logo ২৩ এপ্রিল ২০২৫
বিদেশি হত্যা: বিএনপিতে নতুন আতঙ্ক
বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস
২৯ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০৫:২১
image

ঢাকা: অবরোধে নাশকতার শত শত মামলা নিয়ে এমনিতেই চাপে থাকা বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই বললেই চলে। সংবাদ সম্মেলন আর ছোটখাটো অনুষ্ঠানে দলের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছেন নেতারা। এই অবস্থায় ঢাকায় ইতালিয় নাগরিক তাভেল্লা সিজার হত্যায় নির্দেশদাতা হিসেবে দলের এক কেন্দ্রীয় নেতার নাম আসায় নতুন ‍উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বিএনপিতে।


দলের মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন সরকারের এই অভিযোগকে আজগুবি বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের বক্তব্য অনেকটাই নমনীয়। তিনি বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে কারও খুনের দায় নেবে না দল।


২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে তাভেল্লা সিজার হত্যার পর লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যের পর থেকে আত্মগোপনে বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। এবার দলের মধ্যম সারির নেতা এম এ কাউয়ুমের নাম প্রকাশ হওয়ায় চিন্তায় পড়েছে দলটি। এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন তার ছোট ভাই। রংপুরে জাপানি নাগরিক হত্যার ঘটনায় যারা আটক হয়েছে তারাও বিএনপির লোক। এই হত্যায় আরও বেশ কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতা আছে এমন খবরে আতঙ্কে আরও জোরালো হয়েছে।


দলের চেয়ারপারসন দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করতেও বিএনপিকে বেগ পেতে হচ্ছে। এই অবস্থায় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকারও পরামর্শ দেয়া হয়েছে এমন খবরও আছে।


বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘বিএনপিকে চাপে রাখতে ঢালাওভাবে দোষ চাপানো হচ্ছে। সর্বোপরি একটা আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা চলছে। তবে বিষয়টি উদ্বেগের’।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত বিএনপির কেউ জড়িত প্রমাণ হলে তা অস্বস্তির কারণ হবে’।


তবে দুই বিদেশি হত্যার ঘটনায় বিএনপির জড়িত থাকার কারণ নেই, এমনটাও মনে করেন এমাজউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘দুই বিদেশি হত্যার ঘটনা নিয়ে অতীতের মতো দোষারোপের খেলা চলছে। বারবার বিএনপিকে দায়ী করলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারছে না কেন?’।


গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত অবরোধ চলার পর থেকেই অনেকটা নিশ্চুপ বিএনপি। তবে গ্রেপ্তারের ভয়ে সামনে আসছেন না শীর্ষ থেকে শুরু করে তৃণমূলের হাজারো নেতাকর্মী। তবে বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে সরে আসার পর গ্রেপ্তার অভিযান স্তিমিত হয়ে এসেছিল। সম্প্রতি নাশকতার নানা ঘটনার পর আবারও শুরু হয়েছে এই অভিযান।


সাবেক সংসদ সদস্য, পৌর মেয়রসহ শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। অনেকে আবার গ্রেপ্তারের ভয়ে চুপসে গেছেন।


বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের অভিযোগ, ‘সরকার নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। নেতাকর্মীদের আইনি প্রতিকার পাওয়ার অধিকারটুকুও খর্ব করছে’।


নানা সূত্রের খবরে ইতালি নাগরিক তাভেল্লা সিজার হত্যার পেছনে সাবেক কমিশনার কাউয়ুম ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের নাম শোনা যাচ্ছে। এছাড়াও বেশ কয়েকজন আছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে।


তবে তাভেল্লা হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএনপি নেতা এম এ কাউয়ুম। মালয়েশিয়া অবস্থানরত বিএনপির এই নেতা সাংবাদিকদের বলেন, “সরকার আমাকে বলির পাঠা বানাতে চায়। এজন্য আমার ছোট ভাইকে আটক করে তার কাছ থেকে আমার সম্পৃক্ততা বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”


(ঢাকাটাইমস/২৯অক্টোবর/বিইউ/ডব্লিউবি)