বরিশাল: কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ থেকে কোনো কর্মসূচি ঘোষণা হলে তা বাস্তবায়ন ছাড়া কোনো কাজ নেই। নেই নিজেদের কোনো কর্মসূচি। এতে সাংগঠনিকভাবে প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। জেলা বা মহানগরীতে কোথাও কোনো পদ না থাকায় পরিচয় সংকটে পড়েছেন ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতারা। হতাশ তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও। এ চিত্র বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া এই দুই শাখায় আর কোনো পদ এখনও বণ্টন হয়নি। অথচ জেলা ও মহানগরের সম্মেলন হয়েছে ২০১২ সালের ডিসেম্বরের একই দিনে। এতে জেলা শাখায় সভাপতি হন সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এবং সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস। মহানগর শাখার সভাপতি হন সাবেক মেয়র ও প্রয়াত সাংসদ শওকত হোসেন হিরন ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুল করিম।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘বরিশালের রাজনীতি একটি পরিবারের কাছে জিম্মি। সেটি হচ্ছে হাসানাত পরিবার। এই পরিবারের বিপরীতে যাদের অবস্থান, তারা বরাবরই কোণঠাসা। হাসানাত পক্ষের দাপটের মুখে কথা বলতে ভয় পান জেলার প্রথম সারির অনেক নেতা। মূলত তাদের কারণেই বরিশালে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে দুর্বল।’
সম্মেলনের প্রায় আড়াই বছরেও কেন পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা যায়নিÑ জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ তালুকদার মো. ইউনূস বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন একটার পর একটা সমস্যা আছেই। যে কারণে এতদিন কমিটি করা যায়নি। তবে শিগগিরই কমিটি করা হবে।’ কমিটি না থাকায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশার বিষয়টি উড়িয়ে না দিয়ে এই নেতা বলেন, ‘অনেকের নেতৃত্বে আসার ইচ্ছা থাকে। তাদের মধ্যে হয়ত কিছুটা হতাশা।’
গত ৯ এপ্রিল ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থান মারা যান বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত হোসেন হিরন। তাঁর অবর্তমানে একা হয়ে পড়েছেন মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক আফজালুল করিম। মহানগরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হিরন ভাই বেঁচে থাকতেই কমিটির নাম প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করে গেছেন। কিন্তু বিভিন্ন সমস্যার কারণে নেত্রীর (শেখ হাসিনা) কাছে এগুলো পেশ করা সম্ভব হয়নি। এখন হিরন ভাইয়ের অবর্তমানে আমি কমিটির তালিকা নেত্রীর কাছে দেব। তিনি এ কমিটির ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত দেবেন তাই বাস্তবায়ন হবে।’
স্থানীয় যুবলীগের সাবেক একজন শীর্ষ নেতা মনে করেন, হাসানাত-হিরন দ্বন্দ্বে বরিশাল আওয়ামী লীগে বিভক্তি দেখা দিয়েছিল। যে কারণে নতুন কমিটি এখনও আলোর মুখ দেখেনি। এতে সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কর্মতৎপরতা কমে গেছে। নতুন নেতৃত্ব আসার পথও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ আছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ, হাসানাত আব্দুল্লাহর বাড়ি আগৈলঝাড়া উপজেলায়। অথচ তিনি সব সময়ই বরিশাল সদরের রাজনীতির ওপর প্রভাব খাটাতে চান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, ‘হাসানাতপন্থী নেতা-কর্মীরা বিভিন্নভাবে আওয়ামী লীগকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। নানা মহলে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ অনৈতিক প্রভাব খাটানোর বিস্তর অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে। এই সুযোগে বরিশাল সদরে শক্ত ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে বিএনপি।’
জেলার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে হাসানাত আব্দুল্লাহর প্রভাবের বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুল করিম বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগ ১০টি উপজেলা নিয়ে। আর মহানগর আওয়ামী লীগ ৩০টি ওয়ার্ড নিয়ে কাজ করে। হিরন ভাই বেঁচে থাকতে আমরা নিজেদের সক্ষমতা নিয়ে চলেছি। এখনও এর ব্যত্যয় ঘটবে না।’
জেলার সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, ‘হিরন ভাইয়ের মৃত্যুর পর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদটি খালি হয়েছে। মহানগর কমিটি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা চাই ভালো একটি কমিটি হোক। এ ব্যাপারে নেত্রীর (শেখ হাসিনা) চিন্তা-ভাবনা আছে। তিনি হয়ত শিগগির এ নিয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।’
