অল্পেতুষ্টি ও ইসলাম
ঢাকাটাইমস ডেস্ক
১১ মার্চ, ২০১৫ ০০:০৭:৩০

ঢাকা: মানুষের জীবনে চাহিদার কোনো শেষ নেই। তবে তা সীমিত রাখতে পারলে মানবজীবনে শান্তি। ইসলামও মানুষকে চাহিদা সীমিত রাখার কথাই বলেছে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যদি কারো চাহিদা মিটে যায় তাহলে ভালো। অন্যথায় চাওয়ার মাত্রা বাড়িয়ে অহেতুক জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলতে মানা করেছে মানুষের প্রকৃতিগত ধর্ম ইসলাম। ইসলামে অল্পেতুষ্টির বাস্তব উদাহরণ ভুরিভুরি রয়েছে। আল্লাহর প্রিয় বন্ধু ও উভয় জগতের বাদশা হওয়া সত্ত্বেও রাসুলের (সা.) জীবনধারা ছিল অতি সাধারণ। প্রাচুর্যের খনিতে পরিপুষ্ঠ হওয়ার সুযোগ থাকার পরও সাদাসিধে ও আড়ম্বরহীন জীবনকে নিজের জন্য বেছে নিয়েছিলেন তিনি। জাগতিক উচ্চবিলাস ও প্রতিষ্ঠার ভাবনা তার মধ্যে ছিলই না। নবীর শিক্ষায় শিক্ষিত সাহাবায়ে কেরামও ছিলেন ইসলামের এ প্রেরণা বাস্তবায়নের উত্তম নমুনা। তাদের জীবনধারাও ছিল নবীজির আদলে সাবলীল ও অনাড়ম্বর। অল্পতেই তারা অনেক তুষ্ট হতেন। এজন্য তাদের জীবন ছিল স্বস্তি ও শান্তিতে প্রাচুর্যময়।
ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বকর রা.-এর স্ত্রীর একবার ইচ্ছে হলো কিছু মিষ্টিজাতীয় খাবার রান্না করে পরিবারের সবাইকে খাওয়াবেন। স্বামীকে এ ইচ্ছের কথা জানালেন। খলিফা সাফ জবাব দিলেন, মিষ্টির জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তা আমার কাছে নেই। তিনি খলিফার সঙ্গে কথা আর না বাড়িয়ে সংসারের দৈনন্দিন খরচ থেকে অল্প অল্প করে রেখে মিষ্টি কেনার মতো পয়সা জমালেন। একদিন খলিফাকে তিনি আনন্দের সঙ্গে সংবাদটি দিলেন। কিন্তু এবার খলিফা গম্ভীর হয়ে গেলেন। সঙ্গে সঙ্গে রাজকোষে খবর পাঠালেন। রাজকোষের কর্মচারী খলিফার বাড়িতে এসে হাজির হলেন। খলিফাপত্নী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন, খলিফা তার সঞ্চিত অর্থ রাজকোষের লোকদের হাতে তুলে দিচ্ছেন। স্ত্রীর সঞ্চিত অর্থ রাজকোষে জমা দিয়ে খলিফা আবু বকর সিদ্দিক (রা.) বললেন, এই সঞ্চয়ের ঘটনায় প্রমাণ হলো যে, এ পরিমাণ অর্থ বায়তুল মাল থেকে না তুললেও আমার সংসারের খরচ চলে যাবে। অতিরিক্ত সম্পদ আমি কিছুতেই রাজকোষে থেকে গ্রহণ করতে পারি না। খেলাফতে রাশেদার পরবর্তী যুগেও এমন ঘটনায় ভরপুর।
বর্তমানে ইসলামের সেই আদর্শিক শিক্ষাটা আর অবশিষ্ট নেই। মুসলমানরা আজ ভোগ-বিলাসের সম্ভারে ডুবে আছে। সবকিছুতেই আজ একটা অপূর্ণতা ও খাই খাই ভাব অনুভব করা যাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় ইসলামের প্রেরণা অনুযায়ী জীবনধারায় সাদাসিধে ভাব নিয়ে আসা। অল্পতেই তুষ্ট থাকা।
(ঢাকাটাইমস/১১মার্চ/জেবি)