শিলংয়ের একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় বুকের বাঁ-দিকে যন্ত্রণা অনুভব করেন আবদুল কালাম। সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় শিলংয়ের বেথানি হাসপাতালে। সেখানেই মৃত্যু হয় তার।
‘বাসযোগ্য পৃথিবী’ বিষয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ইন্সটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট শিলংয়ে গিয়েছিলেন উইংস অব ফায়ারের রচয়িতা আবদুল কালাম। অনুষ্ঠানে হঠাৎ পড়ে গেলে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় তাকে দ্রুত পাশের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এপিজে আবদুল কালামের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন বেথানি হাসপাতালের ডাক্তার জন শৈল।ভারতের সরকারি সংবাদ সংস্থা পিটিআইও সাবেক রাষ্ট্রপতির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে।
ভারতের একাদশ রাষ্ট্রপতি ছিলেন ড. কালাম। অকৃতদার এই বিজ্ঞানী একাধিকবার বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবেশী দেশ ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি কালামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বলে তার প্রেস সচিব ইহসানুল করীম জানিয়েছেন।
১৯৩১ সালের ১৫ অক্টোবর তামিলনাড়ুর একটি ছোট শহরে জন্ম নেওয়া এপিজে আব্দুল কালাম ২০০২ সাল থেকে ২০০৭ পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।
ভারত তাকে সম্মানিত করেছে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘ভারতরত্ন’ দিয়ে।
একজন আবুল কালাম আজাদ
তার পুরো নাম আবুল পাকির জয়নুল আবেদিন আবদুল কালাম। তিনি ২০০২ সাল থেকে ২০০৭ সাল মেয়াদে ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং একজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ছিলেন। তিনিই ভারতের প্রথম পারমাণবিক বোমা বহনযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণ করেন।
১৯৯৮ সালে ভারতের প্রথম সফল পারমাণবিক পরীক্ষা পোখরান-২ এর মুখ্য অবদানকারী ছিলেন তিনি। এছাড়া চন্দ্রযান অভিযানে পরামর্শ দিয়েও তিনি অবদান রাখেন।
আবদুল কালামের জন্ম ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ তামিলনাড়ুর উপকূল সংলগ্ন রামেশ্বারামে। তার পিতার নাম জয়নুল আবেদিন ও মাতার নাম আসিআম্মা। তিনি খুব গরীব পরিবারের সন্তান ছিলেন এবং খুব অল্প বয়সেই তাকে জীবিকার প্রয়োজনে বিভিন্ন পেশায় কাজ করতে হয়েছিল। কাজ করার পাশাপাশি তিনি পড়াশোনা করেছেন। স্নাতক পর্যায়ে তার পড়াশুনার বিষয় ছিল এ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং।
চল্লিশ বছর যাবত তিনি ভারতের বিভিন্ন বিজ্ঞান ও গবেষনা প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। বিশেষ করে Defence Research and Development Organisation (DRDO) এবং Indian Space Research Organisation (ISRO)-তে কর্তব্যরত অবস্থায় তিনি বেসরকারী মহাকাশ গবেষনা ও সামরিক মিসাইল তৈরীতে প্রচুর অবদান রাখেন। ব্যালেস্টিক মিসাইল ও তার উৎক্ষেপন যান তৈরীতে তার অবদানের জন্য তিনি ‘মিসাইল ম্যান’ হিসাবে স্বীকৃতি পান।