ঢাকা: ভয় ভীতি দেখিয়ে রাজধানীতে এক ব্যবসায়ীর আবাসন প্রতিষ্ঠান দখল করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে ঢাকার পঞ্চম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। প্রতিকার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে লিখিত আবেদনও করেছেন তিনি।
মাকান গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ডিজনী ডিজাইন এন্ড ডেভেলপার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খায়রুল আলম এই মামলা করেছেন। তার অভিযোগ, আওয়ামী লীগ নেতা মুরাদ অস্ত্রের মুখে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করেছেন। এখন মুরাদ তাকে মেরে ফেলারও হুমকি দিচ্ছেন। এ ভয়ে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনও এই আওয়ামী লীগ নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে এখনও বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তবে মুরাদের বিরুদ্ধে এর আগের জোরজবরদস্তির অভিযোগ আছে।
আওয়ামী লীগের নেতার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ এনে ব্যবসায়ী খায়রুল আলম বলেন, ‘তিনি (শাহে আলম মুরাদ তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে কার্যালয়ে হামলা করে অস্ত্রের মুখে আমাদের বের করে দেন। এখন আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানে যেতে পারি না। প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে আসলে তাদের মেরে ফেলা হবে বলেও বার বার হুমকি দেয়া হচ্ছে’।
মামলায় বলা হয়, ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট দুপুরে শাহে আলম মুরাদ তার কিছু কর্মী নিয়ে ডিজনী ডিজাইন কার্যালয়ে যান। তিনি নিজেকে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দাবি করেন। আর সই জাল করে কাগজপত্র তৈরি করে কয়েকজন পরিচালকের পদ বাতিল করে নতুন পরিচালক নিয়োগ দেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো লিখিত আবেদনে খায়রুল আলম বলেন, শাহে আলম মুরাদ অবৈধভাবে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যান বনে গেছেন। অন্যায়ভাবে কোম্পনির পরিচালকদের শেয়ার বাতিল করেছেন। জমা টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অবৈধভাবে কোম্পানির নামও পাল্টে দিয়েছেন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন রাখেন ব্যবসায়ী খায়রুল আলম।
একইভাবে জয়েন স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস বরাবরও অভিযোগ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ডিজনী ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলাপার লিমিটেড (রেজি: নং সি ৭৫৪১০ তাং ১৪.০৩.২০০৯) এর বেশ কিছু শেয়ার একটি চক্র কর্তৃক জাল জালিয়াতির মাধ্যমে তাদের নামে হস্তান্তর করে নিয়েছে। কোন রকম বার্ষিক সাধারণ সভা ছাড়াই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহাজাহান এবং অন্যান্য পরিচালক রোকেয়া জাহান, মনসুর আলম বিউটি, সালমা আক্তার মনিকে বাদ দেয়া হয়েছে। তাদের সমস্ত শেয়ার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আবেদনে বলা হয় শাহে আলম মুরাদ ডিজনী ডিজাইনের কোনও শেয়ারধারী বা পরিচালক ছিলেন না। তিনি জালিয়াতির ও অস্ত্রের মুখে দখল করে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হয়েছেন।
তবে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই আওয়ামী লীগ নেতা মুরাদ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, কিছুদিনের মধ্যে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি দেয়া হবে। যে কারণে একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
তবে এক প্রশ্নের জবাবে এখন ডিজনী অ্যান্ড ডেভেলপার লিমিটেডে নিজের বর্তমান সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছের মুরাদ। বলেন, একটা ভঙ্গুর প্রতিষ্ঠানকে দাঁড় করাতেই তিনি উদ্যোগ নিয়েছেন। এর বেশি কিছু নয়।
(ঢাকাটাইমস/৯ফেব্রুয়ারি/টিএ/ডব্লিউবি)