ব্যবসায়ীকে হয়রানি, সিএমপির চার পুলিশ বরখাস্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
২১ নভেম্বর, ২০১৫ ২২:১১:২৪

ঢাকা: চট্রগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরিং থানার মনসুরাবাদ এলাকায় নিরীহ এক ব্যবসায়ীকে ইয়াবা দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে পাঠানোর দায়ে অভিযুক্ত চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সিএমপি কমিশনার।
শনিবার তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সিএমপি কমিশনার আবদুল জলিল মন্ডল এ আদেশ দেন।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন, ডবলমুরিং থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) মো. আলমগীর হোসেন, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. হারুন অর রশিদ, কনস্টেবল ছালেহ উদ্দিন ও কনস্টেবল সুজিত দে।
সিএমপি সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং থানাধীন মুনসুরাবাদ ওয়াপদা কলোনীর পেছনের রাজা মিয়ার বাড়ি এলাকার বাসিন্দা নুরুল আলম চৌধুরী গত ৭ অক্টোবর রাতে ঘর থেকে বের হন মেয়ের জন্য ওষুধ কিনতে। এসময় পথে হঠাৎ একটি মাইক্রোবাস এসে থামে তার সামনে দাঁড়ায়। কিছু বুঝে উঠার আগেই জোরপূর্বক তাকে তোলে নেয়া হয় ওই মাইক্রোবাসটিতে। এরপর মাইক্রোবাসে থাকা পাঁচজন নিজেদের পুলিশ সদস্য পরিচয় দিয়ে নুরুল আলমের কাছে এক লাখ টাকা দাবি করে। নুরুল আলম টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে ৫০ পিস ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে গ্রেপ্তার করে ওই পুলিশ সদস্যরা। তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দেয়ার জন্য জাহাঙ্গীর আলম ও মো. আমির উদ্দিন নামে এলাকার দুই ব্যক্তিকে ভয় দেখিয়ে স্বাক্ষরও নেয় পুলিশ। এরপর ইয়াবা বিক্রেতা হিসেবে মামলা রুজু করে নুরুল আলমকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের নির্দেশে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
এভাবে নিরীহ লোককে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে গ্রেপ্তার ও মামলা দেয়ার প্রতিবাদে ওই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠে এলাকার লোকজন। তারা ওই পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিচার চেয়ে গণস্বাক্ষর করে এক কপি ডবলমুরিং সংসদীয় আসনের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী ডা. আফসারুল আমিনকে দেন। আরেক কপি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মো. আবদুল জলিল মন্ডলকে দেন এলাকাবাসী।
জানতে চাইলে সিএমপির উপ কমিশনার (পশ্চিম) সঞ্জয় কুমার কুন্ড বলেন, ‘গত ৭ অক্টোবর রাত নয়টার দিকে মেয়ের জন্য ফার্মেসিতে ওষুধ কিনতে গিয়ে পুলিশের হাতে ইয়াবাসহ আটক হয়েছিলেন ব্যবসায়ী নুরুল আলম চৌধুরী । তবে তিনি বিষয়টিকে সাজানো উল্লেখ করে পুলিশের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে একটি আবেদন করেন। পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে সেই অভিযোগের তদন্ত করে আমি গত ৩০ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলাম। আজ কমিশনার স্যার অভিযুক্ত চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। উপ-পরিদর্শক (এস আই) আতাউল হককে অব্যাহতি দিয়েছেন।
(ঢাকাটাইমস/২১নভেম্বর/এএ/জেবি)