পরস্পরের কল্যাণ কামনা মুমিনের গুণ
ইসলাম ডেস্ক
৩০ মে, ২০১৬ ২০:৪৩:১৯

ঢাকা: পরস্পরের কল্যাণ কামনা করা মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এক মুমিন কখনো অন্য মুমিনের জন্য অকল্যাণ কামনা করতে পারে না। কারণ মুমিনরা যে দীনে বিশ্বাস করেন, সে দীনই হলো কল্যাণকামিতা। রাসুল (সা.) স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন, দীন হলো কল্যাণকামিতার নাম। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, এই কল্যাণকামিতা কার জন্য? রাসুল (সা.) বললেন, কল্যাণকামিতা আল্লাহর জন্য, তাঁর রাসুলের জন্য, তাঁর কিতাবের জন্য ও মুসলমানদের জন্য। সাহাবায়ে কেরাম রাসুলের হাতে নামাজ, জাকাত এবং প্রত্যেক মুসলমানের সঙ্গে কল্যাণকামিতার ওপর শপথ নিতেন। কল্যাণকামিতা মুমিনের জীবনের অনন্য পাথেয়। আখেরাতে এই গুণটির কারণে মুমিনরা অনেক এগিয়ে যাবে। হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি তার অধীনস্থদের সঙ্গে কল্যাণকামিতার আচরণ করল না, সে জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না।’ কল্যাণ কামনার একটি দিক হলো, নিজের জন্য যা পছন্দ করবে তা অপরের জন্যও পছন্দ করা।
যদি কারো মধ্যে এ গুণটি অর্জন না হয়, তাহলে সে অপরের জন্য কল্যাণকামী বলে বিবেচিত হবে না। এ গুণটি না থাকলে সত্যিকার ইমানদার বলেও গণ্য হবে না। তাই হিংসুক ব্যক্তি কখনো কল্যাণকামী হতে পারে না। কারণ সে অন্যের কল্যাণ হোক তা চায় না। যে ব্যক্তি সর্বদা নিজের স্বার্থের জন্য কাজ করে সে কল্যাণকামী হতে পারে না। তাই স্বার্থপরতা কল্যাণ কামনার পথে একটি বড় বাধা।
যে ব্যক্তি নিজের জন্য যা পছন্দ করে অপরের জন্য তা পছন্দ না করলে সে-ই স্বার্থপর। স্বার্থপরহীনতা গুণটি অর্জন করা অত্যন্ত কঠিন। মুসলিম জীবনে এ গুণটির অভাব সবচেয়ে বেশি। এ গুণটি না থাকার কারণে আমরা সব ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হই অথচ এ গুণটিকে ইমানের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এটি ইমানের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। ইসলাম শান্তিময় সমাজের জন্য কল্যাণকামিতাকে মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আমাদের পরস্পরের প্রতি নানা হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টির একমাত্র কারণ কল্যাণকামিতা না থাকা। সমাজের সবাই পরস্পরের কল্যাণ কামনা করলে কোনো অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা থাকবে না। রাসুল (সা.)-এর যুগে সাহাবায়ে কেরামের পরস্পরে এই গুণটি ছিল ব্যাপকভাবে। এই গুণের কারণেই একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। সমাজে প্রতিযোগিতা থাকবে, তবে সেই প্রতিযোগিতা যেন অসুস্থতার মাত্রায় চলে না যায়; সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
(ঢাকাটাইমস/৩০মে/জেবি)