ইসলামে সুবিচার ও নিরপেক্ষতা
ইসলাম ডেস্ক
০৭ জুন, ২০১৫ ২১:১৯:৫০

ঢাকা: সুবিচার ও ন্যায্য অধিকার পাওয়ার দাবিদার প্রত্যেকেই। পানি, আলো ও বাতাস প্রভৃতি প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যায় না। তেমনি সুবিচারও প্রত্যেকটি মানুষেরই সমানভাবে প্রাপ্য। এ ব্যাপারে ধনী-গরিব, রাজা-প্রজা এমনকি মুসলিম-অমুসলিমের মধ্যেও কোনো পার্থক্য করা যাবে না। ইসলামের সুস্পষ্ট নীতি হলো বিচার-বিবেচনার ক্ষেত্রে সবার প্রতি সমান থাকতে হবে। একচোখা নীতি ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়। ইসলামে বিচারব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষের সুবিচার করার উপদেশ দেয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা ফায়সালা করবে পূর্ণ সুবিচার ও নিরপেক্ষ ইনসাফের সঙ্গে, আল্লাহ তোমাদের কতই না ভালো কাজের উপদেশ দিচ্ছেন। একজন শাসকের কাছ থেকে সুবিচার পাওয়া সমাজের প্রতিটি মানুষের অধিকার। কোনো কারণে সমাজের কেউ যদি অপরাধ করে, এজন্য তার শাস্তি হতে পারে।
তবে শাস্তির ক্ষেত্রে কারো প্রতি সীমালঙ্ঘন করা যাবে না। অন্যায়ভাবে কারো ওপর শাস্তি প্রয়োগ করা যাবে না। এমনকি ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থের উদ্দেশ্যেও কাউকে বিচারের মুখোমুখি করা যাবে না। ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলী (রা.) যুদ্ধের ময়দানে এক কাফেরের বুকের ওপর চড়ে বসলেন তাকে হত্যা করার জন্য। কিন্তু ওই কাফের তার ওপর থুথু নিক্ষেপ করলো। এতে আলী রা. প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হলেন। কিন্তু ওই কাফেরকে ছেড়ে দিলেন। পরে সে জানতে চাইলো এই সুযোগ পেয়েও তাকে ছেড়ে দেয়ার কারণ কী? আলী রা. বললেন, আল্লাহর নির্দেশ জিহাদে তোমাকে হত্যা করা আমার জন্য বৈধ ছিল। কিন্তু থুথু দেয়ায় তোমার প্রতি আমার ব্যক্তিগত ক্ষুব্ধতা তৈরি হয়েছে। তাই তোমাকে ছেড়ে দিলাম। পরে ওই কাফেরও ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিলো।
একজন প্রকৃত ঈমানদারের প্রতি তার ঈমানের দাবি হলো সব মানুষের প্রতি সুবিচার করা। কারো প্রতি অবিচার করলে এটা হবে জুলুম এবং অন্যায়। আর আল্লাহ এ জাতীয় বিচার পছন্দ করেন না। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই কোনো জাতির বিদ্বেষ যেন তোমাদেরকে তাদের প্রতি অবিচার করতে উদ্বুদ্ধ না করে। তোমরা নির্বিশেষে সবার প্রতি সুবিচার কর, কারণ তাই তাকওয়ার অধিক নিকটবর্তী। জেনে রেখো, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজের খবর রাখেন।’ তাই প্রত্যেক ঈমানদারের উচিত, নিজ নিজ পরিমণ্ডলে সব সময় সুবিচার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা। কোনো অন্যায় কাজে নিজেকে না জড়ানো।
(ঢাকাটাইমস/৭জুন/জেবি)