আমার জন্ম ঢাকার বাইরে।ছোট বেলা কেটেছে বরিশাল ও খুলনায়। ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত ঢাকার বাইরে ছিলাম।ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে ঢাকায় আসি। সময়টা ২০০৫ সাল। আমাদের বাসা ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের নিরিবিলি প্রজেক্টে। নিরিবিলি প্রজেক্ট নামেও যেমন কাজেও তেমন। এখানকার পরিবেশ খুব শান্ত। বাইরের হট্টগোল আর কোলাহল থেকে আমাদের এলাকা অনেকটাই মুক্ত।
ঢাকায় আছি অনেক দিন হল। ঢাকাকে এখন খুব আপন মনে হয়। মনে হয় এই শহরটা বুঝি আমারই। ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ ভর্তি হই। আমার ক্যাম্পাসও ধানমন্ডিতে। ধানমন্ডিতে থাকতে ভালো লাগে। আবাসিক এলাকা হিসেবে ধানমন্ডি মন্দ নয়। এখানকার পরিবেশ অনেকটা সাজানো-গোছানো। ধানমন্ডিতে এলে ছায়াতরুদের দেখা মেলে। সড়কগুলোর দুপাশে কিংবা সড়কদ্বীপে সারিসারি বৃক্ষরাজি।
নিরিবিলি প্রজেক্টে নাগরিক সুবিধার সবটাই আছে। যদিও মাঝে-মধ্যে সকালে একটু-আধটু গ্যাসের চাপ কমে যায়। তখন খানিকটা অসুবিধায় পরতে হয়। তবে সেটা সাময়িক। এই এলাকায় বাসা ভাড়া পাওয়া যেমন দুস্কর তেমনি বাড়িওয়ালাদের খামখেয়ালিপনার শিকার হতে হয় ভাড়াটিয়াদের। কেননা, বাড়িওয়ালারা ইচ্ছেমত বাড়ি ভাড়া ঠিক করেন। তারপর মাস শেষে গুনতে হয় পানির বিল, গ্যাসের বিল, বিদ্যুৎ বিল।
ঢাকার বড় সমস্যা যানজট। যানজটের কবলে একবার পরলে আর রক্ষা নেই। কর্মমুখী মানুষ, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের অনেক সময়ের অপচয় হয় যানজটে। ঢাকা দিনদিন জনবহুল হয়ে পড়ছে। প্রায় প্রতিদিনই মানুষ গ্রামগঞ্জ থেকে কাজের খোঁজে ঢাকায় আসে। এসব নিম্নবৃত্তদের ঠাঁই হয় শহরের বস্তিগুলোয়।
একটু বৃষ্টি হলেও নগরের কোথাও কোথাও জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। বৃষ্টির পানির সঙ্গে নর্দমার পানি মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তখন রাস্তায় নামলে বেকায়দায় পড়তে হয়।
আরামসে ঘুরে বেড়ানোর জন্য ধানমন্ডি উত্তম জায়গা। মন চাইলেই ঘুরে আসি ধানমন্ডি লেক থেকে।কখনোবা টিএসসি, ছবির হাঁটে যাওয়া হয়। পুরান ঢাকায়ও ঘুরতে ভালো লাগে। ঢাকায় অনেক রোস্তোঁরা আছে। ফুসরত মিললে বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে এসব রেস্তোঁরায় জম্পেশ আড্ডা দেয়া হয়। সব মিলিয়ে ঢাকায় ভালোই আছি।
লেখক: অধরা ইসলাম, ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের বাসিন্দা ও শিক্ষার্থী স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।
[email protected]
facebook.com/adora.islam.37
অনুলিখন: আসাদুজ্জামান