logo ২০ এপ্রিল ২০২৫
লেবাননে যাবে ৫০ হাজার শ্রমিক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
১৭ আগস্ট, ২০১৬ ১৪:৩৪:২৭
image



আগামী কয়েক মাসে লেবাননে ৫০ হাজার শ্রমিক পাঠানো যাবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। তিনি বলেন, খুব শিগগিরই এ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি সই হবে।






বুধবার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী।






তাদের অভিবাসন ব্যয় কত হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, সমঝোতা চুক্তিতে এসব বিষয় উল্লেখ থাকবে। তবে সবচেয়ে কম অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ হবে বলে তিনি জানান। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো শ্রমিক পাঠাতে পারবে। তবে সরকার নির্ধারিত খরচের মধ্যেই শ্রমিক পাঠাতে হবে। বাড়তি টাকা রিক্রুটিং এজেন্টরা নিতে পারবে না। কেউ বেশি টাকা নিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ তো থাকছেই।






লেবাননে শ্রমিকদের বেতনও বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশটিতে বর্তমানে একজন নারী কর্মী ১৫০ ইউএস ডলার পায়। তার বেতন ২৫০ ইউএস ডলার করা হবে। আর একজন পুরুষ কর্মী বর্তমানে পায় ২৫০ ইউএস ডলার। তার বেতন হবে ৪০০ ইউএস ডলার ।






১১-১৩ আগস্ট লেবানন সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, ১১ আগস্ট দেশটির শ্রমমন্ত্রী সিজান আজ্জির সঙ্গে আমার বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে লেবাননের শ্রমমন্ত্রী জানিয়েছেন- বাংলাদেশি কর্মীরা সেখানে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে। লেবানন বাংলাদেশি কর্মীদের বেশ পছন্দ করে। কারণ বাংলাদেশিরা কাজের ক্ষেত্রে অনেক বেশি আন্তরিক। বৈঠকে বাংলাদেশি নারী ও পুরুষ কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি, কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, সব খাত (বিশেষ করে নির্মাণ, চিকিৎসা, নার্স ও প্রকৌশলী) বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য উন্মুক্ত করার বিষয়ে লেবানন রাজি হয়েছে। ওই বৈঠকে বেশ কিছু বিষয়ে দুই দেশ একমত পোষণ করেছে। বিষয়গুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়ার বিষয়ে লেবাননের সঙ্গে খুব শিগগির সমঝোতা চুক্তি সই, লেবাননে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের ক্ষেত্রে সে দেশের বিদ্যমান শ্রম আইন অনুযায়ী সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণ। আর নতুন বেতন উভয় দেশের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি সইয়ের পর কার্যকর হবে। কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে লেবাননে কর্মী পাঠানোর ব্যবস্থা করবে বাংলাদেশ,গৃহকর্মী এবং পরিচ্ছন্নকর্মী ছাড়াও অন্যান্য সেক্টরে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের প্রস্তাব লেবানন সরকার সক্রিয় বিবেচনা করবে।






১২ আগস্ট দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নুহাদ মাশনুকের সঙ্গে বৈঠকের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, লেবাননে অনিয়মিতভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশি কর্মীদের বিনা জরিমানায় দেশে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ প্রদান, অনিয়মিত কর্মীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার মাধ্যমে নিয়মিতকরণ, তাদের ভিসাসংক্রান্ত জটিলতা নিরসন, আটককৃত বাংলাদেশিদের বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য প্রদানের বিষয়ে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানানো হয়। লেবাননের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবৈধভাবে অবস্থানকারীদের বিষয়ে সে দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়া তিনি বিনা ভিসায় অবস্থানকারী মহিলা কর্মীদের জরিমানা পরিশোধ ব্যতীত দেশে প্রত্যাবর্তনে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন। লেবাননে বর্তমানে প্রায় এক লাখ ৪২ হাজারের বেশি কর্মী কর্মরত আছেন।






জর্ডানে যাবে পুরুষ কর্মীও






বাংলাদেশ থেকে পুরুষ কর্মী নেয়ার বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে জর্ডান। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়।






গত ৬-৯ আগস্ট জর্ডান সফর করেছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী।






এ সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি জানান, দেশটির শ্রমমন্ত্রী আলী আল গাজায়ীর সঙ্গে ৮ আগস্ট বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশি গৃহকর্মীদের সঠিক প্রশিক্ষণ, ত্রুটিমুক্ত মেডিকেল চেকআপ, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য, কর্মস্থলের পরিবেশ, গৃহকর্মীদের সুরক্ষা, দক্ষ কর্মী তৈরিতে পদক্ষেপ গ্রহণ, জর্ডানে পুরুষ কর্মী গমনের সুযোগ সৃষ্টি এবং সকল খাতে (বিশেষ করে কৃষি ও নির্মাণ) বাংলাদেশি কর্মীর জন্য উন্মুক্তকরণের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। জর্ডানও এসব বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। কিছু বিষয়ে দুইদেশ একমত পোষণ করেছে।






বিষয়গুলো হচ্ছে- বাংলাদেশি পুরুষ কর্মীদের নিয়োগের বিষয়ে জর্ডানের শ্রম বাজারের চাহিদা নিরিখে যাচাই করে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ, কর্মীদের জর্ডান গমের পূর্বে যথাযথ প্রশিক্ষণ নিশ্চিতকরণ, বাংলাদেশের মেডিকেল সেন্টারসমূহে ক্রুটিমুক্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিতকরণ, গৃককর্মীদের কোনো প্রকার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন না করা, পরিমিত খাবার প্রদান ও নিয়মিত বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা করা।






জর্ডানে বর্তমানে পুরুষ কর্মী পাঠানো বন্ধ রয়েছে। দেশটিকে নারী গার্মেন্টস কর্মী যায় বাংলাদেশ থেকে। তবে বোয়েসেল থেকে বিভিন্ন সময়ে কম-বেশি পুরুষ কর্মীও গেছে বেশ আগে। সবমিলিয়ে দেশটিতে বর্তমান এক লাখ ২৫ হাজার কর্মী কাজ করছেন।    






সৌদিতেও শ্রমিক যাবে নূন্যতম ব্যয়ে






সৌদি আরবে অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ করে দেবে সরকার। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী আজকের সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে জানান, সৌদি আরবে কখনই শ্রমিক পাঠানো বন্ধ ছিল না। কম-বেশি শ্রমিক সবসময়ই সৌদিতে গেছে। তবে এখন যেহেতু সৌদি বেশি শ্রমিক নেয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, সেজন্য আমরাও প্রস্তুতি নিচ্ছি। সৌদিতে শ্রমিক পাঠানো নিয়ে কেউ যেন বাড়াবাড়ি করতে না পারে সেজন্য আমরা অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ করে দেবো। নির্ধারণ করা টাকার বেশি রিক্রুটিং এজেন্ট নিতে পারবে না। তবে টাকার পরিমাণ কত হবে এবিষয়ে বিস্তারিত বলেননি মন্ত্রী।    






(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/এমএম/জেবি)