logo ০১ জুলাই ২০২৫
মুম্বাইয়ে দেখা মেলে পেশাজীবি পত্রলেখকদের!
ঢাকাটাইমস ডেস্ক
০৫ জানুয়ারি, ২০১৪ ১১:১১:৩৭
image

ঢাকা: ভারতের প্রধান বাণিজ্য নগরী মুম্বাইতে কতো ধরনের ব্যবসাই না প্রচলিত রয়েছে। তবে মুঠোফোনে বার্তা এবং ইমেইলের যুগে এসে এখনো এই শহরে দেখা মেলে পেশাজীবি পত্রলেখকদের।মুম্বাইয়ের জিপিও (জেনারেল পোস্ট অফিস)-র বিপরীত দিকে তাকালেই দেখা মিলবে এসব পেশাজীবি পত্রলেখকদের। তবে সময়ের দ্রুততায় পত্রলেখকরা হারিয়েছে আগের জৌলুস।


একটা সময় ছিল যখন ক্রেতাদের ভিড়ে খাবার সময় পেতেন না৷ আর এখন অফুরন্ত সময়৷ বলছিলাম মুম্বইয়ের পত্রলেখকদের কথা৷ মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেটের যুগে তাদের প্রয়োজন অনেকটা ফুরিয়ে গেছে৷


মুম্বাই জিপিও -র বিপরীত দিকের একটা জায়গায় বসেন পত্রলেখক শাকিল আহমেদ৷ চিঠি লেখার চেয়ে এখন তিনি ফরম পূরণ আর পার্সেল প্যাকেট করার কাজ করেন বেশি৷ তাই মাঝেমধ্যে কখনো যদি চিঠি লেখার সুযোগ পান, তাহলে বেশ খুশি হন৷


শাকিল বলেন, তিনি যেখানে বসেন, আগে সেখানে ১৭ জন পত্রলেখক বসতেন৷ আর এখন সংখ্যাটা কমে এসেছে আটে৷ গত সাত বছর ধরে ব্যবসায় মন্দা শুরু হয়েছে, বলে জানান শাকিল৷


৪০ বছর আগে ১৪ বছর বয়সে কাজ শুরু করা শাকিলের বর্তমান দৈনিক আয় ২০০ থেকে ৪০০ ভারতীয় মুদ্রা, অর্থাৎ আড়াইশো থেকে পাঁচশো টাকা৷ এই অর্থ দিয়ে তার চলে যায় বলে জানান পাঁচ সন্তানের জনক শাকিল৷


শাকিলের বাবাও একই কাজ করলেও নিজের সন্তানদের তিনি এ কাজে আসতে দেবেন না৷ ‘‘এখন এই কাজে অর্থ নেই৷ তাহলে কেন আমি তাদের আসতে উৎসাহ দেব?'' প্রশ্ন তার৷


তিনি বোঝেন বর্তমান যুগটা মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেটের৷ শাকিল নিজেও মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। ‘‘মোবাইল ছাড়া আপনি কিছু করতে পারবেন না,'' বলেন তিনি৷


পত্রলেখকদের ব্যবসার মূল ভিত্তিটা ছিল গোপনীয়তা৷ পত্র লেখার সূত্রে অনেকের জীবনের গোপন অনেক কথাই জানা হতো তাদের৷ কিন্তু ক্রেতাদের বিশ্বাস অর্জনের জন্য গোপন বিষয়গুলো গোপনই রাখতেন পত্রলেখকরা৷ জীবিকার তাগিদে মুম্বাইয়ে থাকা কোনো প্রেমিক বহুদূরে থাকা প্রেমিকার কাছে মনের অনুভূতি প্রকাশ করে চিঠি পাঠাতো, অনেক পতিতা নিজের পেশা গোপন রেখে পরিবারকে অর্থ পাঠাতো – এমন সব বিচিত্র অভিজ্ঞতা হয়েছে শাকিলের৷ ‘‘ক্রেতারা যদি আমাদের বিশ্বাস না করতো তাহলে তারা আমাদের কাছে আসতো না৷ তাই তাদের বিষয়গুলো আমাদের গোপন রাখতে হতো৷''


আধুনিক প্রযুক্তির তোড়ে যে শুধু পত্রলেখকদের ব্যবসাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা নয়, কয়েকমাস আগে বন্ধ হয়ে গেছে ভারতের টেলিগ্রাম সেবা৷ ফলে একসময় যে লোকটি টেলিগ্রাম পাঠানোর কাজ করতো এখন সে ঐ একই অফিসে পিয়ন বা নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ করছে৷ কারণ ঐ অফিস এখন টেলিফোন ও ব্রডব্যান্ড সেবা দিচ্ছে৷


(ঢাকাটাইমস/৫জানুয়ারি/জেএস)