ব্যবসায় সততা ও ইসলাম
ইসলাম ডেস্ক
২৫ অক্টোবর, ২০১৫ ১৭:০৬:৪০

ঢাকা: খাদ্যে ভেজাল মেশানোর অপক্রিয়া বর্তমানে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। খাদ্যের এই ভেজালের কারণে জনস্বাস্থ্য আজ হুমকির মুখে। এটা সাধারণ আইনে যেমন জঘন্য অপরাধ তেমনি ইসলামেও এটি ভয়াবহ পাপ। কোরান-হাদিসে জোরালোভাবে এই কাজটিকে অনৈতিক ও পাপ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। ইসলামি বাণিজ্য নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘ক্রেতার কাছে গোপন করে কোনো ত্রুটিযুক্ত জিনিস বিক্রি করা যাবে না। কোনো জিনিসে ত্রুটি থাকলে সেটা সম্পর্কে ক্রেতাকে অবহিত করতে হবে।’
রাসুল (সা.) হাদিসে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ত্রুটিযুক্ত পণ্য বিক্রির সময় ওই ত্রুটির কথা গোপন রাখে সে ব্যক্তি আল্লাহর অব্যাহত গজব ও ফেরেশতাদের অভিশাপের মধ্যে থাকবে।’ খাদ্যে ফরমালিন জাতীয় বিষাক্ত কিছু মেশানো কখনোই বৈধ নয়। এমনকি ক্ষতি না করলে পণ্যের ওজন বাড়ায় বা পণ্যকে তাজা রাখে এমন দ্রব্য ব্যবহারের অনুমতিও নেই।
একদিন রাসুল (সা.) বাজারে গিয়ে দেখলেন এক ব্যক্তি গম বিক্রি করছে। তিনি ওই গমের ঢিবির ভেতরে হাত দিয়ে দেখলেন উপরে শুকনো গম আর ভেতরে ভেজা গম। তখন রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ধোঁকা দেয় সে আমার দলভুক্ত নয়।’ সাহাবায়ে কেরামের অধিকাংশই ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। খাদ্যে ভেজাল মেশানো বা পণ্যের কাটতি বাড়াতে ধোঁকার আশ্রয় তারা কখনো নিতেন না। ক্রেতাকে ধোঁকা বা বিভ্রান্ত করে এমন কোনো কাজ ইসলামে হারাম।
ইসলামের বাণিজ্যনীতির মূল প্রেরণা হলো সততা। যতদিন মুসলমানরা তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যে এই গুণটি ধরে রেখেছে ততদিন তারাই ছিল বিশ্বের সেরা ব্যবসায়িক জাতি। কিন্তু যুগের বিবর্তনে আজ অনেক মুসলমান ব্যবসায়ীও নীতি-নৈতিকতা হারিয়ে ফেলছে। তাদের তুলনায় পাশ্চাত্যের ব্যবসা-বাণিজ্যে সততার গুণটি বেশি লক্ষ্য করা যায়। কোনো জাতির মধ্যে ধোঁকা ও অসততা যখন ব্যাপক আকার ধারণ করে তখন ওই জাতির পতন ঘটে। একজন প্রকৃত মুসলমান ব্যবসায়ী তার পণ্যে কখনো কোনো ভেজাল মেশাতে পারেন না। কারণ একজন বিশ্বাসী মানুষের এই জগতই সবকিছু নয়; তাদের সামনে অপেক্ষা করছে অনন্ত এক জগত। পার্থিব প্রতিটি কাজের কড়ায়-গণ্ডায় হিসাব সেখানে দিতে হবে। এ জন্য মুসলমানদের লেনদেন, ব্যবসা-বাণিজ্য হওয়া উচিত স্বচ্ছ, ভেজালমুক্ত ও সততার গুণে গুণান্বিত।
(ঢাকাটাইমস/২৫অক্টোবর/জেবি)