logo ২০ এপ্রিল ২০২৫
নৌ ধর্মঘট: চট্টগ্রাম বন্দরে একদিনেই ক্ষতি ১৩ কোটি টাকা
চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
২৭ আগস্ট, ২০১৬ ১৩:২৮:৫৪
image



বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ চার দফা দাবিতে সোমবার রাত ১২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের নৌ ধর্মঘট পালন করছে নৌযান শ্রমিকরা। এ কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে সব ধরনের পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে নৌপথে শিল্পের কাঁচামালসহ সব ধরনের পণ্য পরিবহন। ফলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বন্দর, শিল্পকারখানা ও পরিবহন খাত। বেকার হয়ে পড়েছে হাজার হাজার ঘাট শ্রমিক।






বাংলাদেশ নৌ শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ বশির জানান, সরকার ঘোষিত মজুরি বাস্তবায়নসহ চার দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করা হচ্ছে। দাবি না মানা পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।






ধর্মঘট প্রত্যাহারে নৌমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম। সম্প্রতি মন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি বলেন, সারাদেশে নৌযান শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে লাইটারেজ জাহাজ চলাচল ও পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে দেশব্যাপী শিল্পের কাঁচামাল ও পণ্য পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। এর পাশাপাশি জাহাজ জট এবং কনটেইনার জট নতুন সঙ্কট তৈরি করেছে। জাহাজের টার্ন এরাউন্ড টাইম বৃদ্ধি এবং কনটেইনারের ওভারস্টের কারণে ডেমারেজ চার্জ, পণ্য আমদানি-রপ্তানি ব্যয় বৃদ্ধিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সাধারণ ভোক্তাদের অতিরিক্ত মাশুল গুণতে হবে।






মাহবুবুল আলম জানান, ধর্মঘটের কারণে বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য নিয়ে বসে আছে ৩২টি জাহাজ (মাদারভেসেল)। এসব জাহাজে আছে গম, চিনি, সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল, ক্লিংকার, কয়লা ও ইউরিয়া সার। এতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া নির্দিষ্ট সময়ে বন্দর ত্যাগ করতে না পারায় অতিরিক্ত মাশুল গুনতে হচ্ছে জাহাজ মালিকদের। এতে প্রতিদিন জাহাজ মালিকদের অন্তত আট কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে। আর পণ্যের আমদানি-রপ্তানিকারকদের প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে পাঁচ কোটি টাকার বেশি।






ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন সেলের নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশীদ খান বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত পণ্য নিয়ে ৩২টি জাহাজ বহির্নোঙরে অবস্থান করছে। সবমিলিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে। শিগগিরি এর প্রভাব দেশের শিল্প-কারখানা ও পরিবহন সেক্টরে দৃশ্যমান হবে।






উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল নৌযান শ্রমিকদের টানা ১৩ দিন আন্দোলনের কারণে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান জাতীয় স্কেলের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বেতন বাড়ানোর ঘোষণা দেন। যেখানে সর্বনিম্ন ৯ হাজার ও সর্বোচ্চ ১৭ হাজার ১০০ টাকা বেতন ঘোষণা করা হয়। কিন্তু মালিকপক্ষ এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে হাইকোর্টে রিট করে। তবে এ রিটের সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি। মালিকপক্ষের এই অবস্থানে ক্ষুব্ধ নৌ শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে।






অন্যদিকে জাহাজ মালিকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেন, গত এপ্রিলে একতরফা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রী। শ্রমিকদের বেতন-ভাতার যে হার তিনি ধার্য করে দিয়েছেন- সেটা বাস্তবায়ন করতে গেলে আয়ের বদলে ক্ষতি গুণতে হবে জাহাজ মালিকদের। মন্ত্রীর এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সব জাহাজ মালিক সেসময় জাহাজ পরিচালনা বন্ধ রেখেছিলেন। তাতেও সরকার কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা উচ্চ আদালতে যাই।






(ঢাকাটাইমস/২৭আগস্ট/আইকে/এমআর)