাম পরমতসহিষ্ণুতা। ইসলামি সমাজব্যবস্থায় পরমতসহিষ্ণুতার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ইসলাম একই সমাজে বসবাসকারী মুসলিম-অমুসলিমের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ পরিহার করে পারস্পরিক সম্প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি করে। কারণ ইসলামে হিংসাকে নিষেধ করা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, হিংসুক বেহেশতে প্রবেশ করবে না।
ইসলামে পরমতসহিষ্ণুতার উদ্দেশ্য হলো অন্যান্য ধর্মের মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। ইসলামি সমাজে বসবাসরত অমুসলিমরা যেন নিজেদের সম্মানবোধ বজায় রেখে চলতে পারে সে ব্যবস্থা ও নিশ্চয়তা ইসলাম দিয়েছে। ইসলামে প্রত্যেকের জানমালের হেফাজতের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুসলিম রাষ্ট্রে অমুসলিমরা হচ্ছে আমানতস্বরূপ।’ সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় পরমতসহিষ্ণুতার গুরুত্ব অপরিসীম। আহলে কিতাব তথা ইহুদি-খ্রিস্টানরা রাসুলের (সা.) জীবনে কত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে; তবুও তিনি তাদের সঙ্গে অন্যায় কোনো আচরণ করেননি। অত্যন্ত ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার সঙ্গে তিনি সম্প্রীতি বজায় রেখেছেন। সব জাতি-গোষ্ঠীর ধর্মীয় অধিকার প্রতিষ্ঠায়ও পরমতসহিষ্ণুতা গুরুত্বপূর্ণ। যেমন মদিনা রাষ্ট্রে সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থান ছিল। পরমতসহিষ্ণুতার কারণেই ইসলাম তাদের সম্মানের সঙ্গে অবস্থানের সুযোগ দিয়েছে। কোনো সমাজে ইনসাফ প্রতিষ্ঠায়ও পরমতসহিষ্ণুতার গুরুত্ব রয়েছে।
কোরানে আল্লাহ বলেছেন, ‘আল্লাহ তোমার প্রতি যেভাবে ইহসান করেছেন তুমিও সেভাবে ইহসান কর।’ শুধু ধর্মীয় ক্ষেত্রেই নয়, সামাজিক ক্ষেত্রেও পরমতসহিষ্ণুতার গুরুত্ব অপরিসীম। পারস্পরিক সহাবস্থানের ক্ষেত্রে নানা জনের নানা মত হবে এটাই স্বাভাবিক। প্রত্যেকেই নিজ নিজ মতকে প্রাধান্য দিলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। এ জন্য নিজের মতের পাশাপাশি অন্যের মতকেও প্রাধান্য দিতে হবে। সামষ্টিক কোনো কাজে নিজের মতের চেয়ে অন্যের মতের গুরুত্ব দিতে হবে। নিজের কোনো মত বা পরামর্শ সবাই গ্রহণ না করলেও মন খারাপ করা যাবে না। ইসলামি তরিকায় পরামর্শকালে নিজের কোনো মত সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে গেলে ভয়ও থাকে। কারণ এই পরামর্শ গ্রহণ করার কারণে কোনো ক্ষতি হলে দায় নিজেকেই নিতে হবে। এ জন্য যথাসম্ভব পরের মতের প্রতি সবাইকে শ্রদ্ধাশীল হওয়াই উচিত।
(ঢাকাটাইমস/১১ফেব্রুয়ারি/জেবি)