‘বাবা-মাকে নাও, নয়তো আমাকে’
ঢাকাটাইমস ডেস্ক
১৩ জুন, ২০১৬ ১৮:২৮:২৭

ঢাকা: পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন কারণে আমাদের স্বাভাবিক জীবন জটিল হয়ে পড়ছে। পারিবারিক সম্পর্কগুলোতে আন্তরিকতা দিন দিন ভাটা পড়ছে। বিয়ের পর অনেক নারীই শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে থাকতে চাইছেন না। আবার প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে অনেক সময় আলাদা থাকতে বাধ্য হচ্ছেন অনেক পুত্রবধূ।
বিয়ের আগেই এ রকম একটি সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন অংশু(ছদ্মনাম)। তার বাগদত্তা বিয়ের আগেই শর্ত দিয়েছেন শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে থাকবেন না তিনি। বাগদত্তার এই ধরনের কথায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন অংশু। শেষ পর্যন্ত মনোবিজ্ঞানীর কাছে সাহায্য চেয়েছেন তিনি। ভারতের জনপ্রিয় এক মনোবিজ্ঞানী এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায়ও বলেছেন। চলুন অংশুর পুরো ঘটনাটি শোনা যাক তার মুখেই।
অংশু বলেন, “মধ্যবিত্ত পরিবারে আমার জন্ম। বয়স ২৯। বর্তমানে বেকার আছি। গত ছয় বছর ধরে সরকারি চাকরির জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। দুই বছর আগে মা-বাবা আমার জন্য একটি মেয়ে পছন্দ করে। মেয়েটির সঙ্গে আমার আনুষ্ঠানিক পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে একে অপরকে ভালোবাসতে শুরু করি।”
অংশু তার বাগদত্তাকে দ্রুত বিয়ে করতে চাইলেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তার বেকারত্ব। এদিকে, তার বাগদত্তা বিয়ের জন্য অনবরত চাপ দিয়ে যাচ্ছে। একদিকে চাকরির জন্য প্রস্তুতি, অন্যদিকে বাগদত্তার বিয়ে চাপ।
অংশু বলেন, “আমার বাগদত্তা এখন নতুন ইস্যু তৈরি করেছে। সে মনে করছে, আমার বাবা-মা বিয়ে পেছানোর জন্য দায়ী। তাই সে তাদের সঙ্গে থাকতে চায় না। এমনকি সে চায় আমিও যেন নিজের মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ না রাখি। তার নিজের মা-বাবার সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো নয়। এখন সে শর্ত দিয়েছে, বাবা-মাকে বেছে নিতে নয়তো তাকে। বিষয়টি খুবই জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে আমার জন্য। উভয়কেই অনেক ভালোবাসি। দয়া করে একটা উপায় বলুন।”
ক্লিনিক্যাল মনোবিজ্ঞানী এবং লেখক ডা. সীমা হিনগোরানি অংশুর সমস্যার সমাধান দিতে গিয়ে বলেন, “এটা খবুই দুঃখজনক যে আপনি এখনো বেকার। আপনার মানসিক অবস্থাটা বুঝতে পারছি। আমি সত্যিই মনে করছি, আপনার বাগদত্তা অযৌক্তিক কারণে বাড়তি চাপ প্রয়োগ করছেন। ভালোবাসার সম্পর্কটা হচ্ছে কঠিন সময়ে একজন আরেকজনের পাশে থাকা, সাহস জোগানো। ভালোবাসার মানুষটিকে ভয় না পেয়ে তার সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক গড়ে তোলুন। নিজেকে মনের কথাগুলো তার সঙ্গে প্রকাশ করুন। এই মুহূর্তে তার সমর্থন দরকার, শর্ত নয়। বিষয়টি তাকে বুঝানোর চেষ্টা করুন। বাবা-মার সঙ্গে থাকবেন কি না সেটা পরে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। প্রথম কাজ হচ্ছে, জীবনে আর্থিক স্বচ্ছলতা তৈরি করা। ক্যারিয়ারের লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে যান। একটি ভালো চাকরি খুঁজুন। কোনো চাপের মুখোমুখি হওয়া যাবে না এখন। আবেগের চেয়ে বাস্তবতাকে প্রাধান্য দিন।”
(ঢাকাটাইমস/১৩জুন/এসআই/জেবি)