ঢাকা: সদরঘাট নদীবন্দরের প্রকৌশলী ও জাহাজ জরিপকার মির্জা সাইফুর রহমানকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, ওএসডি কর্মকর্তা প্রকৌশলী মঈনুদ্দিন জুলফিকাকে তার জায়গায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপণ জারি করেছে সমুদ্র পরিবহণ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর এম জাকিউর রহমান ভূঁইয়া এতে স্বাক্ষর করেছেন।
সম্প্রতি পদ্মায় ডুবে যাওয়া পিনাক-৬ লঞ্চের সর্বশেষ জরিপকার ছিলেন মির্জা সাইফুর। তার বিরুদ্ধে নৌযান জরিপে ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় মির্জা সাইফুরকে ওএসডি করা হয়।
কাওড়াকান্দি থেকে মাওয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার পর মাঝ পদ্মায় প্রায় তিন শ যাত্রী নিয়ে ডুবে যাওয়া এমএল পিনাক-৬ লঞ্চটির নকশা অনুমোদিত ছিল না। এমনকি ছিল না স্টাবিলিটি বুকলেটও। কিন্তু তারপরও সরেজমিন পরিদর্শন ছাড়াই ডক সনদ ও ভুয়া জরিপ সনদ দেয়া হয়েছিল লঞ্চটিকে। সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নৌ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ডুবে যাওয়া পিনাক-৬ লঞ্চটি সর্বশেষ জরিপ করেছেন মির্জা সাইফুর রহমান। যার বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তার হাত দিয়ে পুরাতন অনেক লঞ্চ সাময়িক মেরামতের পর নতুন হিসেবে সনদ পেয়েছে। এছাড়া সরেজমিনে জরিপ না করেও উৎকোচের বিনিময়ে জরিপ সনদ দেয়ার বহু অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) এনিয়ে চলছে অনুসন্ধান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রকৌশলী ও জাহাজ জরিপকারক মঈনুদ্দিন জুলফিকার গত ২০০৩ সালের ৮ নভেম্বর পিনাক-৬ লঞ্চটির নিবন্ধন দেন। সর্বশেষ গত ১ মে মির্জা সাইফুর দেন জরিপ সনদ। লঞ্চটির গ্রোসটনের সঙ্গে জরিপ সনদের কোনো মিল নেই বলেও জানা গেছে।
সদরঘাট নদীবন্দর সূত্র জানায়, গত ১ মে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার রসুলপুরে মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া এমভি মিরাজ-৪ লঞ্চটির জরিপকারক ছিলেন মির্জা সাইফুর রহমান। ওই দুর্ঘটনায় ৫৬ জন প্রাণহারান। ওই দুর্ঘটনা তদন্তে নৌ বাণিজ্য অধিদপ্তরের প্রকৌশলী ও জাহাজ জরিপকারক এ এফ এম সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে তার নাম রয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/ ১৪ আগস্ট/ এইচএফ/ ২০.১৯ঘ.)