logo ২৩ এপ্রিল ২০২৫
দলীয় প্রতীকে স্থানীয় ভোট
আ.লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা নির্বাচনী আমেজে
তানিম আহমেদ, ঢাকাটাইমস
২৩ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০:৪১
image


আবার বাজবে ভোটের দামামা। চলতি বছরের শেষের দিকেই মেয়াদউত্তীর্ণ বিভিন্ন পৌরসভায় ভোটযুদ্ধে নামবেন প্রার্থীরা। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলে জাতীয় নির্বাচনের আবহ তৈরি হবে। এরই মধ্যে প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।

প্রতিটি পৌরসভাতেই আছেন একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী। দলীয় ‘নৌকা প্রতীকের’ প্রার্থীতা নিশ্চিত করতে তারা ধর্ণা দিতে শুরু করেছেন কেন্দ্রীয়, জেলা, উপজেলা নেতা ও স্থানীয় সংসদ সদস্যদের কাছে।

নওগাঁ-৬ আসনে আওয়ামী লীগেরর সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম বলেন, আমাদের দলের নেতা-কর্মী বা সমর্থকদের মধ্যে নৌকা প্রতীকের অসাধারণ আবেদন আছে। এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে বলে মনোনয়নপ্রত্যাশী এ কারণেই বেশি হবে বলেই আমাদের ধারণা। তাই মনোনয়ন প্রত্যাশীরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। অনেকেই কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও দেখা করেছেন। বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি আমরা।

আওয়ামী লীগের পাঁচজন সংসদ সদস্যের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে এই সময়ের। তারা বলছেন, স্থানীয় নেতারা মনে করছেন এলাকার সংসদ সদস্যদের আস্থা অর্জন করতে পারলেই দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত হবে। এ কারণে তাদের সঙ্গে কথা বলতে আসছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। তবে সংসদ সদস্যরা এককভাবে দলীয় মনোনয়ন নির্ধারণ করতে পারবেন না। দলীয় ফোরামেই নির্ধারিত হবে প্রাথী।

ফেনীর দাগনভূঁইয়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের নৌকা নির্বাচন করতে চান বর্তমান মেয়র ওমর ফারুক খান ও আবুল কায়েস রিপন। গত নির্বাচনে দলীয় সমর্থন নিয়ে জিতেছিলেন ওমর ফারুক। দল সমর্থন না দিলেও প্রার্থী হয়েছিলেন আবুল কায়েস।

ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘প্রার্থীতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সবার সাথে সুসম্পর্ক রাখা জরুরি। এক্ষেত্রে ফেনী জেলার সকল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক আছে।

আবুল কায়েস রিপন বলেন, ‘গতবারও দল সমর্থন জানিয়েছিল, এবার মনোনয়ন দেবে। আশা করি আমাকে হতাশ করবেন না নেতারা’।

নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আনাম সেলিম বলেন, ‘দলীয় প্রার্থী কিভাবে নির্ধারিত হবে সে ব্যাপারে দল থেকে আমাদের কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি’।

সূত্র জানিয়েছে, পৌর নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নের প্রক্রিয়া ঠিক করবে দলের কার্যনির্বাহী কমিটি। সেক্ষেত্রে পরিবর্তন হতে পারে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র। কারণ জাতীয় নির্বাচনে দলের সংসদীয় বোর্ড মনোনয়ন দিলেও স্থানীয় নির্বাচনে সেটা সম্ভব হবে না। কেননা প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভা মিলিয়ে প্রার্থীর সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। স্বভাবতই আগ্রহী প্রার্থিতার সংখ্যা কয়েক লাখ ছাড়িয়ে যাবে। তাই স্থানীয়ভাবে একটি মনোনয়ন বোর্ড গঠন করা হতে পারে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, ‘আমার মনে হয় দলের সংসদীয় বোর্ড বা কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দিতে পারেন। তবে জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করতে এলাকা ভিত্তিক নির্বাচনী বোর্ড বা কমিটি গঠন করা হতে পারে।

নিয়মানুযায়ী থানা নির্বাচনী অফিসগুলোতে স্থানীয়ভাবে চিঠি দিয়ে দল মনোনীত প্রার্থীর নাম জানাতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে থানার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক চিঠি দিয়ে পৌরসভা ও ইউনিয়নে দলের মনোনীত প্রার্থীর নাম নির্বাচন কমিশনকে জানাবেন।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী কিভাবে নির্ধারিত হবে এ বিষয়ে এখনো দল কোন সিদ্ধান্ত হয়নি’।

আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘দলীয় ফোরামে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। মনে হয় খুব শীঘ্রই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে’।

দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে রূপরেখা পাওয়া যাবে। হয়তো বোর্ড থাকবে। সেই বোর্ড কেন্দ্র থেকে অথবা বিভাগওয়ারি নিয়ন্ত্রিত হতে পারে’।

সূত্র জানায়, আইনি বাধ্যবাধকতা এবং পারিপার্শ্বিক কারণে আসন্ন ডিসেম্বরের মধ্যেই ৩০৮টি পৌরসভার ২৪৫টির নির্বাচন করতে হবে। এতদিন কাগজে কলমে এসব নির্বাচন নির্দলীয় হলেও রাজনৈতিক দলগুলো স্থানীয়ভাবে কোন না কোন প্রার্থীকে সমর্থন জানাতো। ফলে নির্দলীয় নির্বাচনও কার্যত দলীয় রূপ নিতো। তবে সরকার এবার দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরই মধ্যে আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/ ২২ অক্টোবর /টিএ/ ডব্লিউএ/ঘ.)