logo ০৪ আগস্ট ২০২৫
পুরুষ কখন স্ত্রীর প্রতি আকর্ষণ হারায়?
ঢাকাটাইমস ডেস্ক
১৭ মে, ২০১৬ ০০:২০:০৯
image



ঢাকা: পুরুষ-নারীর একসঙ্গে বসবাসের সামাজিক স্বীকৃতি হচ্ছে বিয়ে। প্রাচীনকাল থেকেই এই প্রথার উদ্ভব। সব সমাজেই বিয়েকে একটি পবিত্র সামাজিক সম্পর্ক হিসেবে দেখা হয়। বিয়ের পর প্রথম কয়েক বৎসর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বেশ গাঢ় প্রেমের সম্পর্ক লক্ষ্য করা যায়। তারপর বিভিন্ন কারণেই স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে ভাটা পড়তে পারে। তবে এর উল্টো চিত্রও দেখা যায়। অনেক দম্পতির মধ্যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের আন্তরিকতার মাত্রা বাড়তেও দেখা যায়।  






অনেক স্বপ্ন নিয়েই সংসার জীবন শুরু করেছিলেন অনির্বাণ (ছদ্মনাম)। প্রথম দিকে দুজনের সম্পর্ক চলছিল বেশ। অফিস শেষ হওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়ে বাসায় ফিরে আসা, দুজন একসঙ্গে খাওয়া, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বেড়াতে যাওয়া, মাঝে মাঝে রেস্টুরেন্টে ক্যান্ডেল লাইট ডিনারে যাওয়া। ভালোই চলছিল সবকিছু। কিন্তু সম্প্রতি অনির্বাণ লক্ষ্য করছে, স্ত্রীর প্রতি টান তার আগের মতো নেই। স্ত্রীকে আর সহ্য হচ্ছে না। পুরোপুরি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলছেন জীবনসঙ্গীর প্রতি। কেন এমন হচ্ছে প্রশ্ন অনির্বাণের। তার না জানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ভারতের একজন নামকরা মনোবিজ্ঞানী।






অনির্বাণ তার দাম্পত্য জীবনের গল্প বলতে গিয়ে বলেন, “সাত বছর হল বিয়ে করেছি। প্রথমদিকে, সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু ইদানিং মনে হচ্ছে, তার প্রতি সব আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি। তার সঙ্গে কোনো কিছুতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি না। আমাদের এখন আর একসঙ্গে রাতে কোথাও খেতে যাওয়া হয় না। ছুটিতে কোথাও বেড়াতেও যাই না। এমনকী আমার স্ত্রী নিজে আগ্রহী হয়ে কোনো কিছু করতে চাইলেও আমি উৎসাহ পাই না।”






পাঠকরা হয়তো ভাবছেন, অনির্বাণ নিশ্চয়ই পরকীয়া বা অন্য কোনো সম্পর্কে জড়িত। ব্যাপারটি কিন্তু আদৌ এ রকম নয়। বাকিটা শুনুন অনির্বাণের মুখ থেকেই।






অনির্বাণ আরও বলেন, “ব্যাপারটি এ রকম নয় যে, আমি পরকীয়ায় আসক্ত বা অন্য কোনো সম্পর্কে জড়াতে চাচ্ছি। আমি আসলে জানতে চাচ্ছি, কারো প্রতি ভালোবাসা পুরোপুরি শেষ হয়ে যাওয়া সম্ভব? আমাদের কোনো সন্তান নেই। আপনি কি মনে করেন, তার সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়া উচিত নাকি বৈবাহিক সম্পর্ক ছিণ্ন করা উচিত?”






ক্লিনিক্যাল মনোবিজ্ঞানী এবং লেখক ডা: সীমা হিনগোরানি কিন্তু অনির্বাণের সমস্যাটিকে একবারেই অস্বাভাবিক কোনো সমস্যা হিসেবে দেখছেন না। তার মতে, অনেক দম্পতির ক্ষেত্রেই নাকি এই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। চলুন, শোনা যাক এই সমস্যা সমাধানে তার বক্তব্য।






ডা: সীমা হিনগোরানি বলেন, না আমি, আপনার সমস্যাটিকে ভালোবাসা ওঠে যাওয়া বলব না। আসলে এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে সম্ভবত অধিকাংশ দম্পতিকেই যেতে হয়। 






এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বিয়ের কয়েক বৎসর পর যখন একঘেয়েমি এবং গতানুগতিক একটা নিয়ম শুরু হয়ে যায়। তখন আমাদের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি হয় যে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আর ভালোবাসা কাজ করছে না। আমার দেখা অধিকাংশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে, ভালোবাসার চেয়ে আন্তরিক হওয়া এবং সম্পকর্টি এগিয়ে নিতে বাড়তি যত্নের অভাব লক্ষ্য করেছি। আমি দৃঢ়ভাবে সুপারিশ করব, দাম্পত্য সম্পর্ক খুবই বাজে পর্যায়ে না গেলে বা জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি না হলে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করা উচিত না।






ডা: সীমা আরও বলেন, স্বামী-স্ত্রীর অনেক সময় ছোট খাটো বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। তখন সবকিছু নেতিবাচক ভাবতে শুরু করে। আমি জানি, এই সম্পর্ক থেকে আপনি বেরিয়ে যেতে চাচ্ছেন। কিন্তু এত সহজে হাল ছেড়ে দেয়া ঠিক হবে না। স্ত্রীর প্রতি কেন আকর্ষণ হারিয়ে ফেলেছেন তার মূল কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। বিবাহিত সম্পর্কে কিছু আবেগ, অনুভূতি দমন করছেন কিনা। সবচেয়ে ভালো হয়, স্ত্রীর সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করুন। নিজের ভালোলাগা, মন্দলাগার বিষয়গুলো তাকে বলুন। স্ত্রীর সঙ্গে কঠিন আচরণ না করে যোগাযোগ বৃদ্ধি করুন। আশাকরি নিশ্চিত ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে পাবেন। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।






(ঢাকাটাইমস/১৭মে/এসআই)