ঢাকা: পৌরসভা নির্বাচনে এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে ভোট হচ্ছে। আর এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশেই এখন উৎসবের আমেজ বইছে।তবে বিদ্রোহী প্রার্থীদের যন্ত্রণায় অনেকটা কাহিল অবস্থা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির।
এদিক থেকে বিএনপি কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় থাকলেও আওয়ামী লীগে এই সঙ্কটটা প্রকট আকার ধারণ করেছে।২৩৫ পৌরসভার মধ্যে অন্তত ৮০টিতে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে।কোনো কোনো আসনে আওয়ামী লীগের আবার একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে।এসব পৌরসভায় এখন আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ।অনেক জায়গায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের অভিযোগ হচ্ছে-মেয়র পদে তৃণমূল থেকে দেয়া নামের তালিকা কেন্দ্র আমলে নেয়নি।
আর এসব আসনে যদি আওয়ামী লীগ তাদের বিদ্রোহী প্রার্থীদের সামাল দিতে না পারে তাহলে এর সুবিধা নিবে বিএনপি বা অন্য দল।
গত উপজেলা নির্বাচনেও বিদ্রোহী প্রার্থীদের সামাল দিতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য এই শাসক দলেকে অনেক খেসারত দিতে হয়েছে। এবার আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থীদের বাগে এনে নির্বাচনী ফলাফল কতটা ঘরে তুলতে পারে সেটাই দেখার বিষয়।
তবে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বাগে আনতে আওয়ামী লীগে নানা তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে। কৌশল খুঁজতে দফায় দফায় বৈঠক করে চলছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে দলের কঠোর বার্তা বিদ্রোহীরা কতটুকু আমলে নেয় তাই দেখার বিষয়। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বিদ্রোহী প্রার্থীদের হুঁশিয়ার করে দেন।তিনি শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সর্বোচ্চ (বহিষ্কার)শাস্তি প্রদান করা হবে।
ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট অনুযায়ী প্রায় ৮০ পৌরসভায় আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে।তবে প্রতিরোধের মুখে কিছু কিছু পৌরসভায় আওয়ামী লীগ তাদের প্রার্থী বদল করেছে শেষ মুহূর্তে।
বেতাগী পৌরসভা নির্বাচনে অংশ গ্রহণের জন্য প্রথমে মনোনয়ন দেয়া হয় বর্তমান পৌর মেয়র আলতাফ হোসেন বিশ্বাসকে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শহরে ভাঙচুর করেন এবং হরতালের ডাক দেন। এর পরই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম কবিরকে মনোনয়ন দেয় কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড।
বিদ্রোহী আছে আ.লীগের ঘাঁটি গোপালগঞ্জেও।গোপালগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও জেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক মো. রেজাউল হক সিকদার রাজু, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মুশফিকুর রহমান লিটন বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। এ পৌরসভায় আ.লীগের প্রার্থী হলেন,উপজেলা আ.লীগ সভাপতি কাজী লিয়াকত আলী লেকু।
বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে টুঙ্গিপাড়ায়ও। টুঙ্গিপাড়া পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ফোরকান বিশ্বাস বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা লীগের সভাপতি শেখ আহাম্মদ আলী মীর্জার বিরুদ্ধে।
বিদ্রোহী প্রার্থী আছে দলীয় সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশারাফুল ইসলামের জেলা কিশোরগঞ্জেও। জেলার সাতটি পৌরসভার চারটিতেই রয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থী।
হোসনপুর পৌরসভায় দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জেলা আ.লীগের সদস্য আব্দুল কাইয়ুম খোকন। এ পৌরসভায় দলটির সাবেক ভিপি ও আ.লীগ নেতা রাইসুল হাসান কেনেডি, আ.লীগ নেতা সৈয়দ হোসেন হাছু,ও যুবলীগ নেতা আব্দুল কাদির স্বপনও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
কটিয়াদী পৌরসভায় দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন শওকত ওসমান শুক্কুর আলী। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক তানভীরুল ইসলাম রাহাত।
বাজিতপুর পৌরসভায় দলীয় প্রার্থী আনোয়ার হোসেন আশরাফ। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে শওকত আকবর রয়েছেন।