দলীয় সূত্র জানায়, বরিশাল সদরে অতীতে আওয়ামী লীগের অবস্থান খুব বেশি শক্তিশালী ছিল না। কিন্তু শওকত হোসেন হিরনের নব্বইয়ের দশকে জাতীয় পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান এবং পরে তাঁর দক্ষ ও বিচক্ষণ নেতৃত্বের মাধ্যমে ধীরে ধীরে এখানে আওয়ামী লীগের অবস্থান শক্তিশালী হতে শুরু করে। ২০০৮ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনে হিরন জয়ী হয়ে এর প্রমাণ দিয়েছিলেন। সর্বশেষ ২০১৩ সালের মেয়র নির্বাচনেও শক্তিশালী অবস্থানে ছিলেন তিনি। কিন্তু আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর অনুসারী-অনুগামীদের অপ্রকাশ্য বিরোধিতায় হারতে হয়েছে তাকে। ভোটের পর এ নিয়ে প্রকাশ্যে অভিযোগ তোলেন হিরন।
সূূত্র আরও জানায়, ২০০৮ সালে মেয়র নির্বাচিত হলে হাসানাতের অনেক অনুসারী হিরনের কাছে ভিড় করলে উভয়ের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। এক সময় হাসানাত ও হিরনপন্থীরা আলাদা কর্মসূচি পালন করেছে। দেখা গেছে, জাতীয় শোক দিবসেও জেলা আওয়ামী লীগের সভার কয়েক গজ দূরে মাইক লাগিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ সভা করেছে। এসব নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। সর্বশেষ মেয়র নির্বাচনে পরাজয়ের কারণ হিসেবে হিরন ও কেন্দ্রের বেশ কয়েকজন নেতা হাসানাত আব্দুল্লাহকে দোষারোপ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। যদিও শেষমেশ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ হয়েছিলেন শওকত হোসেন হিরন।
এসব নিয়ে কথা বলার জন্য সাংসদ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
একই অবস্থা সহযোগী সংগঠনগুলোর
শুধু জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগই নয়, এর বাইরে ছাত্রলীগ, যুবলীগের মতো সহযোগী সংগঠনগুলোর অবস্থাও নাজুক। এ সংগঠনগুলোর সাংগঠনিক তৎপরতাও উল্লেখ করার মতো নয়। সবই চলছে ঢিমেতালে। যে কারণে নতুন নেতৃত্বের সংকট দিন দিন বাড়ছে। অন্যদিকে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা ও অসন্তোষ বাড়ছে।
সূত্র জানায়, জেলা যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয় ১৯৯৩ সালে এবং মহানগর শাখার আহ্বায়ক কমিটি হয় প্রায় ৯ বছর আগে। জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের সম্মেলন হয় ২০১১ সালে।
জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য মাহমুদুল হক খান মামুন বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখের বিষয়। মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছিল ৩ মাসের জন্য। কিন্তু এখন ৯ বছর হতে চলছে। এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটির কোনো খবর নেই। বর্তমান যুবলীগ সভাপতির বয়স ৭৩ বছর। এত বয়সী একজন মানুষ কীভাবে যুবলীগকে সক্রিয় করবেন এটা কারো চিন্তায় আসে না। এ রকম ঘটনার দ্বিতীয়টি বাংলাদেশের কোথাও আছে কি না আমার জানা নেই।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোকে সক্রিয় করতে হলে অবশ্যই নতুন কমিটির বিকল্প নেই।’
হিরনের মৃত্যুতে বরিশাল আওয়ামী লীগে নতুন মেরুকরণের চিন্তা
হিরনের মৃত্যুর পর ভেতরে ভেতরে বরিশাল আওয়ামী লীগে নতুন মেরুকরণের চিন্তা-ভাবনা চলছে। সামনে বরিশাল-৫ (সদর) আসনে উপনির্বাচন। হিরন দুর্গের নেতা-কর্মীরা চাইছেন প্রয়াত নেতার দেখানো পথে হাঁটতে। এজন্য হিরনের স্ত্রী জেবুন্নেসা হিরনকে সামনে নিয়ে আসার চিন্তা-ভাবনা চলছে। তাছাড়া হিরনের স্ত্রী হিসেবে বরিশালে তাঁর গ্রহণযোগ্যতাও খাটো করে দেখছেন না অনেকে। আর জেবুন্নেসা ইতিপূর্বে মেয়র ও জাতীয় নির্বাচনে মাঠে সক্রিয় ছিলেন। সমাজসেবক হিসেবেও এরই মধ্যে বিভিন্ন মহলে প্রশংসাও কুড়িয়েছেন তিনি। তাই সামনের উপনির্বাচন এর জন্য টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ।
জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুল করিম বলেন, ‘জেবুন্নেসা হিরন স্বামীর অবর্তমানে মনোনয়নের দাবিদার হতেই পারেন। আর রাজনীতিতে তিনি নতুন নন। জাতীয় ও সিটি নির্বাচনসহ বেশ কয়েকটি নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। এ অবস্থায় তাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলে আমার কোনো আপত্তি নেই। কেবল তিনিই নন, দল যাকে মনোনয়ন দেবে আমি তার পক্ষেই মাঠে কাজ করব।’
তবে হিরনের স্ত্রী জেবুন্নেসা হিরন মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা আমার অভিভাবক। তিনি যাকে ভালো মনে করবেন তাঁকে মনোনয়ন দেবেন। এ নিয়ে আমার চাওয়ার কিছু নেই।’
