logo ১৯ মে ২০২৫
ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর ঈদুল আজহা

ইসলাম ডেস্ক
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ১৩:০০:৪৮
image

ঢাকা: ইসলামের অন্যতম বিধান ঈদুল আজহায় পশু জবাইয়ের মাধ্যমে স্রষ্টার প্রতি নিজের আনুগত্য প্রকাশ করা। নিজেকে স্রষ্টার সামনে উৎসর্গ করার উপায় হলো কোরবানি। হজরত ইবরাহিম আ. নিজের প্রিয় পুত্রের গলায় ছুরি দিয়ে স্রষ্টার সামনে নিজের আনুগত্যের সর্বোচ্চ বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছিলেন। সেই সূত্র ধরে আখেরি নবীর উম্মতের ওপর এই বিধানটি জারি করা হয়েছে, যাতে তারা পশুর গলায় ছুরি চালিয়ে আল্লাহর আনুগত্য প্রকাশ করতে পারে।


আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে কোরবানি প্রতিপালন করতে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। হাদিস শরিফেও রাসুলুল্লাহ (সা.) কোরবানি পালনের অনেক ফজিলত বর্ণনা করেছেন। হজরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) এর সাহাবিরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! এই কোরবানিটা কী? রাসুলুল্লাহ (সা.) জবাব দিলেন, এটা তোমাদের পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.) এর সুন্নত বা আদর্শ। এরপর তারা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! এতে আমাদের জন্য কী উপকার বা সওয়াব রয়েছে? তিনি বললেন, কোরবানির পশুর প্রতিটি পশমের পরিবর্তে একটি করে নেকি রয়েছে। সাহাবায়ে কেরাম আবার জানতে চাইলেন, হে আল্লাহর রাসুল! ভেড়া, দুম্বার পশমের ব্যাপারে কী কথা? তিনি বললেন, এর প্রতিটি পশমের বিনিময়েও একটি করে নেকি পাওয়া যাবে’ (ইবনে মাজাহ, মিশকাত শরিফ)।


হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মানুষের আমলগুলো থেকে কোনো আমলই আল্লাহর কাছে কোরবানির দিন কোরবানি থেকে অধিক পছন্দনীয় নয়। অবশ্যই কিয়ামতের দিন কোরবানির প্রাণী শিং, লোম ও ক্ষুর নিয়ে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হবে। যে কোরবানি শুধু আল্লাহর জন্য করা হয়, নিশ্চয়ই সেই কোরবানির রক্ত জমিনে পড়ার আগেই আল্লাহর দরবারে তা কবুল হয়ে যায়। অতএব, তোমরা ভক্তি ও আন্তরিকতার সঙ্গে কোরবানি কর’ (তিরমিযি)।


হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) হজরত ফাতেমা (রা.) কে বললেন, ফাতেমা! এসো তোমার কোরবানির পশুর কাছে দাঁড়িয়ে থাক। কারণ কোরবানির পশুর রক্তটা মাটিতে পড়বে, তার বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা তোমার পূর্বের গুনাহগুলো মাফ করে দেবেন। ফাতেমা (রা.) বলেন, এ সুসংবাদ কি আহলে বায়আতের (নবী পরিবারের) জন্য নির্দিষ্ট, না সকল উম্মতের জন্য? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, আমাদের আহলে বায়আতের জন্যও এবং সকল উম্মতের জন্যও’ (জামেউল ফাওয়ায়েদ)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় দশ বছর জীবনযাপন করেছেন, সেখানে প্রতি বছরই তিনি কোরবানি করেছেন’ (তিরমিযি)।


আলি (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমাকে তার কোরবানির উটের আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করতে বলেছিলেন। তিনি কোরবানির পশুর গোশত, চামড়া ও আচ্ছাদনের কাপড় সদকা করতে আদেশ করেন এবং এর কোনো অংশ কসাইকে দিতে নিষেধ করেন। তিনি বলেছেন, আমরা তাকে (তার পারিশ্রমিক) নিজের পক্ষ থেকে দেব। কোরবানি হলো ত্যাগ ও বিসর্জনের উজ্জ্বল উদাহরণ। এই ইবাদতের মাধ্যমে প্রকৃত মুমিন পরিচয়ে উত্তীর্ণ হওয়া যায়।


(ঢাকাটাইমস/২৪সেপ্টেম্বর/জেবি)