প্রিয়জনের আচরণে অস্বাভাবিকতা, কী করবেন
ঢাকাটাইমস ডেস্ক
১৪ মে, ২০১৬ ১৩:১১:১৮

ঢাকা: ভালোবাসার সম্পর্কে রাগ-অভিমান খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়। অনেকের ধারণা, মাঝে মাঝে রাগ-অভিমান সম্পর্ক গাঢ় করতে ভূমিকা রাখে। এই বিষয়টা স্বীকার করতে হবে, সব সম্পর্কই মসৃণ গতিতে চলবে এমনটা আশা করাও মনে হয় ঠিক নয়। কারণ ব্যক্তিভেদে আমাদের স্বভাব, চরিত্র, ভালোলাগা, মন্দলাগার বিষয়গুলো ভিন্ন। তবে হ্যাঁ, ঝগড়ার পরিমাণ যদি সহনীয় পর্যায়ের বাইরে চলে যায় তাহলে প্রেমিক-প্রেমিকা উভয়েরই জন্য বিষয়টি অস্বস্তিকর। সম্পর্কের ক্ষেত্রেও বিরূপ প্রভাব ফেলে।
ভারতের কোনো এক শহরে থাকেন দীপা(ছদ্মনাম)। বয়স ২৪। প্রায় চার বছর ধরে একটি ছেলেকে হৃদয়ের সবটুকু উজার করে দিয়ে ভালোবেসে যাচ্ছেন। ছেলেটিও তাকে অনেক ভালোবাসে। তবে মাঝে মাঝে একটু অদ্ভুত আচরণ করে। প্রিয় মানুষটির এ রকম খাপছাড়া আচরণে হতবিহবল হয়ে পড়ে দীপা। চলুন বাকিটা শোনা যাক দীপার মুখেই। আর দীপার এই পরিস্থিতি উত্তরণে পরামর্শ দিয়েছেন একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ।
দীপা বলেন, “প্রায় চার বছর ধরে রুপকের(ছদ্মনাম) সঙ্গে আমার সম্পর্ক। দুই পরিবারের সম্মতিতে আমাদের বিয়ে প্রায় ঠিকঠাক। এই চার বছরের সম্পর্কে অনেক চড়াই-উৎরাই পার হতে হয়েছে আমাদের। মাঝে মাঝেই দুজনের ঝগড়া হতো। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, প্রতিবার ঝগড়ার পর আমাদের ভালোবাসার আগের থেকে গাঢ় হয়েছে মনে হতো। একটা সময় দেখা গেল, ঝগড়া করা রুপকের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আমি এটি মেনে নিয়েছিলাম।”
রুপক মাঝে মাঝে অদ্ভুত আচরণ করতো। কারণ ছাড়াই হঠাৎ করেই কথা বলা বন্ধ করে দিত। এই পরিস্থিতি চলত দিন, সপ্তাহ, মাসজুড়ে।
দীপা আরও বলেন, “রূপকের যখন ভালো লাগে তখনই আমার সঙ্গে কথা বলে। তারপর হঠাৎ করেই কথা বলা বন্ধ করে দেয়। কথা না বলে সে দিন, সপ্তাহ পার করে ফেলে। এমনও হয়েছে, পুরো এক মাস রুপক আমার সঙ্গে কথা না বলেনি। তারপর আচমকাই একদিন ফোন দেবে। এমনভাবে কথা বলবে যেন কিছুই হয়নি। তার কাছে সবকিছু যেন একেবারেই স্বাভাবিক। তার এই অদ্ভুত স্বভাবের সঙ্গে নিজেকে আর তাল মেলাতে পারছি না। আমাদের বিয়ের আর মাত্র ছয় মাস বাকি। সে এখনো আগের মতোই আছে। আমি বুঝতে পারছি না, ব্যাপারটিকে কিভাবে সামলাব?”
দীপার এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় ব্যাখ্যা করেছেন মুম্বাইয়ের মুলুন্দ ফর্টিস হাসপাতালের মনোরোগ চিকিৎসক ডা. পারুল টাংক। তিনি বলেন, দীপা, আপনার যে সমস্যার কথা বলেছেন সম্পর্কের ক্ষেত্রে তা অস্বাভাবিক কিছু নয়। প্রত্যকেরই পারস্পারিক যোগযোগের ধরন ভিন্ন। দ্বন্দ্বময় পরিস্থিতি সবাই নিজেকে সঠিভাবে সামলাতে পারে না। আপনার ছেলেবন্ধুটির কথা শুনে মনে হচ্ছে তিনি এ রকম। তার মধ্যে শিশুসুলভ আচরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।”
ডা. পারুল বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে মোকাবেলার পরামর্শ দিয়ে বলেন, বিয়ের পূর্বেই এই বিষয়টির সমাধান করে নেয়া উচিত। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, রূপকের অসঙ্গত আচরণের সময়টা আপনি কিভাবে গ্রহণ করেন এবং তা আপনার ওপর কেমন প্রভাব বিস্তার করে। চুপ না থাকে আপনি তার কাছ থেকে কী ধরনের ব্যবহার আশা করছেন তা প্রকাশ করুন। আমার মনে হয়, তিনি অবচেতনভাবেই এ রকম আচরণ করছেন। তাতে যদি কাজ না হয়, তাহলে একজন সম্পর্ক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। বিয়ের আগেই এই ব্যাপারটির সুরাহা হওয়া প্রয়োজন। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
(ঢাকাটাইমস/১৪মে/এসআই/জেবি)