আশাহীন একটি সম্পর্ককে বাঁচিয়ে রেখেছি
ঢাকাটাইমস ডেস্ক
১২ মে, ২০১৬ ০০:০৭:৫১

ঢাকা: ভালোবাসার সম্পর্কে অনেকেই জড়ান। যত সহজে একটি সম্পর্কে জড়ানো যায়, তার চেয়ে অনেক বেশি কঠিন হয় সম্পর্কটিকে সামাজিক মর্যাদা দিতে। নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি পার হয়ে কেউ কেউ ভালোবাসার মানুষটিকে কাছে পান। আবার অনেকে চিরকালের জন্য প্রিয় মানুষটিকে হারান। এমনই এক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়েছেন শবনম (ছদ্মনাম) নামে এক নারী। এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিজের সব ঘটনা খুলে বলে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায়ও চেয়েছেন তিনি।
শবনম বলেন, “একটি ছেলের সঙ্গে গত তিন বছর ধরে আমার সম্পর্ক। সে আমার থেকে বছর পাঁচেক বড়। সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ার আগেই সে বলেছিল তার মা-বাবার অমতে কাউকে বিয়ে করবে না। আমরা দুজন পুরোপুরি ভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবার থেকে আসা। তার পরিবার এই সম্পর্ক কোনো দিনই মেনে নিবে না। মনে হচ্ছে, আশাহীন একটি সম্পর্ককে বাঁচিয়ে রেখেছি। সে এখন পড়াশুনার কারণে অন্য শহরে থাকে।”
শবনম চলমান পরিস্থিতিতে নিজেকে সামাল দিতে পারছেন না। ভবিষ্যতের ভালো কিছু হবে আশায় তিনি সম্পর্কটিকে এখনো জিইয়ে রেখেছেন।
বর্তমান পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে দিয়ে শবনম বলেন, “দীর্ঘদিন তিলে তিলে গড়া সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, এটা ভাবলেই আমার প্রাণ বেরিয়ে আসতে চায়। আমি তার সঙ্গে এখনো কথা বলি এই আশায়, সে যদি তার মত পাল্টায়। কারণ আমরা দুজন একসঙ্গে চমৎকার সময় কাটিয়েছি। কিন্তু সে বলেছে, তার পরিবারগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে এবং দুজনের বয়সের ব্যবধানও অনেক। আমি বুঝতে পারছি না এখন কি করা উচিত। আমার সঙ্গে থাকার জন্য তার ওপর জোর করতে পারব না। তবে এই সম্পর্ক থেকে এভাবে বেরিয়ে আসা আমার জন্য একাধারে অনেক কঠিন এবং বেদনাদায়ক। আমার এখন কি করা উচিত?”
শবনমের সমস্যার পরামর্শ দিতে গিয়ে ভারতের হেলথমাইন্ডের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অদিতি কুলকার্নি বলেন, “নিজের ভালোবাসাকে চলে যেতে দেয়া আসলেই অনেক কঠিন একটি কাজ। যাইহোক আপনি ঠিকই বলেছেন, কষ্ট থাকা সত্ত্বেও সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার ওপর জোর করা যাবে না। এই পরিস্থিতিতে আপনাকে আরো বেশি বাস্তববাদী হওয়া প্রয়োজন। একবার যদি আপনি বর্তমান পরিস্থিতি মেনে নিতে পারেন তাহলে এর ক্ষতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেয়া আপনার জন্য সহজ হবে। এই সময় আপনার বিভিন্ন ধরনের আবেগীয় সমস্যা যেমন, রাগ, দ্রোহ, বিশৃঙ্খলা এবং বিষণ্ণতা দেখা দিতে পারে।”
অদিতি কুলকার্নি এই পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলে নেয়ার উপায় সম্পর্কে বলেন, এই পরিস্থিতি মেনে নেয়া যেকারো পক্ষেই কষ্টকর। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কষ্টবোধটা কমে আসবে। এই মুহূর্তে আমার পরামর্শ হচ্ছে, একজন অভিজ্ঞ কাউন্সেলরের পরামর্শ নিন। যিনি আপনাকে এই অবস্থায় সমর্থন জোগাবেন।”
এই সময়টাতে আবেগের চেয়ে বাস্তবতাকে বেশি গুরুত্ব দেয়ার কথা বলেন অদিতি। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আপনার শক্তিশালী আবেগ পরিস্থিতিটাকে অনেক বড় করে দেখতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয় সামাজিক এবং বাস্তবতার নিরিখে সম্পর্কটি পর্যালোচনা করা। একজন দক্ষ কাউন্সেলরের পরামর্শে এটি ভালোভাবে আয়ত্ত করতে সক্ষম হবেন। পাশাপাশি কষ্টের সঙ্গে মোকাবেলা করাও সহজসাধ্য হবে।
(ঢাকাটাইমস/১২মে/এসআই/এমআর)