মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে পাকিস্তান পুলিশ
ঢাকাটাইমস ডেস্ক
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৩:৪৭:০৫

হিউমান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলছে, পাকিস্তানের পুলিশ বাহিনি পদে পদে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে। তাদের তদারকিতে সরকার চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। এখানে পুলিশ চলছে সনাতনী কায়দায়। তারা আইন-কানুনের কোনো তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। আজ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বৈশ্বিক মানবাধিকার সংস্থাটি এসব তথ্য জানিয়েছে।
তারা আরো বলছে, দশকের পর দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে সরকার পুলিশ বাহিনীর সংস্কারে বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও তা কোনো কাজে আসেনি।
‘‘পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাব্যবস্থার কবর রচিত হয়ে গেছে। তা আবার পুনর্জ্জীবিত করতে হলে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও দায়িত্বশীল পুলিশ বাহিনি গঠন করতে হবে।’’ বলছিলেন এইচআরডব্লিউর এশিয়া-পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস।
তিনি আরো বলেন, ‘‘পাকিস্তান পুলিশ দুর্নীতি, আলস্য আর খামখেয়ালিপনায় পরিপূর্ণ। যার কারণে পাকিস্তানিরা ন্যূনতম কোনো নিরাপত্তার মধ্যেও নেই।’’
নথিপত্র বিশ্লেষণ করে এইচআরডব্লিউ বলছে, পাকিস্তানের পুলিশ নানাভাবে মানুষকে হয়রানি করছে। তারা নির্বিচারে গ্রেপ্তার, নির্যাতন, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে জড়িত। প্রদেশগুলোর পুলিশ রাজনীতিক ও স্থানীয় অভিজাতদের প্রভাবে কারণে অনেক অন্যায় সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়। এজন্যে তারা পেশাদারির পরিচয় দিতে পারছে না এবং জনগণের আকাঙ্খা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে।
এই প্রতিবেদন করতে এইচআরডব্লিউ পুলিশের বিভিন্ন পদের অন্তত ৩০ জন কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার নিয়েছে। পুলিশের নির্যাতনের শিকার এমন ব্যক্তি, পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী মিলিয়ে অন্তত ৫০ জনের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। এইচআরডব্লিউ আলোচনা করেছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে। এই প্রতিবেদনে পাকিস্তানের চার প্রদেশের মধ্যে তিনটি সিন্ধু, পাঞ্জাব ও বালুচিস্তানের তথ্য বেশি ব্যবহার করা হয়েছে।
এইচআরডব্লিউর পাওয়া তথ্যমতে, পাকিস্তানের এই তিন প্রদেশে সাধারণ মানুষকে বিনা কারণে ধরে এনে পাশবিক কায়দায় নির্যাতন করে পুলিশ। শরনার্থী, দরিদ্র জনগোষ্ঠী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ভূমিহীনরাই এর শিকার। নির্দোষ ব্যক্তিদের হেফাজতে এনে পুলিশ লাঠি ও চাবুক দিয়ে মারধর করে। রড দিয়ে পায়ে আঘাত করে। যার কারণে অনেকেই চির জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যায়। বন্দীদের যৌন হয়রানি করা, নির্ঘুম রাখাসহ নানাভাবে শারিরীক ও মানসিক অত্যাচার করে পুলিশ।
অবশ্য পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের দাবি, যথাযথ প্রশিক্ষণ না থাকায় তথ্য আদায়ে সনাতনী নির্যাতনের কৌশল নেয় অনেকে। তবে পাকিস্তানের অনেক পুলিশ কর্মকর্তাও প্রকাশ্যেই বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের নির্দেশ দেন।
ব্র্যাড অ্যাডামস বলছেন, ‘‘পাকিস্তানের বাস্তবতা হচ্ছে, এখানে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনি আইনের শাসন মানছে না। এই জন্যে পুলিশ পরিচালনায় বর্তমান প্রক্রিয়া পরিবর্তন আনতে সরকারকে ইতিবাচক কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। অবশ্যই পুলিশের মধ্যে ক্ষমতাশালদের অন্যায় প্রভাবে ঠেকাতে হবে।’’
(ঢাকাটাইমস/২৬সেপ্টেম্বর/এমএইচ)