ঈদুল আযহার সংক্ষিপ্ত কিছু আদব ও আহকাম :
১. তাকবীর : আরাফার দিনের ফজর থেকে শুরু করে তাশরীকের দিনের শেষ পর্যন্ত, তথা জিলহজ মাসের তের তারিখের আসর পর্যন্ত তাকবীর বলা। আল্লাহ তাআলা বলেন :
﴿ وَاذْكُرُواْ اللّهَ فِي أَيَّامٍ مَّعْدُودَاتٍ ﴾ [البقرة:২০৩]
আর তোমরা আল্লাহকে স্মরণ কর নির্দিষ্ট দিনসমূহে। (বাকারা : ২০৩)
তাকবীর বলার পদ্ধতি :
" الله أكبر، الله أكبر، لا إله إلا الله والله أكبر، الله أكبر ولله الحمد "
আল্লাহর যিকির বুলন্দ ও সর্বত্র ব্যাপক করার নিয়েতে পুরুষদের জন্য মসজিদে, বাজারে, বাড়িতে ও সালাতের পশ্চাতে উচ্চ স্বরে তাকবীর পাঠ করা সুন্নত।
২. কুরবানী করা : ঈদের দিন ঈদের সালাতের পর কুরবানী করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
{ من ذبح قبل أن يصلي فليعد مكانها أخرى، ومن لم يذبح فليذبح } [رواه البخاري ومسلم].
৩.যে ব্যক্তি ঈদের আগে যবেহ করল, তার উচিত তার জায়গায় আরেকটি কুরবানী করা। আর যে এখনো কুরবানী করেনি, তার উচিত এখন কুরবানী করা। (বুখারী ও মুসলিম) কুরবানী করার সময় চার দিন। অর্থাৎ নহরের দিন এবং তার পরবর্তী তাশরীকের তিন দিন।
যেহেতু রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
{ كل أيام التشريق ذبح } [انظر السلسلة الصحيحة برقم ২৪৬৭].
তাশরীকের দিন কুরবানীর দিন। (সহীহ হাদীস সমগ্র : ২৪৬৭)
৪.পুরুষদের জন্য গোসল করা ও সুগন্ধি মাখা : সুন্দর কাপড় পরিধান করা, ঢাকনার নিচে কাপড় পরিধান না করা, কাপড়ের ক্ষেত্রে অপচয় না করা। দাঁড়ি না মু-ানো, এটা হারাম। নারীদের জন্য ঈদগাহে যাওয়া বৈধ, তবে আতর ও সৌন্দর্য প্রদর্শন পরিহার করে। মুসলিম নারীদের জন্য কখনো শোভা পায় না যে, সে আল্লাহর ইবাদাতের জন্য তাঁরই গুনাতে লিপ্ত হয়ে ধর্মীয় কোন ইবাদাতে অংশ গ্রহণ করবে। যেমন সৌন্দর্য প্রদর্শন, সুসগন্ধি ব্যবহার ইত্যাদি করে ঈদগাহে উপস্থিত হওয়া।
৫.কুরবানীর গোস্ত ভক্ষণ করা: ঈদুল আজহার দিন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খানা খেতেন না, যতক্ষণ না তিনি ঈদগাহ থেকে ফিরে আসতেন, অতঃপর তিনি কুরবানী গোস্ত থেকে ভক্ষণ করতেন।
৬.সম্ভব হলে ঈদগাহে হেঁটে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া : ঈদগাহতেই সালাত আদায় করা সুন্নত। তবে বৃষ্টি বা অন্য কোন কারণে মসজিদে পড়া বৈধ, যেহেতু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা পড়েছেন।
৭.মুসলমানদের সাথে সালাত আদায় করা এবং খুতবায় অংশ গ্রহণ করা : উলামায়ে কেরামদের প্রসিদ্ধ ও বিশুদ্ধ মত হচ্ছে, ঈদের সালাত ওয়াযিব। এটাই ইবনে তাইমিয়া বলেছেন, যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন :
﴿ فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ ﴾ [الكوثر:২].
অতএব তোমরা রবের উদ্দেশ্যেই সালাত পড় এবং নহর কর। (কাউসার : ২)
উপযুক্ত কোন কারণ ছাড়া ঈদের সালাতের ওয়াজিব রহিত হবে না। মুসলমানদের সাথে নারীরাও ঈদের সালাতে হাজির হবে। এমনকি ঋতুবতী নারী ও যুবতী মেয়েরা। তবে ঋতুবতী নারীরা ঈদগাহ থেকে দূরে অবস্থান করবে।
৮.রাস্তা পরিবর্তন করা : এক রাস্তা দিয়ে ঈদগাহে যাওয়া ও অপর রাস্তা দিয়ে ঈদগাহ থেকে বাড়ি ফেরা মুস্তাহাব। যেহেতু তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লাম করেছেন।
ঈদের সুভেচ্ছা জানানো : ঈদের দিন একে অপরকে শুভেচ্ছা বিনিময় করা : যেমন বলা :
تقبل الله منا ومنكم. أو تقبل الله منا ومنكم صالح الأعمال.
অর্থ : আল্লাহ আমাদের থেকে ও তোমাদের থেকে নেকআমলসমূহ কবুল করুন। বা এ ধরণের অন্য কিছু বলা।
(ঢাকাটাইমস/১৩অক্টোবর/ইসলাম/এসএ/ঘ)