প্রান্তিকতা ইসলামে অপছন্দনীয়
ইসলাম ডেস্ক
০৯ আগস্ট, ২০১৫ ২১:২৩:২৯

ঢাকা: সব জিনিসের প্রান্তিকতা থাকে। কোনো কিছুতেই প্রান্তিকতা ইসলাম পছন্দ করে না। ইসলামের অবস্থান হলো মধ্যমপন্থা। সবকিছুতে মাঝামাঝি অবস্থানে থাকাকেই ইসলাম উৎসাহিত করে। উম্মতে মোহাম্মদির শ্রেষ্ঠত্ব ও বৈশিষ্ট উল্লেখ করতে গিয়ে বলা হয়েছে তারা মধ্যমপন্থী উম্মত। যুগে যুগে নবী-রাসুলদের আগমন এবং তাদের ওপর কিতাব অবতরণের উদ্দেশ্য হলো তারা এর দ্বারা মানুষের মধ্যে আখলাকি, আমলি এবং আকিদাগত মধ্যপন্থা ও ভারসাম্য অবস্থান সৃষ্টি করবেন।
ইসলামে মধ্যমপন্থার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিধি বা বিষয় বর্ণনা করা হয়নি। যেমন ব্যয়ের ক্ষেত্রে মধ্যমপন্থা অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে। রাসুল সা. বলেন, আল্লাহকে ভয় কর, জীবিকা অর্জন কর আর সংযম অবলম্বন কর। কোনো প্রাণি ততক্ষণ পর্যন্ত মৃত্যু বরণ করবে না যতক্ষণ না তার রিযিক শেষ হবে।
ইসলামের একটি বিশেষ সৌন্দর্য হলো বেশিরভাগ মাসআলার ক্ষেত্রে কঠোরতা এবং শিথিলতার মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান। এমনকি ইবাদতের ক্ষেত্রেও মধ্যমপন্থা অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে। এত অধিক ইবাদত করতে বলা হয়নি যে, অন্য সব কাজ-কর্ম আটকে থাকবে। আবার এত কম করতে বলা হয়নি যে, আল্লাহর প্রতি উদাসীন হয়ে যাবে। বদান্যতা ও দানশীলতার চেয়ে ভালো কোনো কাজ নেই। সব ধর্মে এ ব্যাপারে তাগিদ করা হয়েছে। কিন্তু ইসলাম এক্ষেত্রেও অতিরঞ্জনের নীতিকে উপেক্ষা করেছে। এমন কাজ ইসলাম ভালো মনে করেনি যে, অন্যকে সব দান করে দিয়ে নিজে অভাবগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
অভাব এবং দারিদ্রের মাঝেও মধ্যম পর্যায় থাকার নির্দেশ রয়েছে। ধন-সম্পদের মধ্যে এত ডুবে যাবে না যে, আল্লাহকে ভুলে যাও। আবার এত দারিদ্র্য হয়ে যাবে না যে, আল্লাহর প্রতি অকৃতজ্ঞ হও এবং মানুষের কাছে লাঞ্ছনা ও বঞ্চনার শিকার হও। রাসুল সা.-এর জীবন ছিল মধ্যমপন্থার বাস্তব নমুনা। তিনি দুনিয়ার মধ্যে থেকে, সবকিছু ঠিক রেখেও ছিলেন দুনিয়াবিমুখ। পরকালের সব প্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়া সত্ত্বেও দুনিয়াকে একদম ত্যাগ করেননি। যে বান্দা দুনিয়া ও আখেরাতের সমন্বয়ে নিজের জীবন গড়তে পারে সেই প্রকৃত মুমিন। আগেকার নবীদের উম্মতেরা বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি করার কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে। এজন্য রাসুল সা. এই উম্মতকে বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি না করে মধ্যমপন্থা অবলম্বনের প্রতি তাগিদ করেছেন।
(ঢাকাটাইমস/৯আগস্ট/জেবি)