করিমগঞ্জ পৌরসভায় আ.লীগের প্রার্থী হচ্ছেন- কামরুল ইসলাম চৌধুরী। এ পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী হচ্ছেন বর্তমান মেয়র আব্দুল কাইয়ুম।
শরীয়তপুরের পাঁচটির মধ্যে চারটি পৌরসভাতেই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র প্রার্থীর জন্য আওয়ামী লীগের বিবাদমান দুইটি গ্রুপ থেকে দুইজন প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়।এতে বর্তমান মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রব মুন্সি ও সাবেক জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ভিপি নুরুল আমিন কোতোয়োলের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১ ডিসেম্বর দুপুরে গণভবনে মনোনয়ন বোর্ডের এক অনির্ধারিত সভায় প্রাথমিকভাবে নুরুল আমিন কোতোয়ালকে মনোনয়ন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।পরে সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধানন্ত্রীর নিজস্ব গোয়েন্দা প্রতিবেদন ও পছন্দের কারণে তৃণমূলের পাঠানো তালিকার দুইজনকেই বাদ দিয়ে রফিকুল ইসলাম কোতোয়ালের নাম চূড়ান্ত করা হয়। দলের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষিপ্ত হয়ে অপর দুজন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভেদরগঞ্জ পৌরসভায় আা.লীগ প্রার্থী যুবলীগের সভাপতি ও বর্তমান মেয়র আব্দুল মান্নান হাওলাদার। দলীয় মনোনয়ন না পেয়েও মনোনয়নপত্র জমা দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান হাওলাদার, সহসভাপতি আ: জব্বার রাঢ়ি, কোষাধ্যক্ষ আবুল বাসার চোকদার, বর্তমান মহিলা কাউন্সিলর তানিয়া জাহিদ রাঢ়ি।
ডামুড্যা পৌরসভায় আ.লীগের পক্ষে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন বর্তমান মেয়র হুমায়ুন কবির বাচ্চু ছৈয়াল। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক মেয়র রেজাউল করিম রাজা ছৈয়াল মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
জাজিরা পৌরসভায় আওয়ামী লীগের পক্ষে ইউনুস বেপারী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আক্কাস মুন্সী, বর্তমান মেয়র আবুল খায়ের ফকির, যুবলীগের সদস্য খোকন তালুকদার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
নড়িয়া পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র হায়দার আলী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জাকির বেপারী, শহিদুল ইসলাম বাবু রাঢ়ি, সিরাজুল ইসলাম চুন্নু, মোহাম্মদ আলী বেপারী, শহিদুজ্জামান, মোসলেহ উদ্দিন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
সিলেটের তিন পৌরসভায় রয়েছে আ.লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী। জেলার গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু। এ পৌরসভায় দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক প্রশাসক সিরাজুল জব্বার চৌধুরী ও যুক্তরাজ্য যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রাবেল।
কানাইঘাট পৌরসভার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান মেয়র লূৎফুর রহমান। এ পৌরসভায়ও আ.লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন তারা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আল মিজান ও সিরাজুল ইসলাম খোকন।
জকিগঞ্জ পৌরসভায় দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার খলিল উদ্দিন। এ পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফারুক আহমদ।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য মোঃ শফিকুল ইসলাম সরুজ্জল মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এ পৌরসভায় দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম মন্ডল।
রাজবাড়ীর পাংশাতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী দুজন। বর্তমান মেয়র ওয়াজেদ আলী মন্ডল ও তাঁর ভাই ইদ্রিস আলী মন্ডল দুজনই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ওয়াজেদ মন্ডল পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি। আর ইদ্রিস যুবলীগের নেতা ছিলেন। এই পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন আবদুল আল মাসুদ।
চট্টগ্রামে ১০ পৌরসভার মধ্যে আওয়ামী লীগ সাতটিতে মেয়র পদে একক প্রার্থী নিশ্চিত করলেও তিনটিতে বিদ্রোহ ঠেকাতে পারেনি। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনে রাঙ্গুনিয়া পৌরসভায় আওয়ামী লীগের একজন, রাউজান ও সীতাকুন্ডে দুজন করে চারজন বিদ্রোহী প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
