logo ১৮ মে ২০২৫
কন্যা শিশু ও ইসলাম

ইসলাম ডেস্ক
১১ অক্টোবর, ২০১৫ ২০:১২:১০
image

ঢাকা: আগামীকাল ১২ অক্টোবর বিশ্ব কন্যা শিশু দিবস। শিশুদের স্নেহ করা, তাদের প্রতি মমত্বপূর্ণ আচরণ করার বিশেষ তাগিদ রয়েছে ইসলামে। রাসুলুল্লাহ সা. শিশুদের স্নেহ করতেন, তাদের প্রতি মমতামাখা আচরণ করতেন। তিনি শিশুদের মানবাধিকার রক্ষায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। বিশেষ করে কন্যা শিশুদের প্রতি রাসুলের মমতা বেশি প্রকাশ পেতো। কন্যা শিশুদের অধিকার প্রদানে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে ইসলাম।


হজরত আয়েশা সিদ্দিকা রা. বলেন, একজন বেদুইন ব্যক্তি রাসুল সা.-এর কাছে এসে শিশুদের স্নেহভরে চুমু খেতে দেখে বললেন, আপনারা কি শিশুদের স্নেহভরে চুমু খান? আমরা তো শিশুদের স্নেহভরে চুমু খাই না। নবীজি বললেন, আল্লাহতায়ালা তোমার হৃদয় থেকে দয়াময়া উঠিয়ে নিয়ে গেছেন। তাতে আমার কী করার আছে। অর্থাৎ তোমাদের হৃদয় শিশুদের প্রতি মায়া নেই বলে তুমি শিশুদের স্নেহভরা চুমু খেতে পার না।


রাসুল সা. যে যুগে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেই অন্ধকারাচ্ছন যুগে আরবে কন্যাশিশুর জন্মগ্রহণকে অপমানজনক হিসেবে ভাবা হতো। কেউ কেউ এ জন্য কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দিয়ে লোকলজ্জার কবল থেকে বাঁচার চেষ্টা করত। পবিত্র কোরআনের সূরা বনি ইসরাইলের কন্যাশিশু হত্যার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে 'তোমাদের সন্তানদেরকে দারিদ্র্য ভয়ে হত্যা করিও না। তাদেরকেও আমিই রিজিক দিই এবং তোমাদেরকেও, নিশ্চয়ই তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ।'


কন্যাসন্তান পালনে বাবা-মায়ের মেহনতের জন্য আখেরাতের জীবনে বাবা-মাকে পুরস্কৃত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। রাসুল বলেছেন, কেউ যদি কন্যাসন্তান প্রতিপালন নিয়ে কষ্টে পড়ে এবং ধৈর্য ধরে তাদের প্রতি সুন্দর আচরণ করে যত্নসহকারে লালন-পালন করে এবং তাদের শিষ্টাচার করে গড়ে তোলে- কিয়ামত দিবসে এ কন্যা সন্তানরা তার জন্য জাহান্নামের মাঝে আড়াল হয়ে দাঁড়াবে। (বুখারি, মুসলিম)


রাসুল সা. যখন নামাজ পড়তেন তখন কখনো কখনো তার প্রিয় নাতি হজরত হাসান রা. ও হজরত হুসাইন রা. নানাজানের কাঁধে চড়ে বসতেন। রাসুল সা. এজন্য বিরক্ত হতেন না বরং তারা যতক্ষণ নিজেদের ইচ্ছায় কাঁধ থেকে না নামতেন ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি সেজদা থেকে উঠতেন না। একবার এক সাহাবি এজন্য তাদের মৃদু ধমক দিলে তিনি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। শিশুদের মানবাধিকার রক্ষা এবং তাদের প্রতি স্নেহ প্রদর্শন যেহেতু রাসুল সা.-এর সুন্নাত সেহেতু এ বিষয়ে আমাদের সবারই যত্নবান হওয়া উচিত। শিশুদের ওপর কোনো ধরনের নিষ্ঠুরতা কাম্য নয়। আমাদের সমাজে হঠাৎ শিশুর প্রতি যে নিষ্ঠুরতা বেড়ে গেছে এর বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।


(ঢাকাটাইমস/১১অক্টোবর/জেবি)