পরিবেশের সুরক্ষা ও ইসলাম
ইসলাম ডেস্ক
১০ নভেম্বর, ২০১৫ ২২:৩৩:৫০

ঢাকা: সুস্থ সমৃদ্ধ উন্নত জীবনযাপনে প্রয়োজন সুন্দর পরিবেশ। মেধা-প্রতিভা ও মন-মননের বিকাশে চাই উপযুক্ত পরিবেশ। পরিবেশের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কটা অবিচ্ছেদ্য। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা না হলে আমাদের বেঁচে থাকা কঠিন। এজন্য আমাদের প্রয়োজনেই পরিবেশকে সুরক্ষা রাখতে হবে। আর মানবপ্রকৃতির ধর্ম ইসলামও পরিবেশের সুরক্ষায় বিশেষ তাগিদ দিয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা পরিবেশকে সব জীবের উপযোগী করে সুষম ও ভারসাম্যপূর্ণভাবে সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেন, ‘নিশ্চয় আমি সব জিনিস সুষমভাবে সুনির্দিষ্ট ও পরিমাপ অনুযায়ী সৃষ্টি করেছি।’ মানুষ আজ তথ্যপ্রযুক্তিতে উৎকর্ষ সাধন করলেও পরিবেশ নিয়ে তাদের তেমন কোনো ভাবনা নেই। পরিবেশ আজ বিপর্যস্ত, ধ্বংসের মুখোমুখি। পরিবেশের এই বিপর্যয়ের প্রধানত কারণ দুটি- ক. প্রাকৃতিক খ. কৃত্রিম। এর মধ্যে কৃত্রিম বা মানবসৃষ্ট দূষণই পরিবেশের জন্য বেশি ক্ষতিকর। কারণ পারমাণবিক ও রাসায়নিক বর্জ্য, কলকারখানা এবং যানবাহনের বিষাক্ত কালো ধোঁয়া পরিবেশ দূষণ করে। বনজঙ্গল নিধন, পশুপাখি শিকার ও জলজসম্পদ ধ্বংসও পরিবেশের ভারসাম্যতা হারিয়ে ফেলে। আর এসব হয় মানুষের দ্বারা। প্রযুক্তির কল্যাণে নগরায়ন ও শিল্পায়নের দ্রুত সম্প্রসারণ ঘটছে। ফলে গড়ে উঠেছে অধিকসংখ্যক দালান কোঠা, কলকারখানা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এসবের স্থান সংকুলান না হওয়ায় আমরা বনজঙ্গল ধ্বংস করছি। পাহাড় কেটে ফসলি জমি খাল, বিল, নদনদী ইত্যাদি ভরাট করে পরিবেশের বিপর্যয় ডেকে আনছি। এর ফলে বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বাড়ছে। এতে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বেড়ে চলেছে।
পরিবেশ রক্ষা করা আমাদের নৈতিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব। বৃক্ষনিধন, জীবহত্যাসহ পরিবেশকে ধ্বংস করে-এমন সব কাজ পরিহার করতে হবে। আমাদের দ্বারা যেন পরিবেশের কিঞ্চিৎ ভারসাম্যতাও নষ্ট না হয় সেদিকে যতœবান হওয়ার তাগিদ ইসলাম দিয়েছে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা পৃথিবীর বুকে শান্তি স্থাপনের পর বিপর্যয় সৃষ্টি করো না।’ পরিবেশ রক্ষার অন্যতম মাধ্যম হলো বৃক্ষরোপণ। তাই রাসুল (সা.) বৃক্ষরোপণের ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন, ‘তুমি যদি নিশ্চিতভাবে জান কিয়ামত এসে গেছে তবুও তোমার হাতে কোনো গাছের চারা থাকলে তা রোপণ করবে।’ বৃক্ষরোপণকে সদকায়ে জারিয়া বা অব্যাহত পুণ্যের কাজ হিসেবে উলে¬খ করা হয়েছে। পুণ্যের উদ্দেশে কোনো গাছের চারা রোপন করলে যতদিন গাছটি থেকে উপকৃত হওয়া যাবে ততদিনই এর সওয়াব রোপনকারী পাবেন।
(ঢাকাটাইমস/১০নভেম্বর/জেবি)