মুমিনের পরকাল ভাবনা
ইসলাম ডেস্ক
২৭ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৬:৩৬:৩৫

মানুষের জীবন অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। আখেরাতের তুলনায় এই জীবনের কোনো অস্তিত্বই নেই। প্রতিটি প্রাণিই মরণশীল। মানুষসহ প্রতিটি প্রাণিকেই কঠিন এই বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো পরাক্রমশালী ব্যক্তিই মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পায়নি। তাই জীবনের এই বাস্তবতাকে স্বীকার করতেই হবে। ইসলামের শিক্ষা হলো, দুনিয়ার জীবন-জীবিকা সব ঠিক রাখার পরও সবসময় পরকালকে সামনে রাখতে হবে। কারণ পরকাল ভাবনা সক্রিয় থাকলে অনেক অন্যায়-অপকর্ম থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব। যারা পরকালের প্রতি গাফেল ও বেপরোয়া তারাই কেবল যেকোনো অন্যায়-অপকর্ম করতে পিছপা হয় না। রাসুল (সা.) এক সমাবেশে তার সাহাবিদের জিজ্ঞেস করলেন, কে সবচেয়ে বুদ্ধিমান? সাহাবিরা স্বভাবসুলভভাবে বললেন, আল্লাহ ও তার রাসুলই ভালো জানেন। তখন রাসুল (সা.) বললেন, সেই ব্যক্তি প্রকৃত বুদ্ধিমান, যিনি মৃত্যুর জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকে। সাহাবিরা বললেন, হে রাসুঠ! আমরা মৃত্যুর জন্য কীভাবে প্রস্তুত থাকবো? রাসুল (সা.) বললেন, মৃত্যু যে খুব কাছে সে অনুযায়ী প্রস্তুত থাকবে।
আখেরাতের জীবনের তুলনায় দুনিয়ার জীবন অতল সমুদ্রের এক ফোঁটা পানির মতো। সুতরাং সে জীবনের জন্য পাথেয় জোগানোর প্রয়োজন অনেক বেশি। সে জন্য ইমাম গাজালি (রহ.) বলেন, তুমি দুনিয়াতে যতদিন অবস্থান করবে, সে হিসেবে এখানকার জন্য তৎপরতা চালাও। আর আখেরাতে তোমাকে যতকাল স্থায়ী হতে হবে, সে হিসেবে সেখানকার জন্য শ্রম ব্যয় কর। আমাদের প্রকৃত জীবন আখেরাত হলেও আমরা দুনিয়ার জন্যই বেশি সময় ব্যয় করি। প্রতিদিন জীবন-জীবিকার জন্য যে সময়টুকু দিই এর সিকিভাগও আমরা দিই না পরকালের জন্য। অথচ উচিত ছিল পরকালের জন্য বেশি সময় বরাদ্দ রাখা। যেহেতু দুনিয়াতে থাকতে হবে অল্প কিছু দিন তাই এর প্রস্তুতিও সে অনুযায়ীই হওয়া উচিত। যেটুকু না হলেই নয় সেটুকুই দুনিয়ার জন্য বরাদ্দ রাখা। আমরা যতই দুনিয়া কামাই করি এর কিছুই আমাদের সঙ্গে যাবে না। আমাদের এই অল্পদিনের কর্মকাণ্ডই পরকালে সাথী হবে।
যেহেতু এই জীবন ক্ষণস্থায়ী তাই মুমিনের প্রধান ভাবনা থাকতে হবে পরকালকেন্দ্রিক। কোরান-হাদিসের দৃষ্টিতে পরকাল ভাবনা একটি ইবাদতও বটে। হাদিসে বেশি বেশি মুত্যুর কথা স্মরণ করতে বলা হয়েছে। কারণ এর দ্বারা অন্তর আল্লাহর দিকে ধাবিত হয়।