দাবদাহ: ইসলাম কী বলে
ইসলাম ডেস্ক
০৬ মে, ২০১৫ ০০:১৩:৪১

ঢাকা: প্রকৃতিতে আল্লাহ তায়ালা বৈচিত্র্য দান করেছেন। আল্লাহর বিশেষ করুণায় আমাদের বাংলাদেশের প্রকৃতি খুবই সহনীয়। এখানে নাতিশীতোষ্ণ প্রকৃতি বিরাজ করে। অতিমাত্রায় শীত ও গরম পড়ে না কখনো। ছয় ঋতুর দেশ হলেও স্বাভাবিকভাবে দু’টি ঋতুই আমাদের দেশে বেশি অনুভূত হয়ে থাকে গ্রীষ্ম ও শীতকাল। গ্রীষ্মকালে গরম আর শীতকালে ঠাণ্ডা বিরাজ করে। শীতকালে যেমন কিছুদিন অত্যন্ত ঠাণ্ডা অনুভূত হয় তেমনি গ্রীষ্মকালের কিছুদিন প্রচণ্ড গরম লাগে। বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ এ দু’মাস আমাদের গ্রীষ্মকাল। এ সময়ে সাধারণত তাপমাত্রা বাড়ে। ফলে প্রচণ্ড গরম পড়ে। বৃষ্টি না হলে এর পরিমাণ আরো বেড়ে যায়। খরায় সবকিছু হাহাকার করতে থাকে। মানুষসহ অন্যান্য প্রাণি গরমে দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। দাবদাহের কারণে মানুষ প্রচণ্ড তৃষ্ণা ও ক্লান্তি অনুভব করে। এতে মানুষের যে কষ্ট হয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বৈজ্ঞানিকরা এই অবস্থার জন্য আবহাওয়ার পরিবর্তনের কথা বললেও এর ধর্মীয় একটি ব্যাখ্যা রয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘জান্নাত ও জাহান্নাম বছরে দু’বার তার নিঃশ্বাস ফেলে। ওই সময় অধিক ঠাণ্ডা ও প্রচণ্ড গরম অনুভূত হয়।’ এ হাদিসের আলোকে এ কথা স্পষ্ট যে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অধিক ঠাণ্ডা কিংবা গরম জাহান্নামের নিঃশ্বাস। মূলত এর উদ্দেশ্য হচ্ছে জগদ্বাসীকে জাহান্নামের ভয়াবহতার কিঞ্চিৎ উপলব্ধি করানো। প্রকৃত জাহান্নামের অবস্থা এর চেয়েও হাজার গুণ বেশি। তবে গ্রীষ্মের দাবদাহ যে পরবর্তী অনন্ত জীবনের ভয়াবহ অবস্থার সূক্ষ্ম ইঙ্গিত তা কেবল জ্ঞানীরাই অনুধাবন করতে পারেন। এ থেকে শিক্ষা নিয়ে তারা জীবনের প্রবাহকে সঠিক পথে পরিচালনা করার পাথেয় সংগ্রহ করতে পারেন। এই সূক্ষ্ম ইঙ্গিতকে কাজে লাগাতে পারলে গ্রীষ্মের এই দাবদাহ আমাদের জীবনের জন্য শুভ বার্তাই বয়ে আনে। অন্যদিকে গ্রীষ্মকাল আমাদের জীবনের জন্য বড় একটি নিয়ামত হিসেবে গণ্য হতে পারে। কারণ, এই ঋতুকে বলা হয় ফলের ঋতু।
নানা ধরনের ফলমূল উৎপন্ন হয় এই ঋতুতেই। জান্নাতি খাদ্য ফল মহান আল্লাহর দেয়া অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। বৈচিত্র্যময় অসংখ্য ফলের ডালি আল্লাহ আমাদের জন্য দান করেছেন। আল্লাহর অফুরন্ত নিয়ামত এই ফলের সিংহভাগই উৎপন্ন হয় গ্রীষ্মকালে। আর ফল পাকার জন্য রোদ ও গরমের খুবই প্রয়োজন। সে হিসেবে গ্রীষ্মের দাবদাহ আমাদের জীবনের জন্য রহমত বলেই গণ্য হবে।
(ঢাকাটাইমস/৬মে/জেবি)