logo ২৪ এপ্রিল ২০২৫
সমন্বয় নেই বিএনপির দপ্তরে, হাইকমান্ড ক্ষুব্ধ!
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
২৮ আগস্ট, ২০১৫ ২০:১৬:৫১
image

ঢাকা: সমন্বয় নেই দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির দপ্তরে। দলের এই গুরুত্বপূর্ণ বিভাগটি খেয়াল খুশিতে চলছে এমন অভিযোগও আছে। একই দিনে একই বিষয়ে একাধিকবার গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠানো এবং বিবৃতি দিয়ে তা প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘটনাও আছে। সবশেষ দলের চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে অগ্রিম বিবৃতি পাঠিয়ে পরে প্রত্যাহার করার ঘটনায় দলের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে।


বিষয়টি নিয়ে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সিনিয়র নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকে দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথাও বলেছেন।


যদিও দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্তরা বিষয়টিকে ভুল বলে দাবি করছেন। দপ্তরে সমন্বয় আছে বলেও তাদের ভাষ্য।


বৃহস্পতিবার বিকালে দলের চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি। এতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলায় চার্জ গঠন নিয়েই কথা বলা হয়। এমনকি সাংবাদিকরা ভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করলে নেতারা মূল বিষয় আড়ালে চলে যাবে এই চিন্তায় উত্তর দেননি।


কিন্তু সন্ধ্যা সাতটার দিকে গণমাধ্যমে দপ্তর থেকে চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে বিবৃতি পাঠানো হয়। যাতে স্বাক্ষর করেন দলের মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন।


সংবাদ সম্মেলনে সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনলেও বিবৃতিতে দেশ গড়তে সরকারকে মিলেমিশে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।


সংবাদ সম্মেলনের পর অনলাইন ও টেলিভিশনগুলোতে তারেক রহমানকে নিয়ে দলের বক্তব্য প্রচার ও প্রকাশ হলেও বিবৃতির পর চিত্র পাল্টে যায়। সামনে চলে আসে খালেদা জিয়ার আহ্বান।


ততক্ষণে বেশিরভাগ দৈনিক পত্রিকা খালেদা জিয়ার বিবৃতি নিয়ে তৈরি প্রতিবেদনটি মেকআপও হয়ে যায়। এমন অবস্থায় রাত নয়টার দিকে বিবৃতিটি প্রত্যাহার করা হয়েছে জানিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এসএমএস করা হয়।


এতে লেখা হয়, ‘স্টেটম্যান্ট অব বিএনপি চেয়ারপারসন হুইচ হ্যাজ বিন সেন্ট অলরেডি উইল বি স্টপড বাট কনডোলেন্স প্রেস রিলিজ উইল বি ব্রডকাস্টড অ্যান্ড প্রিন্টেড।’


এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে খালেদা জিয়ার পক্ষে একই বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।


দলের দপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, আমাকে বিবৃতিটি পাঠাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল এবং পরে প্রত্যাহারে খবর জানাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমি এর বেশি কিছু জানি না।


আর সহ-দপ্তর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন বিষয়টিকে ভুল হয়েছে দাবি করে ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পরের দিনের বিবৃতিটি আগেরদিন পাঠানো হয়ে গেছে।”


গত ১৭ জানুয়ারি অবরোধ চলাকালে খালেদা জিয়ার পক্ষে একটি বিবৃতি দিয়ে যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে পরে তা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। কারণ একইদিনে একই সময়ে চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানও বিবৃতি পাঠিয়েছিলেন।


তবে সমন্বয়হীনতার কারণে এমনটা হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে শাহীন বলেন, এটা ভুল হয়েছে। এটাকে অন্যভাবে নেয়ার কিছু নেই। এখানে সমন্বয়হীনতার কিছু নেই।”


তিনি আরও বলেন, “বিবৃতিটি কালকেই (বৃহস্পতিবার) পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু কাজী জাফর আহমদের হঠাৎ মৃত্যুর কারণে বিবৃতিটি আজকে (শুক্রবার) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কারণ একই দিনে চেয়ারপারসনের দুটি বিবৃতি (শোক বার্তাসহ) আমরা পাঠাই না।”


অবরোধের সময়ে বিবৃতি দিয়ে প্রত্যাহারের বিষয়ে তিনি বলেন, তখন আমরা নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিলাম। আর মানুষের তো ভুল হতেই পারে।”


তবে দলের মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলটির একজন শীর্ষ নেতা ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরা কথা বলেছি। তবে এটা কাম্য নয়। ভবিষ্যতে এমনটা না হয় সেই নির্দেশনা দেয়া হবে।”


(ঢাকাটাইমস/২৮আগস্ট/বিইউ/এআর/ ঘ.)