logo ১৮ মে ২০২৫
লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক
অধ্যাপক হাসান আবদুল কাইয়ূম
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:২৫:০৬
image

হযরত ইব্রাহীম ‘আলায়হিস্ সালাম আল্লাহ্র নির্দেশে বায়তুল্লাহ্ হজ্ব করার ঘোষণা দিলে তা আরবের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। তখন থেকে জিলহজ্ব মাসে হজ্ব পালিত হতে থাকে। তিনি আরাফাত ময়দানে প্রবেশপথের পার্শ্বে একটি মসজিদও স্থাপন করেন। দুই খণ্ড  সেলাইবিহীন সাদা বস্ত্র পরিধানের প্রবর্তন তিনি করেন এবং তালবিয়া বা লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক বলার প্রবর্তন তিনি করেন। তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র হযরত ইসমাঈল ‘আলায়হিস্ সালাম এই বায়তুল্লাহ্র নগরী মক্কা মুকাররমার স্থায়ী বাসিন্দা হন। তাঁর বংশধররাই মক্কার প্রধান নেতৃত্বে ছিলেন। এই বংশই পরবর্তীকালে কুরায়শ বংশ নামে পরিচিত হয়। কা’বার কর্তৃত্ব ছিল প্রধানত কুরায়েশদের হাতে। তারাই যা  সিদ্ধান্ত নিত সেটাই সবাই মান্য করতো। কালক্রমে কা’বা শরীফে ও এর চারপাশে বিভিন্ন ধরনের মূর্তি বসানো হয়। বিভিন্ন গোত্রের নিজস্ব মূর্তি ছিল। হজ্ব অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু হযরত ইবরাহীম আলায়হিস সালাম প্রবর্তিত হজ্বের আদল তারা রাখেনি। জিলহজ্ব মাসের নির্ধারিত তারিখে হজ্ব পালন করার নিয়ম থাকলেও সেই তারিখ তারা হেরফের করতো। নিজেদের পছন্দমতো পঞ্জিকা পরিবর্তন করতো তারা। যে কারণে জিলহজ্ব মাস ধরে জিলকদ মাসেও হজ্ব পালিত হতো। সেটাকেই জিলহজ্ব মাস ঘোষণা করা হতো। কুরবানির পশু জাঁকজমকে সজ্জিত করা হতো এবং যার যার দেবতার নামে কুরবানি দিতো। কুরবানির রক্ত যার যার দেবতার মূর্তির গাত্রে লেপে দেয়া হতো। তারা নির্ধারিত স্থানে এসে নারী-পুরুষ সবাই উলঙ্গ হয়ে যেতো। এই উলঙ্গ হয়ে যাওয়াটাকেই তারা ইহ্রাম বাঁধা বলতো। তারা মনে করতো মাতৃগর্ভ থেকে শিশুতো উলঙ্গ অবস্থাতেই ভূমিষ্ঠ হয়। কুরায়েশরা কেবল একখণ্ড সাদা কাপড় পরনে রাখতো।


তারা লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক বলতো তার সঙ্গে তাদের যার যার দেব-দেবীর নাম যুক্ত করতো। কা’বাকে গিলাফ দ্বারা আচ্ছাদিত করার প্রথা সেই অন্ধকার যুগেই প্রচলিত হয়। সর্বপ্রথম   ইয়েমেনের তুব্বা আসাদ আল হিমায়ের তিনি স্বপ্নযোগে আদিষ্ট হন যে, হে আসাদ! তোমার উচিত কা’বাকে আচ্ছাদিত করা। এই স্বপ্ন দেখে তিনি চামড়ার গিলাফ দিয়ে কা’বা আচ্ছাদিত করেন। তারপর তিনি স্বপ্নে আদিষ্ট হন ডোরাকাটা লালবর্ণের ইয়েমেনী বস্ত্র দ্বারা আচ্ছাদিত করতে। তুব্বার পর বহু ব্যক্তি সেই জাহেলী যুগে কা’বায় গিলাফ পরান। এটাকে মনে করা হতো ধর্মীয় কর্তব্য।