logo ০৮ জুলাই ২০২৫
৪৭২ কন্যার ভালোবাসায় সিক্ত বাবা!
ঢাকাটাইমস ডেস্ক
১৯ জুন, ২০১৬ ১৭:২০:১০
image



ঢাকা: ভালোবাসার প্রকাশ প্রতিদিনই ঘটে। তারপরও পৃথিবীর মানুষ বছরের একটা দিনকে বাবার জন্য রেখে দিতে চায়। যেমনটা মায়ের জন্য করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাবা দিবসের প্রচলন। বছর ঘুরে আজ সেই ‘বিশ্ব বাবা দিবস’। তবে এবারের বাবা দিবসটা অন্যদের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দের ছিল ভারতের নাগরিক মহেশ সাভানির। আজ তিনি তার ৪৭২ জন কন্যার ভালোবাসা ও শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়েছেন।  






ভাবছেন একজন লোকের এতগুলো কন্যা সন্তান হয় কীভাবে? এটা সত্যি, তিনি তাদের জন্মদাতা বাবা নন। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি যে কাজটি করে যাচ্ছে তা একজন জন্মদাতা বাবার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। পেশায় ব্যবসায়ী মহেশ সাভানি গত কয়েক বছর ধরে পিতৃহীন মেয়েদের নিজ খরচে বিয়ে দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, প্রথম বার সংসার করতে গিয়ে তৈজসপত্র থেকে শুরু করে টিভি, ফ্রিজসহ যা যা দরকার তা প্রতিটি তরুণীর সঙ্গে দিয়ে দেন।প্রতিটি বিয়েতে তিনি দুই হাত খুলে খরচ করেন। কোনো ধরনের কার্পণ্যতা করেন না। 






দশ বছর আগে মহেশ সাভানির(৪৭) একমাত্র ভাইয়ের মৃত্যু হয়। ভাইয়ের মৃত্যুর পর তিনি নিজ খরচে দুই ভাতিজির বিয়ে দেন। এই ঘটনার পর তিনি ভাবলেন, তার ভাতিজিদের মতো এরকম অসংখ্য মেয়ে আছে যাদের বাবা বেঁচে নেই। ২০০৮ সাল থেকে তিনি পিতৃহীন তরুণীদের নিজ খরচে বিয়ে দিতে শুরু করেন। এমনকি তাদের বিবাহিত জীবন যেন সুখের হয় সেই চেষ্টাও করে যান তিনি। এরপর থেকে তিনি নিয়মিত পিতৃহীন তরুণীদের বিয়ের আয়োজন করে যাচ্ছেন। 






মহেশ সাভানি ভাবনানগরের রাপার্দা গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা ভল্লব ভাই আহমেদাবাদ শহরে এসেছেন ৪০ বছর আগে। এখানে এসে তিনি প্রথম হিরা পরিষ্কারক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ধীরে ধীরে তিনি নিজেই একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়ে যান।  






সাভানির পরিবার আর্থিকভাবে যথেষ্ট স্বচ্ছল। প্রত্যেক তরুণীর বিয়ে বাবদ তার খরচ হয় চার লাখ রুপি।






সাভানি বলেন, ‘স্বামী হারানো একজন নারীর পক্ষে তার কন্যা সন্তানকে বিয়ে দেয়া বিশাল চ্যালেঞ্জের ব্যাপার।’






সোনা ও রুপার গহনা ছাড়াও মেয়ের জন্য পোশাক, তৈজসপত্র, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী দিয়ে দেন তিনি। যাতে করে একজন বিবাহিত নারী সুন্দরভাবে সংসার শুরু করতে পারে। ২০১৬ সালে তিনি ২১৬ জন মেয়েকে বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই মহৎ কাজটি করতে গিয়ে তিনি ধর্ম, বর্ণ, গোত্র বিবেচনা করেন না।






শৈশবেই বাবা হারান নাহিদা বানু। ২০১৪ সালে আরিফ নামে এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেন মহেশ সাভানি।






নাহিদা বানু বলেন, ‘মহেশ পাপা আমার কাছে বাবার চেয়েও বেশি। পৃথিবীর প্রতিটি মেয়ে যেন এমন একজন বাবা পায়। আমি এই দোয়াই করি।’






হিনা কাথিরিয়া নামে এক তরুণী ছয় বছর বয়সে তার বাবাকে হারান। ২০১৫ সালে তার বিয়ে হয়।






হিনা বলেন, ‘যখন আমাদের কোনো কিছুর দরকার হয় তখন মহেশ পাপাকে শুধু একটা বার্তা পৌঁছাই।’






(ঢাকাটাইমস/১৯জুন/এসআই/জেবি)