বহু দিন ধরে জলাবদ্ধ মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। মাঠে, শ্রেণিকক্ষে পানি পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, কিলবিল করছে পোকা। ছোট একটা মোটর দিয়ে সামান্য পানি সরানো ছাড়া তেমন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
এক হাজার ৮৫২ জন শিক্ষার্থীর এই বিদ্যালয়ে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে দিনের পর দিন মাঠে জমে আছে দুর্গন্ধযুক্ত বিষাক্ত পানি। একটু বৃষ্টি হলেই মাঠের পানি ঢুকে শ্রেণিকক্ষে হাঁটুপানি হয়ে যায়।
জমে থাকা দূষিত পানিতে শিক্ষার্থীদের নানা রকম রোগ হচ্ছে। অনেকে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকছে। উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ময়লা পানির নানা রকম পোকার ভয়ে ক্লাস করতে চাচ্ছে না। বর্ষার শুরু থেকেই বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে দুর্গন্ধ ছাড়াচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠ ময়লা পানিতে সয়লাব। শ্রেণিকক্ষেও ময়লা পানি। কাঠের বেঞ্চগুলো শ্যাওলা ধরা, স্যাঁতসেতে। ময়লা পানিতে পা পড়ার পর পা চুলকাতে থাকে। জরুরিভাবে পানি নিষ্কাশন না করলে শিক্ষার্থীদের নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন।
এ ছাড়া পানিতে ভেসে বেড়াচ্ছে নানা পোকামাকড়, যা দেখে ভয় পায় শিক্ষার্থীরা। পাঠকেন্দ্রের এই দুর্দশায় ক্ষোভ বিস্তার করছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
বিদ্যালয়ের এই দুরবস্থার জন্য প্রধান শিক্ষককে দায়ী করছেন অনেক শিক্ষক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগ করেন, শিক্ষকদের মতামতের মূল্যায়ন করেন না প্রধান শিক্ষক। তিনি নিজের ইচ্ছামতো স্কুল পরিচালনা করেন। আজ প্রায় দুই মাস ধরে বিদ্যালয়ের মাঠে দুর্গন্ধ ও ময়লা পানি জমে আছে। নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা করেননি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির লোকজনও এ ব্যাপারে কোনো ভ্রƒক্ষেপ করেন না বলে জানান তারা।
শিক্ষকরা বলেন, পানি সরাতে ছোট একটা মোটর লাগানো হয়েছে। এ দিয়ে একটি ছোট পানির ট্যাংকি পূর্ণ করতে এক ঘণ্টা লেগে যাওয়ার কথা, এটি দিয়ে কীভাবে মাঠের এত এত পানি সরাবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মো. বোরহান খান বলেন, “বিদ্যালয়ে যখনই জলাবদ্ধতা হয়েছে, তা ম্যানেজিং কমিটিকে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে মোটর লাগিয়ে পানি সরাচ্ছি। তবে বড় সমস্যা হলো স্কুলের চারপাশে পানি নামার মতো কোনো ড্রেন বা খাল নেই।”
বৃষ্টির কারণে সাময়িকভাবে শিক্ষার্থীদের একটু সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, “তবে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে বড় মেশিন লাগানো হয়েছে। পানি না কমা পর্যন্ত মেশিন লাগানো থাকবে।”
মস্তফাপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আ. রব খানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “আমি দীর্ঘদিন একটা সমস্যায় ছিলাম। তাই মাটের জলাবদ্ধতার বিষয়ে তেমন কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি। তবে এই কাজটা স্কুলের প্রধান শিক্ষক করতে পারতেন।”
(ঢাকাটাইমস/১৯আগস্ট/মোআ)