বসে নেই হাসানাতের অনুসারী-অনুগামীরা। তারা চাইছেন দীর্ঘদিন ধরে হারানো একক আধিপত্য ফিরে পেতে। উপনির্বাচনকে ঘিরেই নতুন এই মেরুকরণের বীজ বপনের চিন্তা চলছে। এই পক্ষের সমর্থকরা হাসানাত আব্দুল্লাহর ছেলে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে সামনে নিয়ে আসতে চাইছেন। উপনির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ যখন নিশ্চিত নয়, তখন ৫ জানুয়ারির মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার সুযোগটি নিতে চাইছেন হাসানাতের অনুসারীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা আওয়ামী লীগের একজন সদস্য বলেন, ‘সাদিক আব্দুল্লাহ বয়সে তরুণ। তাছাড়া আবদুর রব সেরনিয়াবাতের নাতি হিসাবে পারিবারিকভাবেও তিনি এগিয়ে। তাই সাংসদ হতে পারলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তার অভিষেক মন্দ হবে না।’
তবে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা মনে করেন, সাদিক আব্দুল্লাহ এখনও বরিশাল আওয়ামী লীগে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো উপযুক্ত হননি। বাবা-দাদা তুখোড় রাজনীতিবিদ হলেই যে তিনিও কম বয়সে অনেক কিছু করে ফেলবেন এটা ভাবা ঠিক হবে না। বরং হিতে বিপরীত হতে পারে।
সাদিক আব্দুল্লাহ ও জেবুন্নেসার পর বরিশাল আওয়ামী লীগের আরও বেশ কয়েকজন নেতা দলের মনোনয়নের প্রত্যাশা করছেন। তারা হলেনÑবরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জাহিদ ফারুক শামিম, মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, দলের কেন্দ্রীয় নেতা অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালক বলরাম পোদ্দার এবং মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর রহমান খান। এদের মধ্যে বরিশাল সদর আসনে নির্বাচনে নেমে একাধিকবার পরাজিত হয়েছেন মাহবুব উদ্দিন আহমেদ। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুন্সিগঞ্জের একটি আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। তাই তার মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা আছে। এছাড়া জাহিদ ফারুক শামিম ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ারের কাছে ৫ হাজারের কিছু বেশি ভোটে হেরেছিলেন। ১৯৭০ সালের পর এর আগে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী সদর আসন থেকে এত ভোট পাননিÑএমন বিবেচনায় তিনিও মনোনয়ন দৌড়ে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জাহিদ ফারুক শামীম বলেন, ‘বরিশাল সদর আসনটি ভবিষ্যতেও যেন আওয়ামী লীগের ঘরে থাকে এই বিষয়টি মাথায় রেখে উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের শূন্য হওয়া সভাপতি পদেও এমন কাউকে দেওয়া উচিত যিনি দলের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে সুফল বয়ে আনতে পারবেন।’ তিনি বলেন, ‘কে যোগ্য, কে অযোগ্য এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। তবে দল যদি আমাকে দায়িত্ব দেয় তবে আমি তা মাথা পেতে নিতে রাজি আছি।’
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, দলের শীর্ষ নেতৃত্বও হিরনের অবর্তমানে বরিশাল আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছেন। কোনো পারিবারিক পরিচয় নয়, দলের জন্য যেটা মঙ্গল তেমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সভানেত্রী কোনো ছাড় দেবেন না বলে তাঁর ঘনিষ্ঠদের কাছে বলেছেন। তবে সিদ্ধান্ত নিজেদের অনুকূলে নেওয়ার জন্য হাসানাত পরিবার কেন্দ্রের বিভিন্ন মহলে তদবির চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।
বরিশালের রাজনীতির একাল-সেকাল
এক সময় বরিশালে আওয়ামী লীগের রাজনীতির কর্ণধার ছিলেন পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট নিহত আবদুর রব সেরনিয়াবাতের ছেলে ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে হাসানাত আব্দুল্লাহ। ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে জয়ের পর তিনি চিফ হুইপ হন। ১৯৯৮ সালে তাঁর হাত ধরে জাতীয় পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেন শওকত হোসেন হিরন। ২০০১ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর ওই রাতেই বরিশাল ছাড়েন আলোচিত-সমালোচিত হাসানাত আব্দুল্লাহ। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তাঁর বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা হয়। এর দুটিতে ৩৩ বছরের কারাদ-াদেশ হয়। নবম সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশ নিতে পারেননি। বরিশাল-১ আসনে সাংসদ নির্বাচিত হন বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর মামলাগুলো প্রত্যাহার হলে হাসানাত আব্দুল্লাহ বরিশালে ফেরেন ২০০৯ সালের ১৩ অক্টোবর। কিন্তু ততদিনে বরিশালে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নতুন নেতা হয়ে উঠেন শওকত হোসেন হিরন।
(ঢাকাটাইমস/৪মে/জেএস)