logo ১১ এপ্রিল ২০২৫
তিনজনের অবদানে এক নবজাতকের জন্ম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১২:১৬:২৭
image



বিশ্বে এই প্রথম বিজ্ঞানের নতুন এক উপায় ব্যবহার করে এমন একটি শিশুর জন্ম দেয়া হয়েছে যার জন্মের পেছনে তিনজন মানুষের ভূমিকা রয়েছে।






বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন ব্যক্তির ফার্টিলিটির অভিনব এক কৌশলে বিজ্ঞানীরা এই শিশুটির জন্ম দিয়েছেন। এই শিশুটির জন্মের পেছনে তাদের পিতা মাতা ছাড়াও আরও একজনের অবদান ছিলো। নিউ সায়েন্টিস্ট সাময়িকীতে এই খবরটি প্রকাশিত হয়েছে।






চিকিৎসকরা বলছেন, নবজাতক শিশুটি একটি ছেলে। তার বয়স এখন পাঁচ মাস।






এই শিশুটির শরীরে স্বাভাবিকভাবেই ছিলো তার মা ও বাবার ডিএনএ। কিন্তু তারপরেও তৃতীয় আরেক ব্যক্তির কাছ থেকে ছোট্ট একটি জেনেটিক কোড নিয়ে সেটি তার শরীরে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। তৃতীয় ওই ব্যক্তিটি একজন দাতা।






শিশুটির মা জর্ডানের নাগরিক। তার জিনে কিছু ত্রুটি ছিলো। শিশুটি যাতে ত্রুটিমুক্ত হয়ে জন্মাতে পারে এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকরা সেটা নিশ্চিত করেছেন।






বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে।






তারা বলছেন, যেসব পরিবারে জেনেটিক ত্রুটি বা সমস্যা আছে বিজ্ঞানের এই আবিষ্কার তাদেরকে সাহায্য করতে পারে।






তবে তারা বলছেন, এই কাজটি করার আগে বহু জিনিস পরীক্ষা করে নেওয়া খুব জরুরী।






মাইট্রোকন্ড্রিয়াল ডোনেশন নামের এই প্রক্রিয়াটি নিয়ে এখনও প্রচুর বিতর্ক হচ্ছে।






তিন জন মানুষের শরীর থেকে ডিএনএ নিয়ে এই প্রথম যে কোন শিশুর জন্ম হলো তা কিন্তু নয়। নব্বইয়ে দশকে এই কাজটি প্রথম হয়েছে।






তবে এবার যেভাবে করা হলো সেটি একেবারে নতুন এবং তাৎপর্যপূর্ণ প্রক্রিয়া।






প্রত্যেক কোষের ভেতরে থাকে ছোট্ট একটি কম্পার্টমেন্ট যাকে বলা হয় মাইটোকন্ড্রিয়া।






এই মাইটোকন্ড্রিয়া খাদ্য থেকে জ্বালানী তৈরি করে।






কোন কোন নারীর মাইটোকন্ড্রিয়াতে জেনেটিক ত্রুটি থাকে এবং সেটা তাদের সন্তানদের মধ্যেও ছড়িয়ে দিতে পারে।






জর্ডানের এই পরিবারটির যে ত্রুটি ছিলো তার নাম 'লেই সিন্ড্রোম।' এবং এই ত্রুটির ফলে শিশুটির মৃত্যুও হতে পারতো।






এই ত্রুটি সংশোধন করতে বিজ্ঞানীদেরকে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।






যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকদের এই দলটিকে এসব করতে যেতে হয়েছে মেক্সিকোতে যেখানে এসব নিষিদ্ধ করে কোন আইন কার্যকর নেই। যুক্তরাষ্ট্রে এধরনের গবেষণা আইন করে নিষিদ্ধ।






এই প্রক্রিয়ায় ডাক্তাররা মায়ের ডিম্বাণু থেকে গুরুত্বপূর্ণ সব ডিএনএ সংগ্রহ করেছেন। একই সাথে দাতার ডিম্বাণু থেকেও স্বাস্থ্যকর মাইটোকন্ড্রিয়া সংগ্রহ করা হয়। তারপর এই দুটোকে নিষিক্ত করা হয় পিতার শুক্রাণুতে।






তারপর শিশুটির জন্ম হয়েছে। ডাক্তাররা বলছেন, শিশুটি সুস্থ আছে। এখন পর্যন্ত তার শরীরে কোনো ত্রুটি ধরা পড়েনি।






(ঢাকাটাইমস/২৮সেপ্টেম্বর/এসআই)