গুজবে কান দেয়া নাজায়েজ
ইসলাম ডেস্ক
০৬ ডিসেম্বর, ২০১৫ ১৭:১৪:২০

ঢাকা: পবিত্র কোরআনের একটি সুরা হুজুরাতে ইসলামের সামাজিক দিকগুলোর বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সেই সুরায় আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ! যদি কোনো পাপাচারী তোমাদের কাছে কোনো বার্তা নিয়ে আসে, তোমরা তা যাচাই করে দেখবে। পরীক্ষা করে না দেখলে হতে পারে অজ্ঞতাবশত কোনো সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত করে বসবে এবং পরে তোমাদের কৃতকর্মের জন্য তোমাদেরকে অনুতপ্ত হতে হবে।’ এর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের শিক্ষা দিয়েছেন, একটি কথা শুনলেই তা বিশ্বাস করে কাজ করবে না। বরং প্রাপ্ত সংবাদের সত্যতা অবশ্যই যাচাই করে দেখবে। শুধু অনুমানের ভিত্তিতে কোনো মন্তব্য করা কিংবা কোনো কিছু করে বসা তোমাদের জন্য জায়েজ হবে না।
শোনা কথা বলে বেড়ানোকে এক শব্দে বলা হয় ‘গুজব ছড়ানো’। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, আমাদের সমাজে এই বিষয়টির ব্যাপক চর্চা হচ্ছে। মানুষ কারো কথা অন্যের কাছে বলার আগে কোনো চিন্তা-ভাবনাই করে না। বরং ‘উড়ো কথা’ কানে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কপচানো শুরু করে দেয়। বিশেষ করে কারো সঙ্গে মতানৈক্য বা শত্রুতা কিংবা রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলে তো আর কথা-ই নেই। আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি চর্চিত হচ্ছে। একটা লোক যতই খারাপ হোক, তার বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে না-জায়েজ ও হারাম।
কারো ব্যাপারে কোনো কথা শুনে সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে প্রচার করা সমাজে বিশৃঙ্খলা বিস্তারের অন্যতম কারণ। রাসুল (সা.) বলেন, ‘মানুষের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে শোনা কথা বলে বেড়ায়।’ আমাদের বর্তমান সমাজ এ গুনাহটি ব্যাপক প্রচলিত। অধিকাংশ মানুষ অন্যের কাছে বলার সময় কোনো সতর্কতা অবলম্বন করে না। উপরন্তু নিজের পক্ষ থেকে লবণ-মরিচ মাখিয়ে আরো বাড়িয়ে বলার চেষ্টা করে। এরপর দ্বিতীয় ব্যক্তি এটাকে আরো রঙ চড়িয়ে তৃতীয় ব্যক্তির কানে তোলে। এভাবে সামনে চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত তিল তাল হয়ে যায়, যার ফলে শত্রুতা, বিবাদ-লড়াই এমনকি খুনাখুনির ঘটনাও ঘটে।
আমরা যদি পবিত্র কোরআনের এই নির্দেশনাটিকে বাস্তবায়নের জন্য আন্তরিকভাবে উদ্যোগী হই এবং জীবনের প্রতিটি অঙ্গনে এর অনুসরণ করি, তাহলে আমাদের সমাজের নব্বই ভাগ বিবাদ আপনা-আপনি দূর হয়ে যেতে বাধ্য। তাই আসুন, গুজবে কান না দিই, যাচাই-বাছাইয়ের পর সংবাদ বিশ্বাস করি।
(ঢাকাটাইমস/৬ডিসেম্বর/জেবি)