রাউজানে আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন দেবাশীষ পালিত। একই পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বেবীর ছেলে সাইফুল ইসলাম চৌধুরী রানা ও পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
সীতাকুন্ড পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বর্তমান পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা অবসরপ্রাপ্ত নায়েক শফিউল আলম এবং পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিরাজউদ্দৌলা ছুট্টু। এ পৌরসভায় আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন বদিউল আলম ।
রাঙ্গুনিয়া পৌরসভায় দল থেকে উত্তর জেলা আ.লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শাহজাহান সিকদার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরীও মনোনয়নপত্র জমা দেন।
চুয়াডাঙ্গার দর্শনাতে স্থানীয় সাংসদ আলী আজগারের ভাই পৌর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আলী মনসুর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এই পৌরসভায় দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমানকে।
নোয়াখালীর চৌমুহনী পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী দুজন। এখানে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বতর্মান মেয়র আক্তার হোসেন ওরফে ফয়সল। সাংসদ মামুনুর রশিদের বড় ভাই খালেদ সাইফুল্লাহ স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আজিজুল বাসার।
মাদারীপুরের কালকিনিতে তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থীকে মনোনয়ন না দেওয়ায় গণপদত্যাগ করেছেন উপজেলা ও পৌরসভা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতারা। এই পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে এনায়েত হাওলাদারকে। তিনি স্থানীয় সাংসদ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের পছন্দের। তৃণমূল আওয়ামী লীগ উপজেলা সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করেছিল। এনায়েতের নাম তৃণমূল থেকে পাঠানোই হয়নি।
ময়মনসিংহের ফুলপুর পৌরসভা আওয়ামী লীগ থকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন শশধর সেন। আর বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বর্তমান মেয়র শাহজাহান।
গৌরীপুর পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সৈয়দ রফিকুল ইসলাম। এখানে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, আবু কাউছার চৌধুরী রন্টি ও সাবেক মেয়র শফিকুল ইসলাম হবি।
মুক্তাগাছায় আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র পদে বর্তমান মেয়র আব্দুল হাই আকন্দ, বিদ্রোহী প্রার্থী দেবাশীষ ঘোষ বাপ্পী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন।
ত্রিশাল পৌরসভায় আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন জুয়েল সরকার, বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন বর্তমান মেয়র আনিছুজ্জামান।
ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামী লীগ থেকে হাবিবুর রহমান এবং বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন আবুল খায়ের মনোনয়ন পত্র জমা দেন।
নান্দাইল পৌরসভায় আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন রফিক উদ্দিন ভুইয়া এবং বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে আব্দুস সাত্তার উজ্জল মনোনয়ন পত্র জমা দেন।
ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী পৌরসভায় আ.লীগ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মীরদাহ পিকুল। এ পৌরসভায় পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য মোজাফফর হোসেন বাবলু মিয়া এবং যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান মৃধা লিটনও মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
নগরকান্দা পৌরসভায় মেয়র পদে আ. লীগ মনোনীত প্রার্থী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রায়হান উদ্দিন মিয়া ও পৌর যুবলীগের সভাপতি মুরাদ হোসেন বিকুলও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
হবিগঞ্জ পৌরসভায় আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন জেলা যুবলীগ সভাপতি আতাউর রহমান। দলীয় মনোনয়ন না পেয়েও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন পৌর আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান।
