logo ২৩ এপ্রিল ২০২৫
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে গলদঘর্ম কর্মকর্তারা
ইব্রাহিম খলিল, ঢাকাটাইমস
২৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০৮:১৯:৫৪
image


চট্টগ্রাম ব্যুরো চিফ: একদিকে জনবলের অভাব, অন্যদিকে দুর্বল সার্ভারে জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধনের কাজ করতে গিয়ে গলদঘর্ম হচ্ছে চট্টগ্রাম নির্বাচন কমিশন (সিইসি)। এরমধ্যে গত কয়েকদিন ধরে ভিড় বাড়ায় হিমশিম খাচ্ছেন আবেদনকারীরা।

আগামী ৩১ অক্টোবর মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধনের আবেদন গ্রহণের সময় শেষ হচ্ছে। ফলে সময় যতই গড়াচ্ছে আবেদনকারীর ভিড় নিয়ে উৎকণ্ঠায় পড়ছে নির্বাচন কমিশন।  

চট্টগ্রাম বিভাগীয় নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল বাতেন ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘আবেদনপত্র জমাদানের সময় যতই গড়িয়ে আসছে বিপুল সংখ্যক নাগরিক আবেদন ততই বাড়ছে। কয়েকদিন ধরে দিনে চার থেকে পাঁচ হাজার পর্যন্ত লোক আবেদন জমা দিতে আসছে। এ নিয়ে আমাদের রীতিমত ঘাম ছুটছে’।

আবদুল বাতেন বলেন, ‘আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। এরই মধ্যে চলছে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম। তার উপর সার্ভার দুর্বল। ফলে আইডি কার্ডের ভুল সংশোধন আবেদন গ্রহণে হিমশিম খেতে হচ্ছে। একটি আবেদনপত্রের সঙ্গে সংশোধন বিষয়ে একাধিক তথ্য-প্রমাণ খতিয়ে দেখে জমা নিতে হচ্ছে। এ কারণে আবেদন গ্রহণে দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে’।

নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তা বলেন, ‘ভুল সংশোধনের মধ্যে রোহিঙ্গা ও জালিয়াতি ঠেকানোর জন্য বিশেষ নজরদারি রয়েছে। কারণ রোহিঙ্গারা কৌশলে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে বিদেশে গিয়ে নানা অপকর্মে জড়িয়ে দেশের ভাবমুর্তি ক্ষুণœ করছে। এছাড়া জায়গা-জমি ক্রয়-বিক্রয়সহ বিভিন্ন কাজে জালিয়াতির ঘটনাও ঘটেছে। এজন্য বিশেষ নজরদারি করা হচ্ছে’।

জেলা নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সারাদেশে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ জাতীয় পরিচত্রপত্রে ভুল রয়েছে। তাই কয়েক দফায় সংশোধনের জন্য সময় দেয়া হয়েছে। কারণ স্মার্টকার্ড হচ্ছে ব্যয়বহুল। সরকার বিনামূল্যে তা বিতরণ করবে। তবে পরবর্তীতে নাগরিকদের ফি গুণার আশঙ্কাও রয়েছে। তবে বিষয়টি এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

সূত্র জানায়, জেলা সার্ভার স্টেশনে মহানগরীর ছয়টি থানার অন্তর্ভূক্ত ৪১ ওয়ার্ডের নাগরিকদের আবেদনপত্র গ্রহণ করা হচ্ছে। আর উপজেলা সার্ভার স্টেশনেও উপজেলাভিত্তিক সংশোধন আবেদনপত্র জমা নেয়া হচ্ছে।

আইডি কার্ডে ভুল সংশোধনের আবেদন নিয়ে এস নিজের অভিজ্ঞতা বলছিলেন পাথরঘাটা এলাকার মফিজুর রহমান। তিনি বলেন, তার রহমান স্থলে রহমন লেখা হয়েছে। জন্ম তারিখেও ১২ জানুয়ারির স্থলে ২১ জানুয়ারি লেখা হয়েছে। প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট থেকে হলফনামা করে নির্বাচন কমিশনে সংশোধনের জন্য আবেদন করতে এসে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে।

একই কথা বললেন চান্দগাঁও এলাকা থেকে আসা আবদুল মোতালেব। তার আইডি কার্ডে বাংলা বানান ঠিক থাকলেও ইংরেজিতে মোতালেবের শেষ অক্ষরে ভুল লেখা হয়েছে। এখন স্মাটকার্ড হচ্ছে। এসব ভুল সংশোধন করে না নিলে পরবর্তীতে ঝামেলা বাড়তে পারে।

এ বিষয়ে বিভাগীয় নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, বয়স প্রমাণের জন্য এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার সনদপত্র দাখিল করতে হবে। অন্যথায় হলফনামা জমা দিতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন অনুযায়ী ১৮ বছর বয়সী নাগরিকদের পরিচয়পত্র দেয়া হয়। পরিচয়পত্রগুলো সাধারণ কাগজে লেমিনেটিং করে দেয়া হয়। এই কার্ডে ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি এবং বারকোড থাকে। কিন্তু কার্ডটির নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় ছিল কমিশনের।

(ঢাকাটাইমস/২৮অক্টোবর/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি)