ঢাকা: কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেলে একাধিক কণ্ঠশিল্পী বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হতে চান। তাদের উপযুক্ত পদে রাখতে বিএনপিও চিন্তা-ভাবনা করছে বলে জানা গেছে।
এদিকে পদপ্রত্যাশী শিল্পীরাও বসে নেই। তদবিরের পাশাপাশি বিএনপির সভা-সমাবেশে উপস্থিতির মাধ্যমে নিজেদের সক্রিয়তা প্রমাণেরও চেষ্টা করছেন কেউ কেউ।
গত ১৯ মার্চ বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনের পর এখন পর্যন্ত তিন ধাপে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ৪১ পদে নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আরো কিছুদিন সময় নিতে পারেন বলে জানা গেছে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আলোচিত অন্তত পাঁচজন শিল্পী নতুন কমিটিতে পদ পেতে পারেন। তাদের মধ্যে নারী শিল্পীও আছেন।
আলোচনায় বেশি আসছে সংগীতশিল্পী কনক চাঁপা, রিজিয়া পারভীন ও বেবী নাজনীনের নাম। এই তিনজনের মধ্যে রিজিয়া পারভীন ও বেবী নাজনীনকে বিএনপির নানা কর্মসূচিতে সক্রিয় থাকলেও কনক চাঁপাকে তেমন একটা দেখা যায় না।
বাংলাদেশের সংগীত জগতে ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’ অথবা ‘উত্তরবঙ্গের দোয়েল’ খ্যাত বেবি নাজনীন দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে গুলশান কার্যালযে ‘অবরুদ্ধ’ খালেদা জিয়াকে খাবার দিতে গিয়ে তিনি পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন। কয়েক ঘণ্টা আটক থাকার পর অবশ্য তার মুক্তি মেলে।
এর আগে দশম সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী-৪ আসনে বিএনপি থেকে তার মনোনয়ন পাওয়ার খবরও বেরিয়েছিল।
গত আন্দোলনের সময় খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের দিকে পা বাড়ালেও আন্দোলন থেমে যাওয়ার পর দীর্ঘদিন বিএনপির কোথাও তাকে দেখা যায়নি। এই সময়ের মধ্যে বিএনপির বেশ কিছু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বেবি নাজনীনকে ছাড়াই শেষ হতে দেখা গেছে।
তবে জাতীয় কাউন্সিলের পর থেকে দলের কর্মসূচিতে বেবি নাজনীনের সক্রিয় অংশগ্রহণ চোখে পড়ছে।
সবশেষ গত ১৪ এপ্রিল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেন বেবি। জানা গেছে, ওই অনুষ্ঠানে তার গানে মুগ্ধ বিএনপি-প্রধান।
বেবি নাজনীনের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনি নতুন কমিটিতে দলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদ প্রত্যাশা করছেন। তবে সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদকে আপত্তি নেই তার।
এসব বিষয় কথা বলতে বেবি নাজনীনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে পরিবারের একজন সদস্য ঢাকাটাইমসকে বলেন,“তিনি দেশের বাইরে আছেন। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষ দিকে দেশে ফিরতে পারেন।”
এদিকে রিজিয়া পারভীনকে অনেকেই পাক্কা জাতীয়তাবাদী বলে মনে করেন। জনপ্রিয় এই কণ্ঠশিল্পীও তাকিয়ে আছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের দিকে। আশা করছেন, নতুন কমিটিতে পদ পাবেন। গানের পাশাপাশি নিজের জায়গা থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনেও কাজ করবেন।
রিজিয়া পারভীন বর্তমানে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি।
পদ-পদবির প্রত্যাশা থাকলেও এই কণ্ঠশিল্পীকে বিএনপির কর্মসূচিতে খুব বেশি সক্রিয় দেখা যায় না । অনেক দিন পর বিএনপির কাউন্সিলের দিন অন্য শিল্পীদের নিয়ে উদ্বোধনী সংগীত গাইতে দেখা গেছে তাকে।
নতুন কমিটিতে রিজিয়া পারভীন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য পদ পেতে চান। তবে তার সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক হওয়ারও আগ্রহ আছে বলে জানা গেছে।
তবে ঢাকাটাইমসকে রিজিয়া পারভীন নির্দিষ্ট করে কোনো পদের প্রত্যাশা করছেন না বলে জানিয়েছেন।
সোমবার বিকেলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে রিজিয়া পারভীন বলেন, “ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) যা ভালো মনে করবেন, তিনি যেখানে রাখবেন, তাতেই আমি খুশি। বিশেষ কোনো পদের আকাঙ্ক্ষা নেই।”
(ঢাকাটাইমস/২মে/মোআ)