জেলার শায়েস্তগঞ্জ পৌরসভায় দলীয় প্রার্থী পৌর আ. লীগ সভাপতি মোঃ ছালেক মিয়া, বিদ্রোহী হবিগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মাসুক।
মানিকগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মনোনীত রমজান আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল হুদা সেলিম ও জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি বাবুল সরকার মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।
ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভায় আ.লীগের তিন বিদ্রোহী প্রার্থী মাসুদ খান, ইঞ্জিনিয়ার মাসুম হোসেন ও কামাল হোসেন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। এ পৌরসভায় আ.লীগ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তসলিম উদ্দিন।
মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভায় আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান মেয়র আহাম্মদ আলী। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন জেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য আশরাফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী সাহানা ইসলাম।
সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো.আমিনুল ইসলাম লাল্টু ও বিদ্রোহী প্রার্থী আরাফাত হোসেন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
লালমনিরহাট পৌরসভায় আ.লীগ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে বর্তমান মেয়র রিয়াজুল ইসলাম রিন্টু মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে জেলা আওয়ামী যুবলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এমএম ওয়াহেদুল হাসান সেনা ও মনোনয়ন পত্র জমা দেন।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম পৌরসভায় আ.লীগের প্রার্থী বর্তমান মেয়র শমসের আলী। স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসাবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাবেক উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান ওয়াজেদুল ইসলাম শাহীন মনোয়নপত্র জমা দেন।
মুন্সিগঞ্জ সদর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হলেন মো. ফয়সাল বিপ্লব।আর মিরকাদিমে বর্তমান মেয়র মো. শহীদুল ইসলাম শাহীন।
তবে দুই পৌরসভায়ই আওয়ামী লীগের আরো তিনজন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন।
সদর পৌরসভায় দুই বিদ্রোহী প্রার্থী হলেন-রেজাউল ইসলাম সংগ্রাম ও যুবলীগ নেতা আরিফুর রহমান।আর মিরকাদিমে মনসুর আহমেদ কালাম।
এদিকে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভায় দলীয় প্রার্থী পছন্দ না হওয়ার দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিল উপজেলা আ.লীগের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। এ পৌরসভায় আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন বর্তমান মেয়র ও জেলা শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আনিছুর রহমান। এ পৌরসভায় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন শ্রীপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদের প্রথম ভিপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আহসান উল্লাহ।
শেরপুরে পৌরসভায় আ.লীগ থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বর্তমান পৌর মেয়র হুমায়ুন কবির রুমান।
জেলার শ্রীবরদী পৌরসভা থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন আবু সাঈদ। এ পৌরসভায় আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ওয়ালীউজ্জামান আশরাফী, আলমগীর হোসেন ও এ্যাডভোকেট শহীদ উল্লাহ শাহী।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আ.লীগ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র মিজানুর রহমান।আ. লীগের বিদ্রোহী নেতা এনাম হোসেন পাটোয়ারীও মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
চান্দিনা পৌরসভায় মেয়র পদে পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলাম ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী জয়নাল আবেদীন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।
দাউদকান্দি পৌরসভায় আ.লীগ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য নাঈম ইউছুফ সেইন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী বর্তমান মেয়র ভিপি আবদুস ছাত্তার, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শাহজাহান।
