ঢাকা: ৩০ নভেম্বর ভোর রাত তিনটায় গ্রেপ্তার হন দপ্তরের দায়িত্বে থাকা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তার প্রেপ্তারের পর দপ্তরের দায়িত্ব পান দলের আরেক যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমদ। দুইদিন পার হলেও এখনও কার্যালয়ে আসেননি সালাহউদ্দিন।
সূত্রে জানা গেছে, তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন অজ্ঞাত স্থান থেকে। এখনও প্রকাশ্যে আসেননি।
এভাবে শুধু সালাহউদ্দিনই নয়, দলের অন্যান্য সিনিয়র নেতারাও আত্মগোপনে চলে গেছেন।
এরআগে একবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন রুহুল কবির রিজভী। তারপর দায়িত্ব পান সালাহউদ্দিন আহমদ। তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর দপ্তরের দায়িত্ব পান দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু। তখন দলীয় কার্যালয় নেতা শূন্য হয়নি। কিন্তু এখন কার্যালয়ে কেউই আসছেন না।
রিজভীকে গ্রেপ্তারের পর দলের কেন্দ্রীয় অন্য নেতারা আত্মগোপন করেছেন। আজ রবিবার দুপুর পর্যন্ত নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয় ছিল নেতাশূন্য।
শনিবার ভোরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে রুহুল কবির রিজভী ও দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বেলাল আহমেদকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় পুলিশ কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর করেছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।
এদিকে রিজভীর গ্রেপ্তারের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগরের নেতারা আত্মগোপন করেছেন। এমনকি টেলিভিশনে চেহারা দেখাতে উন্মুখ বিএনপির নেতাদেরও গণমাধ্যম কর্মীরা খুঁজে পাননা। বেশির ভাগ নেতার মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও প্রকাশ্যে আসছেন না।
এত দিন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করে রুহুল কবির রিজভী প্রতিদিন গণমাধ্যমের কাছে বক্তব্য তুলে ধরতেন।
সর্বশেষ শুক্রবার রাত ১০টায় সংবাদ সম্মেলন করে তিনি নতুন করে ৭২ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর ছয় ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার এড়াতে রিজভী গত ৯ নভেম্বর থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিএনপি এখন জামায়াতের কৌশল অবলম্বন করছে। তারা প্রকাশ্যে না এসে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কর্মসূচি ঘোষণা করতে শুরু করে করেছে।
গতকাল বিএনপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এখন থেকে আরেক যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদ দলের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
মুখপাত্র হিসেবে নতুন দায়িত্ব পাওয়া সালাহ উদ্দিন আহমদও আত্মগোপনে থেকে গণমাধ্যমে বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছেন। তিনি গতকাল সকালে দুটি বেসরকারি টেলিভিশনের দুই সাংবাদিককে গুলশানের একটি বাসায় ডেকে নিয়ে বক্তব্য দেন। এ সময় রিজভীকে গ্রেপ্তার ও দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে পুলিশের ‘তাণ্ডবের’ নিন্দা জানান।
এ ছাড়া আরও কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে টেলিফোনে বক্তব্য দেন। দুপুরের পরপর তাঁর গুলশানের বাসায় পুলিশ অভিযান চালালে সালাহ উদ্দিন আহমদকে আর ফোনেও পাওয়া যায়নি।
রিজভীকে গ্রেপ্তার ও বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুরের নিন্দা জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিনি এ নিন্দা জানান।
(ঢাকাটাইমস/১ডিসেম্বর/এমএম)