logo ১১ জুলাই ২০২৫
দেয়ালের ইট খসিয়ে খেতেন জেনি
ঢাকাটাইমস ডেস্ক
০৮ মে, ২০১৬ ১৮:০৯:৩৩
image



ঢাকা: সাধারণত গর্ভবতী নারীরা আচার, চকোলেট, আইসক্রিম, টকজাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু জেনি ম্যাসন নামের এক ব্রিটিশ গর্ভবতী নারীর পছন্দ ইট, বালি, মাটি, পলেস্তারা। তার দাবি, এগুলোর প্রতি তার সিগারেটের চেয়ে বেশি আকর্ষণ। দেয়ালের ইট ঘষে তুলে গুঁড়ো করে বাটিতে নিয়ে খেতে পছন্দ করেন জেনি।     






ব্রিটেনের লিভারপুলের বাসিন্দা জেনির এই অদ্ভুত অভ্যাসের কথা তার বিদ্যুৎ মিস্ত্রী স্বামী স্টিফেন কনরের (৩১) কাছে লুকিয়ে রেখে ছিলেন। ছয় মাস পর স্ত্রীর এই অভ্যাসের কথা জানতে পারেন স্টিফেন।






একদিন কনর তার ঘরের নয়টি ইট খোয়া দেখতে পান। বিষয়টি তার বাড়ির মালিককে জানাতে ফোন করতে যাচ্ছিলেন। তখন জেনি তার কাছে সবকিছু খুলে বলেন।






চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পর জেনির পাইকা ধরা পড়ে। পাইকা এক ধরনের রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে স্বাভাবিক খাবারের চেয়ে মাটি, বালি, পলেস্তারা, লোহার গুঁড়া, কাচ, ইট ইত্যাদি খেতে পছন্দ করে তারা। শিশু ও গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি বেশি হয়। 






৩০ বছর বয়সী জেনি ম্যাসন বলেন, “ক্ষুধা নিবারণের জন্য আমি ছুরি বা যন্ত্র দিয়ে বাড়ির বাইরে থেকে অল্প পরিমাণে ইট কেটে সংগ্রহ করতাম। এক দিন খেলে কয়েক দিনের জন্য নিস্তার পেতাম। এরপর আবার ইট, পলেস্তারা, বালি, মাটি সংগ্রহ করে খেতাম। আমি পাইকার কথা কখনো শুনিনি।”






জেনির এই ধরনের বস্তুর প্রতি প্রথম আকর্ষণ তৈরি হয় ২০১২ সালের মার্চে। তখন তিনি প্রথমবারের মতো তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা।






জেনি বলেন, “স্টিফেন কাজে চলে যাওয়ার পর দেয়াল থেকে ইটের অংশ কেটে নিয়ে আসতাম। অনেক সময় স্টিফেন ঘুমিয়ে পড়লে রাতের অন্ধকারে এই কাজটি করতাম। আর স্টিফেন বাসায় থাকলে আমি বাথরুমে গিয়ে ইটের গুঁড়া খেতাম। তার সামনেও মাঝে মাঝে চিবিয়ে চিবিয়ে খেতাম। তখন স্টিফেন জিজ্ঞাসা করত, ‘কী খাও?’ আমি প্রথম দিকে ‘কিছু না’ বলে কথা কাটাতাম। সে একদিন দেয়ালে ইট খসা দেখে রেগে যায়। সে বাড়ির মালিককে ফোন করতে যাচ্ছিল। তখন আমি তার কাছে সবকিছু খুলে বলি।”   






গর্ভধারণের ছয় মাসের মাথায় জেনি তার পেছনের পাটির দাঁতে ব্যথা অনুভব করেন। ইট, বালি, মাটি খাওয়ার কারণে তার কোষ্ঠকাঠিন্য তৈরি হয়। তার স্বামী তাকে দন্তচিকিৎসককে দেখাতে বলেন।   






জেনি একজন সাধারণ চিকিৎসক এবং ধাত্রীর শরণাপন্ন হন। রক্তস্বল্পতা আছে কি না তা পরীক্ষার জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হয়। তার এক সপ্তাহ পর জেনির পাইকা ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা তাকে থেরাপিস্টের পরামর্শ নিতে বলে। কিন্তু জেনি তাতে রাজি হননি।   






জেনি বলেন, “আমি বুঝতে পারছিলাম না একজন থেরাপিস্ট কীভাবে এটি বন্ধ করবে। তখন অবশ্য আমিও এগুলো খাওয়া ছাড়তে চাইছিলাম না। আমি এই ব্যাপারে অনলাইনে খোঁজ নেয়া শুরু করলাম। আমি দেখলাম, অনেকেরই এই সমস্যা রয়েছে। আমি শুধু একা নই।” 






এসব পদার্থ খাওয়ার কারণে তার গর্ভের শিশুর ক্ষতি হতে পারে। এ নিয়ে জেনি ম্যাসন চিন্তিত ছিলেন। এরপর তিনি এসব পদার্থ খাওয়ার পরিবর্তে চুষতে লাগলেন। চুষার পর তিনি এগুলো ফেলে দিতেন।






জেনি ভেবেছিলেন সন্তান জন্মদানের পর তার এই অভ্যাস চলে যাবে। কিন্তু শিশু জন্মের তিন মাস পরও তার এই অভ্যাস থেকে যায়। একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে টের পান, তার আর ইট খাওয়ার ইচ্ছে হচ্ছে না। এর কয়েক সপ্তাহ পর তার অভ্যাস একেবারেই অদৃশ্য হয়ে যায়।   






জেনি ম্যাসন বলেন, “আমি খুবই স্বস্তি অনুভব করেছিলাম তখন। তবে আমি ভয় পাচ্ছি, আবার সন্তান নিলে যদি এ রকম কিছু পুনরায় ঘটে!” সূত্র: ডেইলি মেইল।   






(ঢাকাটাইমস/৮মে/এসআই/মোআ)