নোয়াখালী জেলার হাতিয়া পৌরসভায় আ.লীগ প্রার্থী একেএম ইউসুফ আলী।এ পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী আ.লীগ নেতা সাইফ উদ্দিন আহমেদ। চাটখিল পৌরসভায় আ.লীগের পক্ষে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন মোহাম্মদ উল্লাহ। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক বেলায়েত হোসেন।
লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান মেয়র ও পৌর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ। এ পৌরসভায় আ.লীগের প্রার্থী আবুল খায়ের পাটোয়ারী।
নেত্রকোনার মদনে আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন এ কে এম সাইফুর ইসলাম হান্নান। এ পৌরসভায় আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী দুইজন তারা হলেন, উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হান্নান শামীম ও দলীয় কর্মী রুহুল আমিন।
কেন্দুয়া পৌরসভায় আ.লীগের প্রার্থী আসাদুল হক ভুঁঞা। বিদ্রোহী প্রার্থী আ.লীগ কর্মী আল মামুন কোকিল। মোহনগঞ্জ পৌরসভায় আ.লীগের প্রার্থী লতিফুর রহমান রতন। এ পৌরসভায় দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম জহির।
মৌলভীবাজারের কুলাউডা পৌরসভায় আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন এ কে এম শফি আহমদ সলমান। এ পৌরসভা থেকে দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী শফি আলম ইউনুছ। বড়লেখা পৌরসভায় আ.লীগ প্রার্থী আবু ইমাম মো. কামরান চৌধুরী। এ পৌরসভায় দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হেনা বেগম ও জেলা আ.লীগ নেতা আবদূর নূর।
নাটোরের নলডাঙ্গা পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শফি উদ্দিন মোল্লা। বিদ্রোহী প্রার্থী আনিসুর রহমান।
নীলফামারীর জলঢাকায় আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন জলঢাকা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুর। কৃষক লীগে দলীয় ভাবে মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হন বর্তমান মেয়র ইলিয়াছ হোসেন বাবলু।
সিরাজগঞ্জ সদরে আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে এ পৌরসভায় মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন শামছুজ্জামান আলো।
উল্লাপাড়ায় আ.লীগ প্রার্থী নজরুল ইসলাম। বিদ্রোহী প্রার্থী ফয়সাল কাদির রুমি।
শাহজাদপুরে আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন হালিমুল হক মিরু। দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন ভিপি আব্দুর রহিম।
টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী পৌরসভায় আ.লীগ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আনছার আলী বিকম। এছাড়াও মনোনয়নপত্র জমা দেন উপজেলা আ’লীগের সদস্য হুমায়ুন খালিদ।
ভূঞাপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মাসুদুল হক মাসুদসহ দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আজহারুল ইসলাম ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক তারিকুল ইসলাম চঞ্চল মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
ধনবাড়ী পৌরসভায় আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপন। দলীয় সমর্থনে ব্যর্থ হয়ে স্বতন্ত্র উপজেলা আ’লীগ নেতা স্বতন্ত্র জহিরুল হক হেলাল বকুল ও সাইফুল ইসলাম বকুল মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
গোপালপুর পৌরসভায় দল থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক রকিবুল হক ছানা। এছাড়াও প্রার্থী হয়েছেন আ.লীহগ নেতা এনামুল হক ও আশরাফুজ্জামান আজাদ।
সখিপুর পৌরসভায় আ.লীগ থেকে প্রার্থী হয়েছেন আবু হানিফ আজাদ ও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন জাহাঙ্গীর তালুকদার।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন আওয়ামী লীগ টানা দুই দফায় ক্ষমতায়। তাই এ নির্বাচনে একক প্রার্থী নির্ধারণ করতে দলটিকে হিমশিম খেতে হয়েছে। আবার একক প্রার্থী নির্ধারণ হলেও বিদ্রোহী প্রার্থীরা তাদের সমস্যায় ফেলছেন।
এদিকে আ.লীগের নেতারা বলছেন দুই একটি জায়গায় কৌশলগত কারণে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। এক্ষেত্রে তারা বলছেন এবারের পৌরসভায় প্রার্থী বাচাইয়ে কম সময় পাওয়া গেছে। ইসির বাচাইয়ে কেউ হয়তো বাদও পড়তে পারে। তাই প্রার্থী বাদ হলেও দলীয় প্রার্থী সংকট না হওয়ার জন্যই একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।
(ঢাকাটাইমস/০৫ ডিসেম্বর/টিএ/ এআর / ঘ.)