ঢাকা: হানাহানি- মারামারির এই সময়ে এসেও কিছু ঘটনা মানুষের বিবেককে নাড়া দিয়ে যায়। ভাইয়ের হাতে ভাই খুন এমন শিরোনামের সংবাদ দেখতে দেখতে পাঠক যখন হাঁপসে গেছে, তখন ভাইয়ের প্রাণ রক্ষায় অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিলেন চীনা কিশোর হ্যাংটাও। ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসার অভাবনীয় নির্দশন রেখে চলে গেলেন পরপারে।
বড়ভাই হ্যাংহুই ২০১০ সালে দূরারোগ্য কিডনী রোগে আক্রান্ত হন। চিকিৎসকেরা তার কিডনি প্রতিস্থাপন প্রয়োজন বলে জানান। মধ্যবিত্ত বাবা চ্যানয়ানয়ু এবং তার স্ত্রী জ্যাং টিনজিয়ার মাথায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। বড় সন্তানের জীবন রক্ষায় মরিয়া হয়ে উঠে চ্যানয়ানয়ু দম্পত্তি। মূল্যবান জিনিস-পত্র থেকে বাড়ির আসবাববপত্র পর্যন্ত বিক্রি শুরু করে। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। তবুও একই ধরনের কিডনি মেলাতে ব্যর্থ হয় অসহায় বাবা-মা।
পরিবারের এই দুঃসহ মুহূর্তে চুপ করে থাকতে পারেনি হ্যাংটাও। কারন হ্যাংহুই ও হ্যাংটাও দুই ভাই। সুতরাং অবশ্যই তাদের কিডনি ম্যাচিং করবে।
বাড়ির এক কক্ষে নিজেকে দরজাবন্দি করে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেন ১৮ বছরের হ্যাংটাও। উদ্দেশ্যে একটাই ভাইয়ের জন্যে কিডনির যোগান।
মৃত্যুকালে শুধু প্রিয় বড়ভাই হ্যাংহুইয়ের জন্যে ছোট্ট একটি চিঠি লিখে যান। তাতে লেখা ছিলো- ‘ভাই যখন তুমি সুস্থ হবে, তখন আমাকে জানাবে। এটি আমার জন্যে যথেষ্ঠ।’
২০১০ সালের আগে পর্যন্ত দুই সন্তানকে নিয়ে সুখের সংসার ছিলো চ্যানয়ানয়ু এবং জ্যাং টিনজিয়ার দম্পত্তির। কিন্তু হ্যাংহুইয়ের (২০) অসুস্থতার খবরে যেনো মুহূর্তে লন্ডভ- হয়ে যায় সবকিছু। দুই সহোদরই ছিলেন ক্লাসের সেরা শিক্ষার্থী। সহপাঠী, স্কুল শিক্ষক এবং বাবা-মায়ের প্রত্যাশা ছিলো দুই ভাই একদিন অনেক বড় হবে।
হ্যাংটাওয়ের মৃত্যুতে বেঁচে যায় তার ভাই হ্যাংহুই। হ্যাংহুইয়ের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। চিকিৎসকেরা হ্যাংহুইয়ের বাবা কে জানান, তার ছেলে এখন সুস্থ।
কিন্তু বাবা চ্যানয়ানয়ু এই মুহূর্তটিকে মিশ্র অভিজ্ঞাতাময় বলে জানিয়েছেন।
(ঢাকাটাইমস/২৫জানুয়ারি/জেএস)