ঢাকা: ‘ছুটিতে আছি। তাতে কী? অফিসে যেতে তো মানা নেই। অফিসে যাচ্ছি। কিন্তু দাপ্তরিক কোনো কাজ করছি না।’ বলছিলেন আর্মস ফোর্সেস ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অতিরিক্ত ডিআইজি ড. হাসান-উল হায়দার। অসদাচরণের দায়ে দুই মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে তাকে।
অভিযোগ রয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ মানছেন না হাসান-উল হায়দার। বাধ্যতামূলক ছুটির আদেশের পরও অফিসে যাচ্ছেন। সরকারি গাড়ি ব্যবহার করছেন। শনিবারও নাকি তিনি অফিস করেছেন। অথচ আদেশ অনুযায়ী ২৯ আগস্ট থেকে তার ছুটিতে থাকার কথা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অতিরিক্ত ডিআইজি হাসান-উল হায়দার ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘আদেশ মানছি না এ অভিযোগ ঠিক নয়। ছুটিতে থাকলে কী অফিসে যাওয়া যাবে না? আমাকে যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে তার জবাব লিখতে হলেও তো আমাকে অফিসে আসতে হবে। এখানে টাইপিস্ট আছেন। আমি বাইরে গিয়ে কোথায় কী করব। তাছাড়া অফিসে আসলেও্ দাপ্তরিক কোনো ফাইলে স্বাক্ষর করছি না।’ গাড়ি ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।
সূত্র জানায়, এবছরের ৩ জানুয়ারি হাসান উল হায়দার এপিবিএনের অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পান। অভিযোগ আছে, পদোন্নতি পাওয়ার পর থেকেই তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশ কাটিয়ে নিজের মতো করে কাজ করছেন। এপিবিএনে তার ইউনিট প্রধানকে পাশ কাটিয়ে বিভিন্ন চিঠি ইস্যু করছেন। এছাড়া এপিবিএন পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে তাকে এপিবিএন সদর দপ্তরে পদায়ন করা হলেও তিনি নিজের পদবির পাশে অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন ও ইন্টেলিজেন্স) লিখে আসছেন। অথচ তাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
পুলিশের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, গত ২৫ জুলাই অতিরিক্ত ডিআইজি হাসান উল হায়দারের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবরে অভিযোগ করা হয় এপিবিএন সদর দপ্তর থেকে। এতে সুনির্দিষ্ট ১৮টি লিখিত অভিযোগ আনা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৭ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সি কিউ কে মুসতাক আহমদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে হাসান উল হায়দারকে ২৯ আগস্ট থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। এতে বলা হয়, গুরুতর অসদাচরণের দায়ে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ১৯৮৫-এর ১১(১) বিধি মোতাবেক তাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে যাওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হলো।