ইসলামে মানবতাবোধ
ইসলাম ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
২৪ মে, ২০১৫ ০০:১১:১১

ঢাকা: মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা জীব। অন্য যে কোনো প্রাণীর চেয়ে মানুষের বোধ ও বিশ্বাস বেশি শাণিত। মানুষের বিবেক-বিবেচনা যে কোনো প্রাণীর তুলনায় অত্যন্ত প্রখর। এ জন্য সৃষ্টি ও স্রষ্টার প্রতি ভালোবাসা মানুষের সহজাত বিষয়। মনুষ্যত্ব আছে বলেই মানুষ সবার সেরা। কারো সমস্যা-সংকটে মানুষ যে ত্যাগের উদাহরণ দেখায় তা অন্য কোনো জীবের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়।
এটা করে মানুষ তার স্বভাবজাত ভালোবাসা ও দায়বোধ থেকে। তবে এই দায়বোধ সবার মধ্যে সমান থাকে না। কারো মধ্যে মনুষ্যত্বের চাপটা বেশি থাকে। তখন তারা মানুষের সর্বোচ্চ স্তর মহামানবে উন্নীত হন। আবার কেউ কেউ মানুষ হওয়ার পরও তার মধ্যে মনুষ্যত্ববোধের অভাব থাকে। এ জন্য তারা কখনো কখনো এমন কাজ করে বসে, যা জীবজন্তুকেও হার মানায়।
প্রকৃতির ধর্ম ইসলাম মানুষের ভেতরে তার প্রকৃতিগত গুণ তথা মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটিয়েছে। ইসলামের শিক্ষা হলো, প্রথমে ভালো মানুষ হতে হবে, পরে ভালো মুসলমান। যিনি ভালো মুসলমান, তিনি ভালো মানুষও বটে। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘তোমরা ঈমান না আনা পর্যন্ত বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না। আবার পরস্পরকে ভালোবাসতে না পারা পর্যন্ত ঈমানদার হতে পারবে না।’ প্রকৃত ঈমানদার হতে হলে মানবপ্রেম অন্তরে জাগাতে হবে। মানুষের প্রতি দায়বোধ বাড়াতে হবে। মানবকল্যাণে যিনি কাজ করেন, তিনিই আল্লাহর প্রিয়।
প্রিয় নবী মুহম্মদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) জীবনভর মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। তার শিক্ষাও হলো মানবতাবোধের শিক্ষা। তিনি শিখিয়েছেন কীভাবে মানুষকে ভালোবাসতে হবে। মানুষের জন্য কাজ করলে পার্থিব ও পরকালীন উপকারিতার কথা তিনি সবিস্তারে আলোচনা করেছেন।
ইসলামী দর্শনানুযায়ী মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই। ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের অন্যতম নামাজের মধ্য দিয়ে মানবতাবোধ, একতা, সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের শিক্ষা দেয়া হয়। যে সমাজে মানবিক মূল্যবোধ ও মানবাধিকার থেকে মানুষ বঞ্চিত হয়, সে সমাজেই দেখা দেয় অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা, অন্যায় এবং অবিচার।
আজকের পৃথিবীতে প্রকৃত মানুষের অভাব বড় বেশি। পৃথিবীর সব ধর্মই মনুষ্যত্ব শেখায়। বিশ্বসমাজে সবাই নিজ নিজ ধর্ম পালন করলে মানব সমাজে অশান্তি থাকতে পারে না। বিশেষত ইসলাম মানবতার বার্তাবাহক। এ জন্য আগে ইসলামের অনুসারীদের মধ্যে মানবতাবোধ জাগাতে হবে। তবেই তা বিশ্বব্যাপী প্রসার ঘটবে।
(ঢাকাটাইমস/২৪মে/এমআর)