logo ২৮ এপ্রিল ২০২৫
শেয়ার কারসাজির দায়ে ২ জনের জেল
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
১৭ আগস্ট, ২০১৫ ১১:৫০:২৯
image

ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিডি ওয়েলডিংয়ের শেয়ার কারসাজির দায়ে দুই জনের তিন বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।একইসঙ্গে উভয়কে ২০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।


সোমবার পুঁজিবাজার মামলা নিষ্পত্তিতে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) হুমায়ুন কবীর এ রায় ঘোষণা করেছেন।


দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বিডি ওয়েল্ডিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এস এম নুরুল ইসলাম এবং ‘ডেইলি ইন্ডাস্ট্রি’পত্রিকার সম্পাদক এনায়েত করিম।


শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন মো. মাসুদ রানা খান ও হাসিবুর রহমান দিদার; আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ ও টি.এম মহিউদ্দিন আহমেদ।


রায়ে বলা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন ১৯৬৯ এর ২৪ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আইনের ১৭ ধারা তারা সরাসরি লঙ্ঘন করেছেন।


দণ্ডপ্রাপ্তরা ৬ টাকা ৯০ পয়সা দরের শেয়ার কারসাজি করে ৪২ টাকা ৫০ পয়সা দরে উন্নীত করে; যা শতকরা হিসাবে ৬১৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ। এর মাধ্যমে কম টাকায় শেয়ার কিনে মিথ্যা-বানোয়াট তথ্য দিয়ে অস্বাভাবিক মুনাফা অর্জন করা হয়েছে।


রায়ের পর আসামিপক্ষের আইনজীবী মহিউদ্দীন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “মামলায় যে তথ্য-উপাত্ত দেওয়া হয়েছে তাতে দণ্ড বা উভয় দণ্ড হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মামলায় সাক্ষীদের উপস্থিতি ছিল না। কোর্ট থেকে মূল অভিযোগপত্র হারিয়ে ফেলেছে বাদীপক্ষ। সঠিক তথ্য উপাত্ত না দিয়ে গোঁজামিলের মাধ্যমে একটি রায় দেওয়া হয়েছে। রায়ের কপি হাতে পেলেই উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।”


রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাসুদ রানা খান ও হাসিবুর রহমান দিদার বলেন, “আমরা আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। উচ্চ আদালতে আপিল করা হলেও মামলার রায় বহাল থাকবে বলেও আশা করছি।”


প্রসঙ্গত, শেয়ার কারসাজির অভিযোগ তদন্ত করে ২০০৭ সালের ২২ মে এনায়েত করিম ও এস এম নুরুল ইসলাম এবং বিডি ওয়েলডিংয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।


এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৬ মার্চ বিএসইসি শেয়ারটির দর অস্বাভাবিক বাড়ার কারণ তদন্তে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। গঠিত কমিটির সদস্যরা হলেন— ওই সময়ের পরিচালক বর্তমানে নির্বাহী পরিচালক এ টি এম তারিকুজ্জামান ও ওই সময়ের সহকারী পরিচালক তানিয়া শারমিন। বর্তমানে তিনি অন্যত্র কর্মরত রয়েছেন। অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধিতে এনায়েত করিম ও এস এম নুরুল ইসলামের সম্পৃক্ততা খুঁজে পায় তদন্ত কমিটি।


কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, বিডি ওয়েল্ডিংয়ের এমডি এস এম নুরুল ইসলাম ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) জানিয়েছিলেন, সৌদি বিনিয়োগকারী গ্রুপ আল আওয়াদের সঙ্গে ই-মেইলে কোম্পানির যোগাযোগ হয়েছে। গ্রুপটি বিডি ওয়েল্ডিংয়ের সঙ্গে যৌথ মালিকানায় চট্টগ্রামে অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপন করতে চায়।


এজন্য ওই বছরের ৯ মার্চ বিডি ওয়েল্ডিং কারখানা পরিদর্শনেরও প্রস্তাব পাঠায় সৌদি গ্রুপটি। কিন্তু তদন্ত কমিটি জানতে পারে- পরবর্তী সময়ে এ ধরনের কোনো বিদেশি কোম্পানি কারখানা পরিদর্শনে আসেনি। বিডি ওয়েল্ডিংয়ের অফিস থেকে জব্দ করা কাগজপত্র অনুযায়ী সৌদি বিনিয়োগকারী আল আওয়াদ গ্রুপের নামে পাঠানো ই-মেইলগুলো ‘উইকলি দ্য ইন্ডাস্ট্রি’ (বর্তমানে ‘ডেইলি ইন্ডাস্ট্রি’) পত্রিকার সম্পাদক এনায়েত করিম তার অফিস থেকেই পাঠান।


আর সৌদি কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ সংক্রান্ত খবরটি ডেইলি ইন্ডাস্ট্রিতে প্রকাশিত হয় ২০০৭ সালের ১ মার্চ।


এটি ট্রাইবুনালের দ্বিতীয় রায়। এর আগে ৩ আগস্ট ফেসবুকে শেয়ার কেনা বেচার আগাম মিথ্যা তথ্য প্রচারকারী মাহাবুব সরোয়ারকে দুই বছর কারাদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত।


(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/এমএন)