logo ০৫ মে ২০২৫
শেষমেশ ভোটের রাজনীতিকে সাংসদ রনির না
হাবিবুল্লাহ ফাহাদ, ঢাকাটাইমস
০৩ ডিসেম্বর, ২০১৩ ০১:১৩:৩২
image


ঢাকা: সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনায় কারাভোগের পর বের হয়ে সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি ঘোষণা দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ থেকে এবার আর মনোনয়ন চাইবেন না তিনি। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়বেন, এমনটাই জানিয়েছিলেন। কিন্তু শেষমেশ ভোটের রাজনীতিকে ‘না’ বলে দিলেন আলোচিত এই তরুণ সাংসদ। সোমবার সময় শেষ হলেও কোনো মনোনয়নপত্র জমা দেননি তিনি। তাই এবার আর নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বীর বেশে দেখা যাবে না তাকে।   

হঠাৎ করেই ভোটের রাজনীতিতে আসেন সাংসদ গোলাম মাওলা রনি। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুরের সদরপুর-চরভদ্রাসন আসন থেকে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য সীমিতাকারে দৌড়ঝাঁপ করছিলেন তিনি। কিন্তু মনোনয়ন পান পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা-গলাচিপা) আসন থেকে। ওই আসন থেকে সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হন রনি। তার পর থেকেই শুরু। টেলিভিশন টকশোতে বিভিন্ন ইস্যুতে সরকার ও দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সমালোচনা করে আলোচনা উঠে আসেন তিনি। বিশেষ করে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির হোতাদের নিয়ে সংসদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে অনেকের নজর কাড়েন পটুয়াখালীর সাংসদ। এজন্য নিজের শুভাকাক্সিক্ষসহ আশপাশের অনেকের বাহবা পেলেও এসব বিষয় ভালভাবে নেননি আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের অনেকে। দলের মধ্যেই সমালোচনার মুখে পড়েন সাংসদ রনি। কিন্তু এসবে কর্ণপাত করেননি তিনি। নিয়মিত লেখালেখিতেও ঠোঁটকাটা স্বাভাবের পরিচয় দেন তরুণ এ সাংসদ।

সর্বশেষ সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনায় কারাগারেও যেতে হয় তাকে। এবার অন্যরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হন গোলাম মাওলা রনি। যারা একসময় তাকে বহবা দিতেন তাদের কাউকেই পাশে পেলেন না দুঃসময়ে। বরং দলের মধ্যে যারা এতদিন তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতেন না তারও সাংসদ রনির সমালোচনায় মুখর হন। আওয়ামী লীগের বদৌলতে সাংসদ হয়ে সেই দলের নেতাদের সমালোচনা করার কারণে অনেকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন তার প্রতি। বলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে রনি যেমন প্রমাণ দেন কেমন জনপ্রিয় তিনি। রনি তখন কারাগারে বসে হিসাব কষেণ কারাবন্ধু-কারাশত্রু।  

কারাগার থেকে বের হয়ে ‘অভিমানী’ সাংসদ গোলাম মাওলা রনি ঘোষণা দেন আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন চাইবেন না তিনি। তবে দলের নেতাদের ছুঁড়ে দেয়া চ্যালেঞ্জকে তিনি যেন আলিঙ্গণ করেছিলেন। বলেছিলেন নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়াবেন না। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে প্রমাণ দেবেন আসলে কতটা জনপ্রিয় তিনি। কিন্তু শেষমেশ নীরবেই সেই চ্যালেঞ্জ থেকে সরে এলেন সাংসদ রনি। সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন গেলেও কোনো মনোনয়নপত্র জমা পড়েনি তার নামে।

গতবার রনিকে পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে মনোনয়ন দেয়ায় বাদ পড়েছিলেন সাবেক সাংসদ ও প্রতিমন্ত্রী আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসেন। কিন্তু নিজের ভুল স্বীকার করে আবারও নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি। এবার দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নিজ সংসদীয় আসনে নৌকা মার্কার প্রার্থী হয়েছেন আ খ ম জাহাঙ্গীর। দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বাচনী প্রস্তুতি।

জানতে চাইলে গোলাম মাওলা রনি ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ‘এবার আমি কোনো মনোনয়নপত্র জমা দেয়নি। নির্বাচন করবো না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

(ঢাকাটাইমস/ ৩ ডিসেম্বর/ এইচএফ/ ১.০১ঘ.)