ওয়াদা রক্ষা মুমিনের গুণ
ইসলাম ডেস্ক
০৫ মার্চ, ২০১৬ ১৯:২৩:৫০

ঢাকা: সমাজ জীবনে পরস্পরের সঙ্গে আদান-প্রদানে অঙ্গীকার ও চুক্তির বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই চলে আসে। কারো সঙ্গে কোনো কিছু অঙ্গীকার করলে বা কোনো বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হলে তা পূরণ করতে হবে। এ ব্যাপারে ইসলামের কড়া নির্দেশ রয়েছে। কোরআনে মুমিনের গুণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছে, ‘যারা নিজেদের আমানত ও ওয়াদা রক্ষা করে চলে।’ এই আয়াত দ্বারা মুমিন জীবনের সফলতার জন্য আমানত ও ওয়াদা রক্ষার গুণকেও অপরিহার্য করে দেয়া হয়েছে। অন্য আয়াতে আছে, ‘ওয়াদা পূরণ কর। কেননা ওয়াদা সম্পর্কে তোমরা পরকালে জিজ্ঞাসিত হবে।’
হাদিসে ওয়াদা রক্ষা করার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এটাকে মুসলমানিত্বের নিদর্শন আখ্যা দেয়া হয়েছে। একজন মুসলমানকে ওয়াদা করার পূর্বে শতবার ভাবা উচিত, ওয়াদাটা পূরণ করা সম্ভব হবে কি-না। ওয়াদা করার সময় তাড়াহুড়া করা উচিত নয়। কারণ ভেবে-চিন্তে প্রয়োজনে পরামর্শ করে আগ-পিছ বিবেচনা করে ওয়াদা করা হলে ওই ওয়াদা পূরণ করা একজন মুসলমানের কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি শিশুদের সঙ্গে ওয়াদা করলেও তা পূরণ করতে হবে। ওয়াদা রক্ষা করতে গিয়ে রাসুল (সা.) এক স্থানে তিন দিন দাঁড়িয়ে থাকার ঘটনাও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) যুদ্ধের ময়দানে শত্রুদের সঙ্গেও বিশ্বাসঘাতকতা করতেন না। শত্রুদের সঙ্গে ওয়াদা ও চুক্তি করলেও তা পূরণ করতেন।
হাদিসে স্পষ্ট বলা হয়েছে, যার অঙ্গীকার ঠিক নেই, তার ঈমানও নেই। মুসলমানের ধর্ম হলো কারো সঙ্গে ওয়াদা ভঙ্গ না করা। যে অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করা যাবে না, সে সম্পর্কে অঙ্গীকার করা উচিত নয়। জেনে-শুনে কেউ তা করলে মুনাফিকের অন্তর্ভুক্ত হবে। কোনো কারণে অঙ্গীকার পূরণে বাদ সাধলে আগে থেকেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জানাতে হবে।
আজকাল আমাদের সমাজে অহরহ ওয়াদা খেলাপির ঘটনা ঘটছে। সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, ইসলামপন্থিরাই এ বিষয়টির প্রতি তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। হেলায়-খেলায় আমরা প্রতিদিন অগণিত ওয়াদা ভঙ্গ করছি। ওয়াদা ভঙ্গ করা মানুষের অধিকার হরণ। কোনো বান্দার অধিকার হরণ করলে তা আল্লাহও ক্ষমা করবেন না। অঙ্গীকার পালনে সবাই সচেষ্ট হলে আমাদের দেশ, জাতি ও সমাজ আরও অনেক সুন্দর হবে। ওয়াদা রক্ষা করেন না বলেই আজ আমাদের জনপ্রতিনিধিরা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ জন্য সবার উচিত ওয়াদা পালনে সচেষ্ট হওয়া।
(ঢাকাটাইমস/০৫মার্চ/জেবি)