মাহে রমজানে তওবা ও দোয়া
ইসলাম ডেস্ক
২৮ জুন, ২০১৫ ১৪:৪৫:৩৬

ঢাকা: রোজা পালনের মধ্য দিয়ে মুমিন বান্দার অন্তর আল্লাহর নির্দেশের সামনে আত্মসমর্পণের যে উজ্জ্বল অনুভূতি জাগ্রত হয়, তাতে তার পেছনের সব গুনাহ ও পাপের প্রতি অনুতাপ সৃষ্টি হয়। মুমিনের হৃদয় ও জীবনকে ধুয়ে সাফ করার জন্য তওবাই হচ্ছে সুন্দর উপায়। পেছনের সব গুনাহর জন্য অনুশোচনা করে সামনে আর গুনাহ না করার প্রত্যয় নিয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়াই তওবার মূল কথা। যেসব গুনাহ ক্ষতিপূরণযোগ্য, সেগুলোর ক্ষতিপূরণ দেয়ার চেষ্টা করা। যেমন নামাজ-রোজা কাজা হয়ে গিয়ে থাকলে হিসাব করে তা আদায় করতে লেগে যাওয়া। আর অপরের কোনো হক-টাকা-সম্পদ নিজের কাছে থাকলে তা আদায় করে দেয়া অথবা আদায় করতে থাকা। আর অন্যায়ভাবে কারো সম্মানহানি করলে, কাউকে কষ্ট দিলে তার কাছ থেকে যথাযথভাবে ক্ষমা গ্রহণ করা। তওবা করার পর যদি কোনো কারণে তা ভেঙে যায়, তাহলে আবারো তওবা করা যায়। তবে তওবা করার সময় ভাঙার মনোভাব থাকা যাবে না এবং পূর্ণ সদিচ্ছা ও প্রত্যয় নিয়েই তওবা করতে হবে।
রমজান আমাদের জীবনে যে শুদ্ধতার ও শুভ্রতার আবহ নিয়ে এসেছে, তাতে তওবা করে জীবনকে আলোকিত করার সুযোগ সবার গ্রহণ করা উচিত। রমজানে তওবা করে তার ওপর টিকে থাকা যত সহজ তা আর কখনো সম্ভব নয়। রমজানে চলতে-ফিরতে সংঘটিত নানা ধরনের পাপের জন্য আল্লাহর কাছে আমরা দিন শেষে অথবা গুনাহ হয়ে যাওয়া মাত্রই ইস্তেগফার করতে পারি। মুমিনের জীবনে অত্যন্ত সৌভাগ্যপূর্ণ নেয়ামত হচ্ছে আন্তরিক ইস্তেগফারের সুঅভ্যাস। রমজানে এ সুঅভ্যাসটি আমরা শুরু করতে পারি। আগে থেকে অভ্যাসটি থেকে থাকলে তা আরো জোরদার করতে পারি।
বান্দা যখন তার নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করে, তার কাছে মাগফিরাত তলব করে-এটা আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয়। কোরানের বিভিন্ন স্থানে দোয়া কীভাবে করতে হবে তার পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ বান্দার আহ্বানে সাড়া দেবেন বলে কোরানে উল্লেখ করেছেন ‘হে বান্দারা! তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।’ বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে ডাকলে আল্লাহ বান্দার ডাকে বেশি সাড়া দেন বলেও হাদিসে উল্লেখ আছে। রমজানে আল্লাহর দরবারে দোয়া করার এবং তা কবুল হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে এমন মুহূর্ত অনেক। সেহেরি, ইফতার, তারাবি, শবে কদরসহ প্রতিটি মুহূর্তই বান্দার দোয়া কবুল হওয়ার।
দোয়ার আদব হলো বান্দা তার সব দুর্বলতা ও কমজোরি আল্লাহর কাছে পেশ করবে অত্যন্ত বিনম্র ভাষায়। নিজের সব সত্তাকে বিলীন করে দেবে আল্লাহর দরবারে। নিজের চাওয়া-পাওয়া সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে দেবে। সর্বোপরি অন্তরকে স্বচ্ছ, কলুষতামুক্ত করে আল্লাহর দরবারে হাজিরা দিতে পারলেই দোয়া কবুলের গ্যারান্টি দেয়া যায়। দুনিয়া ও আখেরাতের জীবনকে সফল এবং সার্থক করতে হলে দোয়া ও মোনাজাতের কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য প্রত্যেক মুসলমানের উচিত রমজানে খাঁটি মনে তওবা করে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে জীবনের সাফল্য নিশ্চিত করা।
(ঢাকাটাইমস/২৮জুন/জেবি)