কোরবানির আহকাম
ইসলাম ডেস্ক
২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ১৫:৫৫:০৪

ঢাকা: কোরবানি প্রত্যেক সামর্থ্যবান স্বাধীন মুসলমানের ওপর ওয়াজিব। বর্তমান বাজারদরে মৌলিক প্রয়োজন ছাড়া ঈদের দিন কারো কাছে ৪৫ হাজার টাকা থাকলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব। এছাড়া কেউ কোরবানি দিলে তা নফল বলে গণ্য হবে। একা হোক বা শরিক সবারই উদ্দেশ্য থাকতে হবে সওয়াব। গোশত খাওয়া, কোরবানি না দিলে সমাজের লোকেরা কী বলবে, বড় কোরবানি করলে নাম হবে ইত্যাদি নিয়ত কারো মধ্যে থাকলে কোরবানি হবে না।
ছাগল, ভেড়া-দুম্বা, গরু-মহিষ, উট এসব প্রাণী কোরবানি করা যায়। ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা এগুলোতে কোনো ভাগ চলে না। তবে গরু, মহিষ, উট এসব প্রাণীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাত ভাগ পর্যন্ত করা যাবে। গরু-মহিষ সর্বনিম্ন দু’বছর বয়সের হতে হবে। উট পাঁচ বছর, ছাগল ও ভেড়া কমপক্ষে এক বছর এবং দুম্বা কমপক্ষে ছয় মাস বয়সের হতে হবে। ১০ জিলহজ সুবেহ সাদিক থেকে ১২ তারিখ আসর পর্যন্ত রাত-দিন যে কোনো সময় কোরবানি করা জায়েজ আছে। তবে প্রথম দিন অর্থাৎ ১০ জিলহজ ঈদুল আজহার দিন কোরবানি করা উত্তম। নিজের কোরবানির পশু নিজে জবাই করাই ভালো। একাধিক শরিকের ক্ষেত্রে কোরবানির পশুর মাংস দাঁড়িপাল্লা দিয়ে মেপে বণ্টন করতে হবে, অনুমান করে বণ্টন করলে চলবে না।
মাংস প্রস্তুতকারীকে কাজের বিনিময়ে মাংস দেয়া জায়েজ নেই। তাকে তার উপযুক্ত পারিশ্রমিক দিতে হবে। অবশ্য পারিশ্রমিক দেয়ার পর হাদিয়া হিসেবে তাকে মাংস দেয়াতে কোনো সমস্যা নেই। কোরবানির পশুর চামড়া শুকিয়ে নিজে ব্যবহার করা জায়েজ আছে। তবে বিক্রি করলে টাকা অবশ্যই গরিবদের দান করে দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে দীনি ইলম শিক্ষারত এতিম গরিব তালিবুল ইলমদের দান করলে সদকায়ে জারিয়ার সওয়াবও পাওয়া যাবে।
বস্তুত কোরবানি একটি নিছক অনুষ্ঠানের নাম নয়, এটি একটি পবিত্র এবাদত। কোরবানি আমাদের সব ধরনের লোভ-লালসা, পার্থিব স্বার্থপরতা ও ইন্দ্রিয় কামনা-বাসনার জৈবিক আবিলতা থেকে মুক্ত ও পবিত্র হতে উদ্বুদ্ধ করে। স্রষ্টার সামনে নিজেকে আত্মোৎসর্গিত করার প্রেরণা জোগায় কোরবানি। নিছক পশু জবাইয়েই কোরবানির সার্থকতা নয়, নিজেকে স্রষ্টার সামনে নিঃশর্ত পেশ করে দেয়াই হলো এই এবাদতের সার্থকতা। এ জন্য সবার উচিত পরিশুদ্ধ অন্তরে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশে কোরবানি করা।
(ঢাকাটাইমস/২০সেপ্টেম্বর/জেবি)