শিশুর অধিকার ও ইসলাম
ইসলাম ডেস্ক
০৭ আগস্ট, ২০১৫ ১৬:৪৬:৩১

ঢাকা: আজকের শিশু আগামীদিনের ভবিষ্যৎ। শিশুদের স্নেহ করা, তাদের প্রতি মমত্বপূর্ণ আচরণ করার বিশেষ তাগিদ রয়েছে ইসলামে। রাসুলুল্লাহ সা. শিশুদের স্নেহ করতেন, তাদের প্রতি মমতামাখা আচরণ করতেন। তিনি শিশুদের মানবাধিকার রক্ষায় যে আদর্শ রেখে গেছেন তা সত্যিই অনন্য।
হজরত আয়েশা সিদ্দিকা রা. বলেন, একজন বেদুইন ব্যক্তি রাসুল সা.-এর কাছে এসে শিশুদের স্নেহভরে চুমু খেতে দেখে বললেন, আপনারা কি শিশুদের স্নেহভরে চুমু খান? আমরা তো শিশুদের স্নেহভরে চুমু খাই না। নবীজি বললেন, আল্লাহতায়ালা তোমার হৃদয় থেকে দয়াময়া উঠিয়ে নিয়ে গেছেন। তাতে আমার কী করার আছে। অর্থাৎ তোমাদের হৃদয় শিশুদের প্রতি মায়া নেই বলে তুমি শিশুদের স্নেহভরা চুমু খেতে পার না।
রাসুল সা. যে যুগে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেই অন্ধকারাচ্ছন যুগে আরবে কন্যাশিশুর জন্মগ্রহণকে অপমানজনক হিসেবে ভাবা হতো। কেউ কেউ এ জন্য কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দিয়ে লোকলজ্জার কবল থেকে বাঁচার চেষ্টা করত। পবিত্র কোরআনের সূরা বনি ইসরাইলের ৩১ নম্বর আয়াতে কন্যাশিশু হত্যার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণের মাধ্যমে ইরশাদ করা হয়েছে 'তোমাদের সন্তানদিগকে দারিদ্র্য ভয়ে হত্যা করিও না। উহাদিগকেও আমিই রিজিক দিই এবং তোমাদিগকেও, নিশ্চয়ই উহাদিগকে হত্যা করা মহাপাপ।' কন্যাসন্তান পালনে বাবা-মায়ের মেহনতের জন্য আখেরাতের জীবনে বাবা-মাকে পুরস্কৃত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। রাসুল বলেছেন, কেউ যদি কন্যাসন্তান প্রতিপালন নিয়ে কষ্টে পড়ে এবং ধৈর্য ধরে তাদের প্রতি সুন্দর আচরণ করে যত্নসহকারে লালন-পালন করে এবং তাদের শিষ্টাচার করে গড়ে তোলে- কিয়ামত দিবসে এ কন্যা সন্তানরা তার জন্য জাহান্নামের মাঝে আড়াল হয়ে দাঁড়াবে। (বুখারি, মুসলিম)
রাসুল সা. যখন নামাজ পড়তেন তখন কখনো কখনো তার প্রিয় নাতি হজরত হাসান রা. ও হজরত হুসাইন রা. নানাজনের কাঁধে চড়ে বসতেন। রাসুল সা. এজন্য বিরক্ত হতেন না বরং তারা যতক্ষণ নিজেদের ইচ্ছায় কাঁধ থেকে না নামতেন ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি সেজদা থেকে উঠতেন না। একবার এক সাহাবী এ জন্য তাদের মৃদু ধমক দিলে তিনি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। শিশুদের মানবাধিকার রক্ষা এবং তাদের প্রতি স্নেহ প্রদর্শন যেহেতু রাসুল সা.-এর সুন্নাত সেহেতু এ বিষয়ে আমাদের সবারই যত্নবান হওয়া উচিত। শিশুদের ওপর কোনো ধরনের নিষ্ঠুরতা কাম্য নয়। আমাদের সমাজে হঠাৎ শিশুর প্রতি যে নিষ্ঠুরতা বেড়ে গেছে এর বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।
(ঢাকাটাইমস/৭আগস্ট/জেবি)