শিক্ষকের মর্যাদা ও ইসলাম
ইসলাম ডেস্ক
০৪ অক্টোবর, ২০১৫ ২১:৪৫:৫২

ঢাকা: ৫ অক্টোবর সোমবার শিক্ষক দিবস। শিক্ষকতা হচ্ছে সর্বোত্তম ও সবচেয়ে সম্মানজনক পেশা। কারণ শিক্ষকরাই কোনো জাতি গঠনে এবং সে জাতির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। পেশাগত দায়িত্বের অংশ হিসেবে শিক্ষকদেরই তার শিষ্যদের মনন ও ব্যক্তিত্ব গঠনের গুরুদায়িত্বটি পালন করতে হয়।
একজন আদর্শ শিক্ষকের কাজকে একজন নবীর কাজের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। রাসুল (সা.) নিজেকে শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। তিনি বলেন, ‘মূলত আমাকে শিক্ষকরূপেই পাঠানো হয়েছে।’ কোরানে নবীজির যে চারটি প্রধান দায়িত্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার সবক’টি শিক্ষকের কাজ। যেমন আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ ওহি তথা কোরানের আয়াতগুলো পাঠ করে শুনানো; অব্যাহত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আকিদা, বিশ্বাস ও আমল-আখলাকের পরিশুদ্ধকরণ; কোরানের বিধানাবলির জ্ঞান দান এবং হিকমাহ (রিংফড়স) শিক্ষা দান।
রাসুলকে যে চারটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার জন্য পাঠানো হয়েছিল এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাযকিয়া তথা পরিশুদ্ধকরণের কাজ। একজন আদর্শ শিক্ষক ইচ্ছা করলে এবং আন্তরিকভাবে চেষ্টা করলে এ পরিশুদ্ধির কাজটি সাফল্যজনকভাবে সম্পাদন করতে পারেন। তবে এ জন্য তার যে মৌলিক গুণটি অর্জন করতে হবে তা হলো নিজেকে একজন সত্যিকার আদর্শ ব্যক্তিত্বরূপে উপস্থাপনের চেষ্টা করা। এ কাজটি তখনই সম্ভব হবে, যদি তিনি রাসুলের আদর্শকে সামনে রেখে তা অনুসরণের চেষ্টা করেন। অতএব, বলা চলে একজন শিক্ষক যখন রাসুলের আদর্শে নিজেকে গুণান্বিত হওয়ার প্রচেষ্টায় সফল হন এবং নিজের শিক্ষার্থীদের আদর্শ ব্যক্তিত্বরূপে গঠন করার প্রয়াস পান, তখন তিনি একজন আদর্শ শিক্ষকের ভূমিকা যথার্থভাবে পালন করলেন।
শিক্ষক হচ্ছেন সংশোধনকারী, মুরব্বী ও পথপ্রদর্শক। ইসলাম শিক্ষককে মহান ব্যক্তিত্ব এবং শ্রদ্ধাভাজন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ইসলাম শিক্ষককে রুহানি পিতা সাব্যস্ত করেছে। হজরত ওমর (রা.) শিক্ষকদের পাঠদানের পাশাপাশি দেশের সর্বোচ্চ ব্যবস্থাপনার আসনে সমাসীন করেছিলেন। হজরত আলী (রা.) বলেছেন, ‘যিনি আমাকে একটি অক্ষর শিখিয়েছেন, তিনি আমার মনিব। চাইলে তিনি আমাকে বিক্রি করে দিতে পারেন। একজন আদর্শ শিক্ষক জাতির নির্মাতা। আগামী দিনে যারা জাতির নেতৃত্ব দেবেন, তারা নির্মিত হন শিক্ষকদের হাতে। এ জন্য শিক্ষকদের মধ্যে থাকা চাই নৈতিকতা, আদর্শ এবং যোগ্য ছাত্র গড়ে তোলার সর্বাত্মক চেষ্টা। শিক্ষকরা প্রকৃত গুণে গুণান্বিত হলেই জাতির ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।
(ঢাকাটাইমস/৪অক্টোবর/জেবি)